রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদকে ঘিরে কোরবানির পশু বেচাকেনাও প্রায় শেষ। তবে সাতক্ষীরার কোরবানির পশুর মধ্যে অন্যতম প্রায় ৪০ মণ ওজনের ‘সম্রাট’ ও ৩৫ মণ ওজনরে ‘শুভরাজ’ বিক্রি হয়নি। এবার গরু দুটি পশুর হাট মাতানোর আশা করা হলেও তেমন কিছুই হয়নি। অস্ট্রেলিয়ান হলেস্টাইন ফ্রিজিয়ান জাতের দুটি গরু কেনার জন্য ক্রেতা আসেনি।
এতে হতাশ হয়েছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঘুড্ডেরডাঙ্গী গ্রামের প্রভাষক ইয়াহিয়া তমিজী। নিজ বাড়িতেই পরম যত্নে লালন-পালন করে বড় করে তুলেছেন গরু দুটি। প্রায় ৪০ মণ ওজনের সম্রাটের দাম হাঁকা হয়েছে ১৬ লাখ আর ৩৫ মণ ওজনের শুভরাজের দাম ধরা হয়েছে ১৪ লাখ টাকা।
সরেজমিন জানা গেছে, পাঁচ বছর বয়সের সম্রাট ও সাড়ে চার বছর বয়সের শুভরাজকে এ বছরই কোরবানি ঈদে ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন ইয়াহইয়া তমিজী। গরু দুটি এতই বৃহদাকারের যে গোয়াল থেকে বের করাও কষ্টের। সারা দিন গোয়ালেই ফ্যানের বাতাসে দিন কাটে তাদের। এদের মধ্যে সম্রাটের উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি ও দৈর্ঘ্য ৮ ফুট ২ ইঞ্চি। আর শুভরাজের উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি ও দৈর্ঘ্য ৭ ফুট ৮ ইঞ্চি। ভুসি, একাত্তরের প্রি-মিক্স, সয়াবিনের খৈল আর টাটকা ঘাস খেয়েই বেড়ে উঠেছে।
একেকটি গরুর পেছনে দৈনিক ব্যয় গড়ে এক হাজার টাকা। দিনে পাঁচ থেকে ছয়বার গোসল দিতে হয় তাদের। ইয়াহিয়া ও তার স্ত্রী মিলেই করেন সব কিছু। প্রতিদিন তাদের বাড়িতে বিভিন্ন পেশার মানুষ গরুটি দেখতে ভিড় জমালেও কোনও ক্রেতা সাড়া দেয়নি। অনেকে গরুর সঙ্গে ছবি তুলেছেন।
গরু দুটি দেখতে এসে বিস্মিত হন আবিহার রহমান নামের এক ক্রেতা। তিনি বলেন, এত বড় গরু আগে কখনও দেখিনি। গরু দুটি দেখতে ভালো, ওজনও অনেক বেশি।
মালিক ইয়াহিয়া বলেন, সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থেকে ছোট বাছুর অবস্থায় সম্রাট ও শুভরাজকে এক লাখ ৭০ হাজার টাকায় কিনেছিলাম। সেই থেকে পরম যত্নে তাদের বড় করে তুলেছি। এক বিঘা সাত কাটা বাড়িতে নিজেদের বসতঘর বাদে সর্বত্রই ঘাস চাষ করা হয়েছে তাদের খাওয়ানোর জন্য।
তিনি বলেন, পবিত্র হজ পালনের জন্য গরু দুটি পরম যত্নে লালন-পালন করেছি। এবারের কোরবানি ঈদে বিক্রি করতে চেয়েছিলাম। এ জন্য ৪০ মণের সম্রাটের জন্য ১৬ লাখ ও ৩৫ মণের শুভরাজের জন্য ১৪ লাখ টাকা দাম প্রত্যাশা করেছিলাম। অনেকেই দেখতে আসছেন, কিন্তু কোনও ক্রেতা আসেনি। প্রতিদিন যে পরিমাণ খরচ তাতে আমি বিপদে পড়ে গেলাম। এখন কী করবো বুঝতে পারছি না।