X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

এবার ঠোঁটে আঙুল রেখে সাক্ষীদের ‘চুপ’ থাকার হুমকি নূর হোসেনের

তানভীর হোসেন, নারায়ণগঞ্জ
১৮ এপ্রিল ২০১৬, ১৮:১৮আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০১৬, ১৮:১৯

নূর হোসেন

সাক্ষ্য গ্রহণের সময়ে কখনও অট্টহাসি, কখনও মুচকি হেসে আবার কখনও চোখ রাঙিয়ে বিপরীত দিকের কাঠগড়ায় থাকা সাক্ষীদের ভয় দেখানোর চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের বিরুদ্ধে। আদালতে তার আচার আচরণ নিয়ে একাধিকবার প্রশ্ন তুলেছেন সাক্ষীরা। তার চোখ রাঙানিতে ভয় পেয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় কণ্ঠ জড়িয়ে যাওয়া বা কথা আটকে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে সাক্ষীদের মধ্যে।

তবে সোমবার ( ১৮ এপ্রিল) আদালত সাক্ষ্য গ্রহণের সময়ে নূর হোসেনকে আরও উদ্ধত ভূমিকায় দেখা গেছে। এদিন তাকে একাধিকবার দেখা গেছে কাঠগড়ায় থেকেই বিপরীত কাঠগড়ায় থাকা সাক্ষীদের প্রতি দুই ঠোঁটে আঙুল রেখে ‘চুপ’ থাকার ইশারা করতে। সোমবার যে সাতজন সাক্ষ্য দিয়েছেন তাদের প্রত্যেকের দিকেই নূর হোসেন কোনও কথা না বলার জন্য এ ধরনের অঙ্গভঙ্গি করেন।


আরও পড়ুন- সুন্দরবনে আবারও আগুন, বনবিভাগের দাবি ‘নাশকতা’

সাক্ষ্য দেওয়া একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নূর হোসেন প্রভাবশালী ব্যক্তি। এখন সাক্ষ্য দিতে এসেও তার চোখ রাঙানিতে ভয় পেতে হচ্ছে। এসব কারণে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

এদিকে কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের ভাই আবদুস সালাম সোমবার ভয়ের কারণেই সাক্ষ্য দিতে আসতে পারেননি বলে জানিয়েছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান। তিনি জানান, আবদুস সালাম সাক্ষ্য দিতে আদালতে আসতে পারেননি। তাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে। আদালতে সাক্ষীদের আসার জন্য নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে।

নূর হোসেন

সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে বহুল আলোচিত সাত খুন মামলার ২৩ আসামির উপস্থিতিতে সাত জনের সাক্ষ্য  গ্রহণ ও জেরা হয়।

নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতের পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, সোমবার সাত খুনের ঘটনায় নিহত নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি (একটি মামলার বাদী), নিহত নজরুল ইসলামের শ্যালক সাইদুল ইসলাম, নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের ভাগ্নে প্রীতম কুমার, নিহত তাজুল ইসলামের চাচা আবু তাহের, এসআই আবু হানিফ, কনস্টেবল আব্দুল কুদ্দুস, এসআই মিজানুর রহমানের সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে।

সাত খুনের ঘটনায় দুটি মামলা হয়। একটি মামলার বাদী বিজয় কুমার পাল হলেন নিহত অ্যাডভোকেট চন্দন সরকারের মেয়ে জামাতা ও অপর বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি হলেন নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী।

দুটি মামলাতেই অভিন্ন সাক্ষীর সংখ্যা ১২৭ জন করে। একারণে উভয় মামলার সাক্ষীদের একই সঙ্গে দুই মামলায় জেরা করা হয়।

আরও পড়ুন- জনপ্রতিনিধিদের বরখাস্তের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে

প্রসঙ্গত ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহীম অপহৃত হন। পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের ও ১ মে একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

তদন্ত শেষে প্রায় এক বছর পর ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল নূর হোসেন, র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। গত ৮ ফেব্রুয়ারি সাত খুনের দুটি মামলায় নূর হোসেন ও র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ মামলায় নূর হোসেন ও র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ মোট ২৩ জন কারাগারে আটক রয়েছেন। আর চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে এখনও ১২ জন পলাতক রয়েছে।

আরও পড়ুন- টার্মিনাল টোলের নামে পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি

/এফএস/টিএন/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
স্বজনদের প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করলেন ওবায়দুল কাদের
স্বজনদের প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করলেন ওবায়দুল কাদের
দুর্নীতির দায়ে ক্যারিবিয়ান ব্যাটারকে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা
দুর্নীতির দায়ে ক্যারিবিয়ান ব্যাটারকে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা
এসএসসি’র ফল প্রকাশের দিন ঘোষণা
এসএসসি’র ফল প্রকাশের দিন ঘোষণা
সিরিয়ায় ইসরায়েলি হামলায় ৮ সেনা আহত
সিরিয়ায় ইসরায়েলি হামলায় ৮ সেনা আহত
সর্বাধিক পঠিত
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক