জ্বর-শ্বাসকষ্ট ও বমিতে আক্রান্ত হয়ে নড়াইলে শওকত আলী মোল্যা (২৬) নামে মৃত্যুবরণকারী যুবককে গোসল-জানাজা ছাড়াই কবর দিয়েছে পরিবারের তিন সদস্য। মৃত্যুর ৩ ঘণ্টা পর হাসপাতাল থেকে লাশ বাড়ি নিয়ে এলাকার লোকজনদের না জানিয়ে গোসল-জানাজা ছাড়াই দ্রুত দাফনের কাজ শেষ করায় জনমনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। শওকতের মৃত্যু নিয়ে এলাকায় চলছে নানা গুঞ্জন।
নড়াইল পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এহসান হাবীব তুফান জানান, মৃত শওকতকে সবার অজান্তে গোসল-জানাজা ছাড়াই কবর দেওয়ার পর পরিবারের তিন সদস্য পিতা-মাতা, ভাই ও অন্য সদস্যরা হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন।
বিষয়টি ফেসবুকসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বুধবার সকালে বাড়িটির বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ ইয়ারুল ইসলাম।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, নড়াইল পৌর এলাকার দক্ষিণ নড়াইলের ওমর মোল্যার ছেলে শওকত আলী মোল্যা জ্বর-শ্বাসকষ্ট ও বমিতে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) রাত পৌনে ৯টার দিকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। ভর্তির ১৫ মিনিটের মাথায় তিনি মারা যান বলে জানান হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. তৌহিদুল হাসান তুহিন।
তিনি আরও জানান, কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষার আগেই শওকত মারা গেছেন।
নড়াইল সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. মশিউর রহমান বাবু জানান, শওকত হৃদযন্ত্রের ক্রিযা বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। অন্য কোনও কারণে একজন রোগী এত কম সময়ে মারা যাওয়ার নজির নেই। আমরা ঢাকার আইইডিসিআর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। ওখানকার কর্তৃপক্ষ মৃত্যুবরণকারী শওকতের দাফন-কাফন স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সম্পন্নের জন্য লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের কথা বলেছেন। তবে তার পিতা-মাতা ও বাড়ির অন্য সদস্যদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বলেন, দক্ষিণ নড়াইলে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় ওই এলাকায় বাড়তি সর্তকতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে মৃত শওকত আলীর নমুনা সংগ্রহের প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন। কেউ আতঙ্কিত না হয়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সচেতন থাকতে হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
জ্বর-শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির ১৫ মিনিট পর রোগীর মৃত্যু