বগুড়ার কাহালুতে হত্যাসহ ২৯ মামলার আসামি সাবেক যুবদল নেতা বিরাজুল ইসলাম ব্রাজিলকে (৩৩) কুপিয়ে হত্যা মামলার মূলহোতা আকতারুল মেম্বার ধরা পড়েছেন। র্যাব-১২ বগুড়া কোম্পানির সদস্যরা বুধবার রাতে তাকে নিশিন্দারা উপশহর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব-১২ কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার মীর মনির হোসেন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
র্যাব সূত্র জানায়, গ্রেফতার আকতারুল মেম্বার বগুড়ার কাহালু উপজেলার সামন্তাহার পোড়াপাড়ার মৃত মোবা পাগলার ছেলে। তিনি ব্রাজিল হত্যা মামলার ৩ নম্বর আসামি হলেও মূল পরিকল্পনাকারী।
বিরাজুল ইসলাম ব্রাজিল বগুড়া শহরের দক্ষিণ গোদারপাড়া এলাকায় শাহজাহান আলীর ছেলে ও যুবদল চারমাথা বন্দর শাখার সাবেক সভাপতি ছিলেন। গত কয়েক মাস ধরে তিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। মিছিল ও মিটিংসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতেন। কিছুদিন আগে একটি মামলায় জামিন পেয়ে কাহালুর পোড়াপাড়ায় শ্বশুরবাড়ি এলাকায় বসবাস করছিলেন। গত ৮ জুন রাতে কাহালু উপজেলার মুরইল ইউনিয়নের পোড়াপাড়া এলাকায় ব্রাজিলকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ব্যাপারে নিহতের মা আঞ্জুয়ারা বিবি কাহালু থানায় মো. মনসুরকে প্রধান আসামি করে আট জনের নাম উল্লেখ করে ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এজাহারে হত্যার কারণ হিসেবে পুকুরে মাছ চাষ ও রাজনৈতিক বিরোধের কথা উল্লেখ করা হয়। পরে মামলাটি তদন্তের জন্য বগুড়া ডিবি পুলিশকে দেওয়া হয়েছে।
র্যাব-১২ বগুড়া কোম্পানি কমান্ডার মীর মনির হোসেন বলেন, মামলার পর আসামিদের গ্রেফতারে তারা ছায়া তদন্ত শুরু করেন। গোপনে খবর পেয়ে বুধবার রাতে বগুড়ার নিশিন্দারা উপশহর এলাকা থেকে ব্রাজিল হত্যার পরিকল্পনাকারী আকতারুল মেম্বারকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, প্রায় দুই বছর আগে ব্রাজিলের নেতৃত্বে দুর্বৃত্তরা তার পাঁচ বিঘা পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ নিধন করে। পরবর্তীতে পুকুরটি ব্রাজিল দখল করে এবং ওইদিন রাতে ব্রাজিলের খালাতো ভাই মন্টু তার (মেম্বর) মেজ ছেলেকে ছুরিকাহত ও বাড়িঘরে লুটপাট করে।
তিনি আরও বলেন, ব্রাজিল তাকে চারবার হত্যার চেষ্টা করেছিল। প্রায়ই ফোনে বলতো বউকে বিধবা করবে। এ ক্ষোভ থেকে ব্রাজিলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুসারে আকতারুল মেম্বরসহ সাত জন গত ৮ জুন রাত সাড়ে ১০টার দিকে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে কাহালুর পোড়াপাড়া এলাকায় পথরোধ করে ব্রাজিলকে কুপিয়ে হত্যা করেন। গ্রেফতার আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাকে তদন্তকারী সংস্থা ডিবি পুলিশকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ডিবি পুলিশের ওসি মুস্তাফিজ হাসান বলেন, আসামিকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।