জবি শিক্ষার্থী অবন্তিকার জানাজা চলাকালে ভেসে আসছিল ডুকরে ডুকরে কান্নার শব্দ। জানাজার পেছন থেকে আসা এই শব্দ ক্রমশই বাড়ছিল। শনিবার (১৬ মার্চ) কুমিল্লা সরকারি কলেজের মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জানাজার পেছনে দাঁড়িয়ে একদল শিক্ষার্থী। তারা সবাই কাঁদছে। জানাজায় না আসতে পারলেও দূরে আড়ালে থেকে তারা সবাই কাঁদছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সবাই অবন্তিকার সহপাঠী। কেউ স্কুল বন্ধু কেউবা বিশ্ববিদ্যালয়ের।
দাঁড়িয়ে থাকা জান্নাতুল মাওয়া মিম, সাদিয়া আল মিম ও মারিয়াম লিমা জানান, জানাজায় না উপস্থিত হতে পারলেও তারা দূর থেকে দেখছেন। বলেন, ‘স্কুলে অবন্তি ছিল অত্যন্ত মেধাবী। সে সব সময় ফার্স্ট থাকতো। তাকে এভাবে মেরে ফেলা হবে আমরা ভাবতেও পারিনি।’
জানাজায় উপস্থিত ছিলেন তার ছোট ভাই জারিফ জাওয়াত অপূর্ব, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ নূর-উর-রহমান, জবি আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেফতাহুল হাসান সান, কুমিল্লা সরকারি কলেজের দর্শন বিভাগের প্রধান নূর মোহাম্মদ খান প্রমুখ।
জানাজা শেষে, নগরীর শাসনগাছা এলাকায় তার পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে। এর আগে শাসনগাছা এলাকায় তার আরেকটি জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত ১০টার দিকে ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে নিজের আত্মহত্যার জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে দায়ী করেন ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা।
ফেসবুকে ওই স্ট্যাটাস দেওয়ার পর কুমিল্লার বাগিচাগাঁও ফায়ার সার্ভিস পুকুরপাড়ের নিজ ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়। রাত সোয়া ১০টার দিকে তাকে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার মৃত্যুর বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ডা. আব্দুল করিম খন্দকার। অবন্তিকা কুমিল্লা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যাপক প্রয়াত জামাল উদ্দিনের মেয়ে।
আরও পড়ুন:
প্রক্টর ও সহপাঠীকে দায়ী করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
অবন্তিকার লাশের গাড়ি দেখে জ্ঞান হারালেন মা
জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা: সহকারী প্রক্টরকে অব্যাহতি ও সহপাঠীকে বহিষ্কার