ধর্ষিত কিশোরীকে সালিশের মাধ্যমে জরিমানা করা মাগুরার সেই আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফা সিদ্দিকী লিটনের (৫৩) নামে আরেকটি মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) সকালে মহম্মদপুর উপজেলার পানিঘাটা গ্রামের সাহেব মল্লিক (৪৮) নামে এক ভুক্তভোগী লিটনসহ ১২ জনকে আসামি করে মাগুরার সিনিয়র জুডিসিয়িাল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন-মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান মোল্যা (৫৫), আক্কাস মোল্যা (৪৩), হামিদুর মোল্যা (৩৮), ইমদাদুর ক্যাপ্টেন (৫৫), রজব আলী (৩৫), হেদায়েত মোল্যা (৩২), মিজানুর রহমান (৫০), মিটুল মোল্যা (৪৫), পাখি মিয়া (৩৫), ইমরান (৪২) ও তুরফান সিকদার (৪২)।
বাদী তার মামলায় অভিযোগ করেন, আসামিদের সঙ্গে সামাজিক দলাদলি নিয়ে শত্রুতা চলছিল তার। গত ২ জুন সকালে ঘুমন্ত অবস্থায় আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার বাড়িতে এসে দরজায় নক করতে থাকলে তার ঘুম ভেঙে যায়। আসামিরা বলে তাদের অনেক বিপদ একটু পানি খেতে চায়। বাদী সরল বিশ্বাসে দরজা খোলা মাত্রই আসামিরা ঘরের মধ্যে ঢুকে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। বাদী তখন আসামিদের হাতে পায়ে ধরে কান্নাকাটি করতে থাকেন। যখন বলা হয় এই মুহূর্তে টাকা না দিলে তাকে খুন করে ফেলা হবে তখন তিনি তার ঘরে থাকা ৫০ হাজার টাকা চাঁদা হিসেবে আসামিদের হাতে তুলে দেন। আসামিরা বাকি টাকা যোগাড় করার কথা বলে চলে যায়। বিষয়টি কাউকে জানালে তাকে খুন করার হুমকি দেয়। এরপর আসামিদের ভয়ে বাদী তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে যান। এখন পর্যন্ত বাদী ও তার পরিবার বাড়িতে ফিরতে পারেনি। এতদিন বাদী আসামিদের প্রাণনাশের হুমকির কারণে মামলা করতেও পারেনি বলে মামলায় উল্লেখ করেন।
মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তারক নাথ বিশ্বাস মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আসামিরা পলাতক। তাদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান চলছে।
প্রসঙ্গত, মহম্মদপুর উপজেলার নহাটা ইউনিয়নের পরমেশ্বরপুর গ্রামে বিয়ের আগে কিশোরীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার অভিযোগে সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া এক কিশোরীর পরিবারকে অবৈধভাবে জরিমানা করার অভিযোগে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা সিদ্দিকী লিটনসহ ১৬ জনের নামে গত ২০ আগস্ট মামলা করে ভুক্তভোগী বাবা। ওই মামলায় অভিযোগ করা হয় সালিশি বৈঠকে নির্ধারিত জরিমানার টাকা না দেওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা তার লোকজন দিয়ে ভুক্তভোগী বাদীর বাড়ি থেকে একটি গরু, চারটি ছাগল, একটি বাইসাইকেল, ভ্যানসহ বিভিন্ন মালামাল লুট করে নিয়ে আসে।