ব্রাহ্মণবাড়িয়া কসবা উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের একদিন আগে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক পলাশকে (৪২) কুপিয়ে গুরুতর আহত করে হত্যার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। এমনটাই অভিযোগ আহতের পরিবারের।
রবিবার (১৯ মে) গভীর রাতে কসবা উপজেলা সদরের শাহপুর নিজ বাড়ির কাছে এ ঘটনা ঘটে। আহত পলাশ বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদুল কায়সার ভূঁইয়া জীবনের অনুসারী। হামলার ঘটনার পর পলাশের স্বজনেরা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
আহতের স্বজনেরা জানান, রবিবার গভীর রাতে সোহাগ নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে সঙ্গে নিয়ে পলাশ কসবা উপজেলা সদরের শাহপুর নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। এ সময় বাড়ির কাছে আগে থেকে ওত পেতে থাকা কাপ-পিরিচ প্রতীকে চেয়ারম্যান প্রার্থী সায়েদুল হক স্বপনের অনুসারী জেলা পরিষদ সদস্য ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এম এ আজিজের অনুসারীরা তাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন।
পরে সোহাগের চিৎকারে গ্রামবাসী এগিয়ে এসে গুরুতর আহত অবস্থায় পলাশকে উদ্ধার করে প্রথমে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
আহত পলাশের পলাশের মা রিপনা বেগম জানান, জেলা পরিষদ সদস্য ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এম এ আজিজ প্রায়ই পলাশের বাবাকে তার ছেলের রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিলেন। তারা আজিজসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কাছেও প্রতিকার চেয়েছেন।
পলাশের স্ত্রী জুই আক্তার বলেন, ‘এমন নির্বাচন হবে ভাবিনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিলেন কী, আর মাঠে আমরা এসব কী দেখছি!’ তিনি তার স্বামী পলাশের ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
এদিকে, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ফয়সাল আল এহসান বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা না যাওয়া পর্যন্ত তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।’
সোমবার (২০ মে) দুপুরে কসবা উপজেলা সদর স্টেশন রোডে সাংবাদিক সম্মেলন করেন আনারস প্রতীকের উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী রাশেদুল কায়সার ভূঁইয়া জীবন। তিনি এই ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে হামলাকারীদের গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। অন্যথায় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন থেকে যাবে বলেও জানান তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন জানান, এ ঘটনায় ওয়াসিম নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।