গাজীপুরের শ্রীপুরে এমঅ্যান্ডইউ কারখানার ঝুট ব্যবসার দখল নিতে ঝুট ব্যবসায়ীসহ চার জনকে কুপিয়ে জখম করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে উভয় পক্ষ শ্রীপুর থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দিয়েছেন। এর আগে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শ্রীপুর পৌরসভার পশ্চিম ভাংনাহাটি (মোল্লাপাড়া) এলাকার ওই কারখানার সামনে তাদের কুপিয়ে জখম করা হয়।
আহতরা হলেন- এমঅ্যান্ডইউ কারখানার ঝুট ব্যবসায়ী ওয়াদুদ মোল্লা, তার ছেলে তন্ময়, ভাই আবু সাঈদ মোল্লা, ইলিয়াস মোল্লা এবং সাখাওয়াত হোসেন মোল্লা। তাদের গাজীপুর তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন- শ্রীপুর পৌর বিএনপির সহসভাপতি আফাজ উদ্দিন মোল্লা, তার অনুসারী হেলাল মোল্লা, তোফাজ্জল হোসেন, ফরহাদ হোসেন, শাকিল, বাবুল, মোন্তাজউদ্দিন, সাব্বির আহম্মেদ (২০) এবং আশরাফুল (৩৮)। তারা পৌরসভার পশ্চিম ভাংনাহাটি (মোল্লাপাড়া) এলাকার বাসিন্দা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে এমঅ্যান্ডইউ কারখানাসংলগ্ন ভাংনাহাটি পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে আফাজ উদ্দিনের নেতৃত্বে ওয়াদুদ মোল্লাকে কুপিয়ে আহত করা হয়। তাকে উদ্ধারে ছেলে তন্ময় এবং দুই ভাই আবু সাঈদ মোল্লা ও সাখাওয়াত হোসেন মোল্লা এগিয়ে গেলে তাদেরকেও পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে ওয়াদুদ মোল্লার লোকজন আফাজ উদ্দিন ও তার অনুসারীদের ওপর হামলা চালায়।
ওয়াদুদ মোল্লার ছোট ভাই ইলিয়াস মোল্লা বলেন, ‘বুধবার সকালে আমার বড় ভাই ওয়াদুদ মোল্লা স্থানীয় ফজলুর দোকানে চা পানের জন্য বাড়ি থেকে বের হন। এমঅ্যান্ডইউ কারখানার সংলগ্ন বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছামাত্রই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমার ভাইয়ের পথরোধ করেন। একপর্যায়ে হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়। তাকে রক্ষা করতে আমরা এগিয়ে গেলে লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে আমাদেরও পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়। এ অবস্থায় আশপাশের লোকজন আমাদের রক্ষা করতে এগিয়ে এলে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যান আফাজ উদ্দিন ও তার লোকজন।’
ইলিয়াস আরও মোল্লা বলেন, ‘এমঅ্যান্ডইউ কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বৈধ ওয়ার্ক অর্ডার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঝুট ব্যবসা করে আসছেন ওয়াদুদ মোল্লা। সরকার পরিবর্তনের পর থেকে বিএনপি নেতা আফাজ উদ্দিন ও তার লোকজন ঝুট ব্যবসা দখলে নেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে আসছেন।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রীপুর পৌর বিএনপির সহসভাপতি আফাজ উদ্দিন মোল্লা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। উভয় পক্ষ থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ দিয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।’