কয়েকদিন ধরে চৈত্রের কাঠফাটা গরম। এর মধ্যে রমজানের শেষের দিকে যানবাহনের চাপে অতিব্যস্ত হয়ে উঠেছে বন্দর নগর চট্টগ্রাম। বিশেষ করে ঈদকে ঘিরে চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও মানুষ নগরে আসছেন কেনাকাটার জন্য। এ কারণে সড়কজুড়ে যানবাহন বেড়েছে। এ ব্যস্ততা আরও বেশি বাড়ে ইফতারের আগ মুহূর্তে। তাই যানবাহনের ভিড় সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে সড়কে দায়িত্বরত ট্রাফিক সদস্যদের। এমনকি যানবাহনের চাপ সামাল দিতে গিয়ে পড়ে যায় আজান। তাই এক হাতে ইফতার অন্য হাতে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক সদস্যরা।
বুধবার (১২ এপ্রিল) নগরের প্রবর্তক মোড়ে দেখা গেছে চতুর্মুখী সড়কে যানবাহনের দীর্ঘ চাপ। এ চাপ সামলাতে গিয়ে সড়কেই ইফতার করতে হয়েছে সেখানে দায়িত্বরত সব ট্রাফিক সদস্যকে। এর মধ্যে কেউ কেউ এক হাতে ইফতার অন্য হাতে সামলাচ্ছেন যানবাহন।
সড়কে এভাবে দায়িত্বরত ট্রাফিক সদস্য সাহাবুদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ইফতারের আগ মুহূর্তে সড়কে যানবাহনের চাপ বেশি থাকে। সবার তাড়া থাকে নির্দিষ্ট গন্তব্যে গিয়ে ইফতার করা। এ সময় যানবাহনের চাপ সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে। তাই গাড়ি চাপ সামলাতে গিয়ে ইফতারের সময় হয়ে যায়। এ কারণে এক হাতে ইফতার অন্য হাতে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।’
নগরের প্রবর্তক এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) উত্তম দেবনাথ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রমজানে নগরে যানবাহনের চাপ বেশি থাকে। ট্রাফিক সদস্যরা কোথায় দুই শিফটে আবার কোথাও তিন শিফটে দায়িত্ব পালন করেন। এর মধ্যে সকাল ৭টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত এক শিফট। দুপুর আড়াইটা থেকে রাত ১২ পর্যন্ত আরেক শিফটে দায়িত্ব পালন করেন ট্রাফিক সদস্যরা। রমজানে মার্কেট কেন্দ্রিক ভিড় বেড়েছে। এ কারনে বিভিন্ন বিপণিবিতান কেন্দ্রিক ট্রাফিক সদস্যদের ডিউটি রাত ৯টা থেকে শুরু হয়ে যতক্ষণ মার্কেট খোলা থাকে ততক্ষণ দায়িত্ব পালন করেন।’
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগের উপকমিশনার তারেক আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চৈত্রের দাবদাহে পথে একটু থাকলেই নাভিশ্বাসে ওঠে। সেখানে ট্রাফিক সদস্যরা সারাদিন রোজা রেখে রোদ, বৃষ্টি, ধোঁয়া, ধুলাবালি আর উচ্চ শব্দ নিয়ে সড়কে দায়িত্ব পালন করেন। অথচ সারাদিন রোজা রাখার পরও সড়কে যানবাহন থাকলে দেখা যায় এক হাতে ইফতার অন্য হাতে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করছে। যানজটমুক্ত নগর উপহার দিতে ট্রাফিক পুলিশের চেষ্টার যেন কমতি নেই।’