মিয়ানমারের আকিয়াব থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে আসার পথে একটি কাঠবোঝাই নৌকা আটকে রেখেছে সে দেশের বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকাল পর্যন্ত রাখাইনের মংডু খারাংখালী খালে কাঠবোঝাই ওই নৌকাটি আরাকান আর্মির জিম্মায় রয়েছে।
জানা গেছে, সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের গোলারচর এলাকা থেকে তল্লাশির কথা বলে স্পিডবোটে ধাওয়া করে কাঠবোঝাই নৌকাটি ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি। তিন দিন হলেও এখনও নৌকাটি ছাড়েনি তারা।
আবারও তল্লাশির নামে আরাকান আর্মি একটি কাঠবোঝাই নৌকা জিম্মি করে রেখেছে বলে স্বীকার করেছেন টেকনাফ স্থলবন্দর ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্টের ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘তিন দিন হলেও একটি কাঠবোঝাই নৌকা এখানে এসে পৌঁছেনি। ওই নৌকাতে ৩৫ টন কাঠ রয়েছে। এসব পণ্য ব্যবসায়ী আবদুল কাদেরের কাছে আসছিল। এ ছাড়া গত ১৬ জানুয়ারির পর ইয়াঙ্গুন থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে কোনও পণ্যবাহী নৌকা আসেনি।’
এ বিষয়ে টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী আবদুল কাদের বলেন, ‘৩৫ টন কাঠ নিয়ে মিয়ানমার থেকে একটি নৌকা আমার কাছে আসার পথে সে দেশের আরাকান আর্মি স্পিডবোটে ধাওয়া করে ধরে নিয়ে গেছে। শুনেছি তারা (আরাকান আর্মি) তল্লাশি চালাচ্ছে। হয়তো তাদের কেউ ভুল তথ্য দিয়েছে। তবে সে দেশের ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। তল্লাশি শেষে আটক নৌকাটি ছেড়ে দেবে বলে শুনেছি।’
এর আগে, গত ১৬ জানুয়ারি দুপুরে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে আসার পথে নাফ নদের মোহনায় আটক হয় পণ্যবাহী তিনটি কার্গো। এসব কার্গোতে ৫০ হাজার বস্তা শুঁটকি, সুপারি, কফিসহ বিভিন্ন পণ্য ছিল। এর মধ্যে গত ২০ জানুয়ারি দুটি কার্গো ছেড়ে দেয় আরাকান আর্মি। সেখানে ২৭ হাজার ৭২২ বস্তা মালামাল ছিল। আরেকটি গত ১ ফেব্রুয়ারিতে ছেড়ে দেয় তারা। এরপর দশ দিনের মাথায় আবারও একই ধরনের ঘটনা ঘটলো।
জানতে চাইলে আমদানিকারক মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, ‘কয়েকদিন পরপর একই ধরনের ঘটনা খুব দুঃখজনক। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে পড়বে। ফলে সরকারের উচিত এটির স্থায়ী সমাধান করা। গত ১৬ জানুয়ারির পর এখন পর্যন্ত ইয়াঙ্গুন থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে পণ্যবাহী নৌকা আসা বন্ধ রয়েছে। তার ওপর এ ধরনের ঘটনা।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘টেকনাফ স্থলবন্দরে আসার পথে কাঠবোঝাই এক নৌকা নিয়ে গেছে বলে শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি।’