ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যায়ামাগারে (জিম) দুই নারীর গোপনে ভিডিও ধারণসহ তিন জনকে আটকে রেখে মারধরের ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূঁইয়াকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তাকে সংগঠন থেকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করার জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে সুপারিশ করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। এর জবাব লিখিত আকারে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে জেলা ছাত্রলীগের দফতর সেলে সশরীর উপস্থিত হয়ে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রবিবার রাতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। হাবিবুল্লাহ ভূঁইয়া জেলা শহরের মৌলভীপাড়ার ‘বিএস ফিটনেস ক্লাব’ নামের একটি ব্যায়ামাগারের পরিচালক।
সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল বলেন, ‘সংগঠনের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কার্যকলাপে লিপ্ত থাকায় হাবিবুল্লাহকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়ে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে সংগঠনের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠায় সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হলো। সেই সঙ্গে তাকে সংগঠন থেকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করার জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে সুপারিশ করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। এর জবাব লিখিত আকারে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে জেলা ছাত্রলীগের দফতর সেলে সশরীর উপস্থিত হয়ে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার সন্ধ্যায় জেলা শহরের মৌলভীপাড়ার ওই ব্যায়ামাগারে আপত্তিকর ভিডিও ধারণের প্রতিবাদ করায় ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুল্লার নেতৃত্বে এক গৃহবধূ, তার বোনসহ তিন জনকে আটকে রেখে মারধর করা হয়। পরে ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে তাদের উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় হাবিবুল্লাহ, ওই ব্যায়ামাগারের ফিটনেস প্রশিক্ষক মিতু আক্তার ও তার সহযোগী মো. সাইমকে আটক করে পুলিশ। ওই দিন রাতেই গৃহবধূর ভাশুর আটক তিন জনসহ চার জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও আট-নয় জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী গৃহবধূ ও তার বোন ওই জিমে নিয়মিত ব্যায়াম করেন। গত বুধবার বিকালে তারা দেখেন গোপনে তাদের ভিডিও ধারণ করছেন মিতু। ভিডিও ধারণের বিষয়টি জানতে চাইলে তাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান। তখন মিতু বিষয়টি হাবিবুল্লাহকে জানান। হাবিবুল্লাহ জিমে এসে মিতুকে সঙ্গে নিয়ে তাদের মারধর শুরু করেন। খবর পেয়ে তাদের বাঁচাতে এক স্বজন এলে তাকেও পিটিয়ে আটকে রাখেন। পরে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের উদ্ধার করে। সেইসঙ্গে হাবিবুল্লাহ, মিতু ও সাইমকে আটক করা হয়।