নিখোঁজের ২০ দিন পর রাজশাহীর তানোর উপজেলায় চিত্তরঞ্জন পাল (২৬) নামের এক তরুণের বস্তাবন্দি হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (১৭ মে) সকালে উপজেলার হাবিবনগর এলাকায় শিব নদে কচুরিপানার ভেতর থেকে বস্তাটি উদ্ধার করা হয়। পরনে থাকা লুঙ্গি ও গেঞ্জি দেখে লাশটি শনাক্ত করেছে পরিবার। এ মৃত্যুর জন্য ওই তরুণের প্রেমিকার পরিবারকে সন্দেহ করছে তার পরিবার।
চিত্তরঞ্জন পাল উপজেলার হাবিবনগর পালপাড়া গ্রামের মনোরঞ্জন পালের ছেলে। একমাত্র ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পরদিন তিনি তানোর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন। প্রেমঘটিত কারণে ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি তার। পরিবারের সদস্যরা জানান, বস্তার ভেতরে থাকা হাড়গোড়ের সঙ্গে একটি লুঙ্গি ও গেঞ্জি দেখে তারা লাশ শনাক্ত করেন। কারণ নিখোঁজের দিন ওই লুঙ্গি ও গেঞ্জি তার পরনে ছিল।
মনোরঞ্জন পাল জানান, তার ছেলে অনার্স পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। একই গ্রামের এক কলেজছাত্রীর সঙ্গে ছেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই ছাত্রীর বাবা ও ভাইয়েরা এই সম্পর্ক মেনে নেয়নি। তারা চিত্তরঞ্জনকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। সম্প্রতি ওই প্রেমিকা চিঠি দিয়ে তার ছেলেকে হত্যার ষড়যন্ত্রের বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছিল। ওই চিঠি আমাদের কাছে আছে। পুলিশ তিন জনকে ধরে এনেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করবো।’
মনোরঞ্জন পাল বলেন, ‘আমার একমাত্র ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। প্রেমের সম্পর্কের জেরেই তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’
তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জানা গেছে প্রেমঘটিত বিরোধের কারণেই চিত্তরঞ্জন পালকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পর তার লাশ বস্তায় ভরে শিব নদে ফেলে দেওয়া হয়। শুক্রবার সকালে দুর্গন্ধ ছড়ালে স্থানীয়রা কচুরিপানার ভেতরে বস্তাটি দেখতে পান। খবর পেয়ে আমরা লাশটি উদ্ধার করি। লাশটি ২০ দিন পানির মধ্যে থাকায় পচে কেবল হাড়গোড় অবশিষ্ট ছিল। পোশাক দেখে পরিবারের সদস্যরা লাশ শনাক্ত করেছেন। সেটি ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তিন জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলার প্রক্রিয়া চলছে।’