যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজে আটকে পড়া টাঙ্গাইলের রবিউল আওয়াল (৩২) বাঁচার আকুতি জানিয়ে বড় ভাইয়ের মোবাইল ফোনে বার্তা পাঠিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘ভাই আমরা আতঙ্কিত, আমরা বাঁচতে চাই, দেশে ফিরতে চাই।’ রবিউল আওয়াল ওই জাহাজের সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটি ইউনিয়নের পাহারপুর গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) দুপুর আড়াইটার দিকেও রবিউল তার বড় ভাই আজিজুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। বর্তমানে ওই এলাকায় বোমা কম ফেলা হচ্ছে বলে রবিউল তার ভাইকে জানিয়েছে। তারপরও তারা খুবই আতঙ্কে রয়েছেন। যেকোনও মূল্যে তাদের রক্ষা করতে সরকারসহ বিভিন্ন জনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
আজিজুল হক খান জানান, তার ভাইসহ বর্তমানে ২৮ জন বাংলাদেশি নাবিক-ক্রু জাহাজে রয়েছেন। তারা সবাই আতঙ্কে আছেন। তার ভাইয়ের সঙ্গে প্রতিনিয়তই মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে যোগাযোগ হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, প্রায় ছয় মাস ধরে রবিউল বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে কর্মরত আছে। ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে তার তারা ইউক্রেনের বন্দরে আটকা পড়ে আছে। বুধবার তার ভাই তাকে মেসেজের মাধ্যমে জানায়, তাদের জাহাজে বোমা হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। এরপর তারা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনে ফোন দিয়ে খবর নিয়েছেন।
এদিকে, ইউক্রেনের বন্দরে আটকে পড়া বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে কর্মরত রবিউল আওয়ালসহ সবাইকে উদ্ধারের দাবি জানিয়েছে তার পরিবার। রবিউলকে প্রাণে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। ১১ দিন ধরে ওই জাহাজে রবিউল আটকে আছেন বলে জানিয়েছেন তার বাবা হোসেন আলী।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. আতাউল গনি বলেন, ‘তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আশা করছি, দ্রুতই তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।’
উল্লেখ্য, বুধবার হামলার পর অলভিয়া বন্দরে থাকা বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে আগুন ধরে যায়। শুরুতে নাবিকরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। অলভিয়া বন্দর থেকে একটি টাগবোট এসে আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়। নাবিকদের চেষ্টায় জাহাজের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। হামলায় জাহাজের ব্রিজ ধ্বংস হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপে নিথর দেহ পড়ে ছিল হাদিসুর রহমান আরিফের।