X
রবিবার, ১১ মে ২০২৫
২৮ বৈশাখ ১৪৩২

সাংবাদিক পলাশকে পিটিয়ে হত্যা, দুই ভাইয়ের ১০ বছরের কারাদণ্ড  

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
২৬ জুলাই ২০২২, ১৭:৫৬আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২২, ১৭:৫৬

লক্ষ্মীপুরের জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সাংবাদিক শাহ মনির পলাশকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দুই আসামির ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। এ সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

নিহত শাহ মনি পলাশ সদর উপজেলার পার্বতীনগর ইউনিয়নের মাছিমনগর গ্রামের কৃষক মনিরুল ইসলামের ছেলে। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ২৫ বছর। তিনি পড়ালেখার পাশাপাশি সাংবাদিকতায় জড়িত ছিলেন। তরুণ এই সাংবাদিক ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক রূপবাণী পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি ছিলেন। তখন তিনি লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের বিএ (ডিগ্রি) কোর্সের ফলপ্রার্থী ছিলেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আবু ইউসুফ ও আবু ছায়েদ দুই সহোদর।  তারা মাছিমনগর গ্রামের ফকির বাড়ির আখতারুজ্জামানের ছেলে। 

এদিকে আদালতের রায়ে অসন্তুষ্ট পলাশের পরিবারের সদস্যরা। তারা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবার কথা জানান। 

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সকালে পলাশদের বাগানের গাছ কেটে নেওয়ার চেষ্টা করে তার দুই জেঠাতো ভাই আবু ইউছুফ ও আবু ছায়েদ। এ সময় তার পিতা মনিরুল ইসলাম অভিযুক্তদের বাধা দিতে গেলে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় মনিরুলকে ইট নিক্ষেপ করে পলাশের চাচাতো ভাইয়েরা। একপর্যায়ে তিনি ইটের আঘাতে মাটিতে পড়ে যান। ঘটনাটি দেখেই দৌঁড়ে গিয়ে বাবাকে মাটি থেকে তুলছিলেন পলাশ। হঠাৎ পেছন থেকে লাঠি দিয়ে পলাশের মাথায় আঘাত করা হয়। আঘাতে পলাশের মাথা না ফেটে ভেতরে রক্ত জমাট বেধে যায়। 

ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পলাশকে ঢাকায় পাঠান। ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি রক্ত বমি করলে তাকে নোয়াখালী হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকেও চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোরে তার মৃত্যু হয়। 

ওইদিন সন্ধ্যায় নিহত পলাশের পিতা মো. মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে সদর থানায় আবু ইউসুফ, আবু ছায়েদ ও ফয়জুন্নেছাকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আবু ইউসুফ কারাগারে রয়েছেন।অপর আসামি আবু ছায়েদ জামিনে ছিলেন। একই বছরের ৭ অক্টোবর সদর থানা পুলিশ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত আবু ইউসুফ ও আবু ছায়েদকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তবে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা না পেয়ে মামলার তৃতীয় আসামি ফয়জুন্নেছাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন আদালত। আদালত তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদন ও ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আজ রায় দেন।

আদালতে রায় ঘোষণার পর সাংবাদিক পলাশের পিতা মনিরুল ইসলাম বলেন, রায়ে আমরা সন্তুষ্ট হতে পরিনি। আমার ছেলের প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আর হত্যাকারীদের ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। আমরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো। 

রায়ের প্রতিক্রিয়া এবং বাদীর অসন্তুষ্টির বিষয়ে জনতে চাইলে জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন বলেন, আদালত সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে রায় দিয়েছেন। 
 

/টিটি/
সম্পর্কিত
মহাসড়কের পাশে দুই যুবকের লাশ, একজনের গলাকাটা অপরজনের চোখ উপড়ানো
শেওড়াপাড়ায় দুই বোন খুন: সিসিটিভিতে ধরা পড়া ব্যক্তিকে খুঁজছে পুলিশ
চোর সন্দেহে পিটুনিতে যুবককে হত্যার অভিযোগ
সর্বশেষ খবর
ছুরিকাঘাতে যুবককে হত্যা, দাফনের পর অভিযুক্ত তিন জনের বাড়িতে আগুন
ছুরিকাঘাতে যুবককে হত্যা, দাফনের পর অভিযুক্ত তিন জনের বাড়িতে আগুন
খুলনায় মহিলা আ.লীগ নেত্রী গ্রেফতার
খুলনায় মহিলা আ.লীগ নেত্রী গ্রেফতার
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় এবি পার্টির অভিনন্দন
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় এবি পার্টির অভিনন্দন
এমবাপ্পের হ্যাটট্রিক, সাত গোলের থ্রিলারে রিয়ালকে হারালো বার্সা
এমবাপ্পের হ্যাটট্রিক, সাত গোলের থ্রিলারে রিয়ালকে হারালো বার্সা
সর্বাধিক পঠিত
আওয়ামী লীগ কচু পাতার পানি না: কাদের সিদ্দিকী
আওয়ামী লীগ কচু পাতার পানি না: কাদের সিদ্দিকী
ব্যাংকে টাকা আসছে নাকি বের হয়ে যাচ্ছে
ব্যাংকে টাকা আসছে নাকি বের হয়ে যাচ্ছে
যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে: উপদেষ্টা মাহফুজ
যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে: উপদেষ্টা মাহফুজ
বিচারের আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ
বিচারের আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ
মহাসড়কের পাশে দুই যুবকের লাশ, একজনের গলাকাটা অপরজনের চোখ উপড়ানো
মহাসড়কের পাশে দুই যুবকের লাশ, একজনের গলাকাটা অপরজনের চোখ উপড়ানো