বগুড়ার অবসরপ্রাপ্ত সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা আরিফুর রহমান ও তার স্ত্রী মাহবুবা সুলতানার বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুদকের বগুড়া কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক তারিকুর রহমান বাদী হয়ে নিজ কার্যালয়ে পৃথক দুটি মামলা করেন।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের বগুড়া কার্যালয়ের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম। অভিযুক্ত আরিফুর রহমান দুপচাঁচিয়া উপজেলার সহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি বগুড়ার শিবগঞ্জের বিহারহাট মণ্ডলপাড়ার মৃত নাসিম উদ্দিন আহম্মেদের ছেলে।
মামলার এজাহারে আরিফুর রহমানের বিরুদ্ধে ৫৬ লাখ ৪২ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং ৪৮ লাখ ৫১ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ভোগ দখলের অভিযোগ আনা হয়। অপর মামলায় তার স্ত্রী মাহবুবা সুলতানার বিরুদ্ধে ৩৪ লাখ ৩৮ হাজার ৫৫৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও ৪৯ লাখ ৫৩ হাজার ৬০ টাকার জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আরিফুর রহমান ধুনট উপজেলায় সেটেলমেন্ট অফিসার হিসেবে কর্মরত থাকাকালে তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। প্রতিবাদে তার বিরুদ্ধে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয়রা।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে আরিফের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৯ সালের ২০ মার্চ তাকে সম্পদের বিবরণী দাখিলের নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। ওই বছরের ২৭ মার্চ তিনি সম্পদের বিবরণী দাখিল করেন। তাতে ৫৬ লাখ ৪২ হাজার ৩৭৪ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপন করা হয়। পরে ৪৮ লাখ ৫১ হাজার ৩৫৪ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে তা ভোগদখল করছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে। যা দুদক আইনের ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
অপরদিকে তার স্ত্রী মাহবুবা সুলতানাকে গত ২০১৯ সালের ২০ মার্চ সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ দেওয়া হয়। তার ৫৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। মাহবুবার ১০ লাখ ২৪ হাজার টাকার ধারদেনা ছাড়া তার অর্থের কোনও উৎস নেই। আরিফুর রহমান তার অবৈধ সম্পদের উৎস গোপন করার জন্য স্ত্রীকে সম্পদ হস্তান্তর করেছেন বলে তদন্তে প্রমাণ পাওয়া যায়।
দুদকের বগুড়া কার্যালয়ের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘তদন্তে সাবেক সেটেলমেন্ট অফিসার আরিফুর রহমান ও তার স্ত্রী মাহবুবা সুলতানার বিরুদ্ধে অবৈধ অর্থ ও সম্পদের প্রমাণ পাওয়া যায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আরিফুর রহমানের বিরুদ্ধে একটি এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহে তার কাছে মামলার নথি হস্তান্তর করা হবে।’