X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

‘মৃত্যুর আগে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেলে মরেও শান্তি পাব’

তৈয়ব আলী সরকার, নীলফামারী
০৫ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৮:০০আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৮:২০





`৭১ সালে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেও আজ গর্ব করে বলতে পারি না আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। তাই মৃত্যুর আগে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেতে চাই। তাতে মরেও শান্তি পাব।’ আক্ষেপ নিয়েই কথাগুলো বলছিলেন নীলফামারী ডোমার উপজেলার পৌর শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আজিজার রহমান (৭৮)। মুক্তিযোদ্ধা আজিজার রহমান



আজিজার রহমান জানান, পঞ্চগড় জেলার দেবিগঞ্জ উপজেলা থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে ভারতে যান তিনি। সেখানে মুজিব ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ শেষে তেঁতুলিয়া, ভোজনপুর, জগদল, ইসলামপুর, থুকরাবাড়ী ক্যাম্পে নাসির কোম্পানিতে আলাউদ্দিন হাওলাদারের নেতৃত্বে যুদ্ধ করেন। দেশ স্বাধীনের পর বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মোহাম্মদ আতাউল গনি ওসমানী এবং আঞ্চলিক অধিনায়ক খাদেমুল বাসারের স্বাক্ষরিত একখানা সনদপত্র হাতে নিয়ে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। অথচ দেশ স্বাধীনের ৪৫ বছর পেরিয়ে গেলেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাননি তিনি।
এ নিয়ে দুঃখের শেষ নেই আজিজার রহমানের। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম লেখাতে আমি কর্তৃপক্ষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। দেশ আজ স্বাধীন। অস্ত্র হাতে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয়ী হলেও জীবনযুদ্ধে দারিদ্র্যের সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে আমি পরাজিত। অভাব-অনটন আমার নিত্য দিনের সঙ্গী।’
এই বীর মুক্তিযোদ্ধার সনদে লেখা আছে, এফ এফ-৬৩/২৫ মো. আজিজার রহমান পিতা মৃত আহাদ হোসেন প্রধান, গ্রাম রামগঞ্জ বিলাসী, থানা দেবিগঞ্জ, জেলা পঞ্চগড়। স্বাধীনতা যুদ্ধে ৬ নম্বর সেক্টরে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ২০১৩ সালে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দেবিগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাচাই কমিটির কাছে আবেদন করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে সাড়া পাননি।
এ প্রসঙ্গে ডোমার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. নুরনবী বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক দলবদলের কারণে কিছু কিছু প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তাদের ন্যায্য স্বীকৃতি থেকে বাদ পড়েছেন। তবে পর্যায়ক্রমে তালিকা ভুক্তির কাজ চলছে। আশা করি আজিজার রহমানের নাম তালিকায় উঠে যাবে অচিরেই।’
জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফজলুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আজিজার রহমান একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। তার কাগজপত্র তাই প্রমাণ করে। তিনি সরকারি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তালিকা ভুক্তির জন্য আবেদন করেছেন। আশা করছি, সরকার দ্রুতই তার নাম তালিকাভুক্ত করবে।’
মুক্তিযুদ্ধের সময়ে আজিজার রহমানের পিঠের ডানদিকে গুলি লেগেছিল। সে সময় তিনি সৈনিক হাসপাতালে অপারেশন করে সুস্থ হন। আজও তার শরীরে ক্ষতের দাগ আছে। বর্তমানে তিনি দুই কানেই কম শোনেন।
ডোমার পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ক্যানেলের পাড় গ্রামে সরকারি (খাস) জমিতে স্ত্রী, এক ছেলে, নাতি-নাতনী নিয়ে অতি কষ্টে জীবনযাপন করছেন আজিজার রহমান। অভাবের তাড়নায় নিজের জায়গা-জমি বিক্রি করে বাধ্য হয়ে ডোমারে খাস জমিতে বাড়ি করে মাথা গোঁজার জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।
/এমডিপি/এএআর/

সম্পর্কিত
নানা আয়োজনে রাজধানীবাসীর বিজয় উদযাপন
বিজয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনা
জাবিতে আলোকচিত্র প্রদর্শনী
সর্বশেষ খবর
মাড় ফেলে ভাত রান্না হলে ‘১৫ ভাগ অপচয় হয়’
মাড় ফেলে ভাত রান্না হলে ‘১৫ ভাগ অপচয় হয়’
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ