বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের ধারণ ক্ষমতা মাত্র ৬৩৩ জনের। সেখানে বর্তমানে রয়েছে ১ হাজার ১৩৮ বন্দি। পুলিশের চলমান বিশেষ অভিযানে বরিশাল মহানগর ও ১০ উপজেলা থেকে প্রতিদিনই শ’ শ’ মানুষকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। যে হারে প্রতিদিন কারাগারে বন্দি বাড়ছে সেই হারে জামিন মিলছে না। ফলে কারাগারে প্রতিদিন বাড়ছে বন্দির সংখ্যা।
জামিনে বের হয়ে আসা কয়েকজন আসামি বলেন, জেলখানার ভেতরে বন্দিরা অত্যন্ত মানবেতর অবস্থায় রয়েছেন। টাকা দিলে মিলছে ঘুমানোর জায়গা। আর টাকা না দিলে রাতে ঘুমাতেও পারে না বন্দিরা।
কারাগারে বন্দির সংখ্যা বাড়তে থাকায় সুযোগ-সুবিধাও কমছে ক্রমাগত। তবে কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, বন্দির সংখ্যা ক্রমাগত বাড়লে এখন পর্যন্ত কারা ব্যবস্থাপনায় কোনও অসুবিধা হচ্ছে না। কারাগারে বন্দিরা জেল কোড অনুযায়ী সব সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন।
ধারন ক্ষমতার দ্বিগুন বেশি বন্দি থাকার কথা স্বীকার করলেও জেল কর্তৃপক্ষ বলেছে এতে বন্দিদের থাকা ও খাওয়ার কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
এসব বন্দিদের ব্যবস্থাপনার জন্য কারাগারে লোকবল রয়েছে মাত্র ২৪৩ জন। বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. কামাল হোসেন বলেন, গত ৩/৪ দিনে দেশব্যাপী চলমান পুলিশের বিশেষ অভিযানে প্রতিদিন প্রায় দেড়শ’ আসামিকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। ফলে একটু বাড়তি চাপ থাকলেও সামলে নেওয়া হচ্ছে। কারণ প্রতি সপ্তাহেই আবার ১০০-১৫০ আসামি মুক্তি পাচ্ছে।
তবে কারা কর্তৃপক্ষ স্বীকার না করলেও সদ্য জামিনে মুক্ত হয়ে আসা অনেক হাজতি কারাগারে বন্দিদের মানবেতর জীবনযাপনে কথা বলেছেন। হাজতিদের কীর্তনখোলা ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডে ৯০ জন বন্দির কক্ষে ঘুমাতে হচ্ছে ১৩০-১৪০ জন বন্দিকে। ধাঁনসিড়ি ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডে ৪০ জন বন্দির কক্ষে ঘুমাতে হচ্ছে ৭৫-৮০ জন বন্দিকে।
চন্দ্রদীপ ১ থেকে ৩নং ওয়ার্ডে ৭০ বন্দির কক্ষে ঘুমাতে হচ্ছে ৯০-১০০ বন্দিকে।
একই অবস্থা কারাগারের রুপসী, আমদানি, কিশোর, ডিভিশন ও মহিলা ওয়ার্ডগুলোর।
জেল থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে আসা আসামিরা আরও বলেন, কারাগারে ধারন ক্ষমতার দ্বিগুণ বন্দির জন্য টয়লেটের ব্যবস্থাও পর্যাপ্ত নয়। দিনে ব্যবহারের জন্য টয়লেট রয়েছে ৭৭টি এবং রাতে ব্যবহারের জন্য রয়েছে মাত্র ৪৭টি। সিনিয়র জেল সুপার কামাল হোসেন বলেন, কারাগারে ২২৪ জন ধারণ ক্ষমতার নতুন দুইটি চারতলা ভবনের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের পথে। যা উদ্বোধন হলে বন্দিদের থাকার ব্যবস্থা অনেকটা স্বাভাবিক হবে।
বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মনির হোসেন বলেন, জেলকোড অনুযায়ী প্রতিজন বন্দির জন্য যে জায়গা বরাদ্দ রয়েছে তা একজন বন্দির থাকা খাওয়া জন্য পর্যাপ্ত। তাছাড়া কারাগারের ভবনগুলোতে পর্যাপ্ত করিডোর ও কক্ষগুলো বড় পরিসরের হওয়ায় বন্দিদের থাকতে কোনও সমস্যায় পড়তে হয় না।
আরও পড়ুন:
দুই বছরেও অধরা নারায়ণগঞ্জের দুর্ধর্ষ জঙ্গি সালাউদ্দিন
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা: সাহসী পদক্ষেপ, চ্যালেঞ্জও বেশি
যানজটে বাড়ছে মুমূর্ষু রোগীর মৃত্যুঝুঁকি
/এসটি/