বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী সাগর হোসেন তালুকদার (৩৫) ও তার সহযোগী স্বপন (৩২) হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ২০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি ঘটনা রয়েছে বলে আদালতে এক আসামি স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছে চিঠি পাঠিয়ে সাগর হোসেন নিজেই এই ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার (০১ অক্টোবর) দুপুরে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মেহেদী হাসান ১৬৪ ধারায় গ্রেফতার আসামি মো. সাগরের (২৫) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। বগুড়া আদালতের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন জবানবন্দি রেকর্ডের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বগুড়া জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একটি দল সোমবার রাতে টঙ্গী এলাকা থেকে জোড়া হত্যাকাণ্ড মামলার এজাহারনামীয় দুই আসামি সাবরুল বাগিনাপাড়ার মো. সাগর ও আবদুল জলিলকে (৩০) গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার দুই আসামির মধ্যে একজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
বগুড়া গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি মোস্তাফিজ হাসান বলেন, জবানবন্দি প্রদানের আগে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামি সাগর জানিয়েছেন, ২০ লাখ টাকা চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে সাগর তালুকদারকে হত্যা করা হয়েছে। সাগর তালুকদার চিঠি পাঠিয়ে সাবরুল বাগিনাপাড়ার এক ব্যক্তির কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না পেলে তার ছেলেকে হত্যার হুমকি দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ব্যক্তি সাগরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এরপর সহযোগীদের নিয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর সাবরুল ছোট মণ্ডলপাড়ায় ওত পেতে থাকেন। সাগর তালুকদার পুকুরে মাছের খাবার দিয়ে সাবরুল বাজারে ফেরার পথে মোটরসাইকেলের পথ রোধ করে অতর্কিত হামলা করা হয়। এ সময় সাগর ও তার সহযোগীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
জোড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২৬ সেপ্টেম্বর সাগর তালুকদারের বোন রোকসানা আকতার বাদী হয়ে শাজাহানপুর উপজেলার আশেকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হযরত আলীসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন। নিহত সাগর হোসেন সাবরুল বাজার এলাকার গোলাম মোস্তফা তালুকদারের ছেলে এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের সক্রিয় কর্মী। তার সহযোগী স্বপন সাবরুল তালুকদার পাড়ার সাইফুল ইসলামের ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাসহ অন্তত এক ডজন মামলার আসামি সাগর এবং স্বপনও একাধিক মামলার আসামি। ঘটনার সময় কবজি বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া সাগরের অন্যতম সহযোগী মুক্তার হোসেন (২৯) ওই গ্রামের আনসার আলীর ছেলে। ঘটনার পর থেকে পলাতক থাকায় মুক্তারের এখনও সন্ধান পায়নি পুলিশ।