X
মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
৩০ বৈশাখ ১৪৩২

সন্ধ্যা হলেই শহীদ মিনারে বসে মাদকসেবীদের আড্ডা

লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:১৯আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৬:৩৩

ভাষা শহীদ দিবস, স্বাধীনতা দিবস আর বিজয় দিবসে শহীদ মিনার পরিষ্কার করা হলেও বছরের বাকি সময়টা থাকে অযত্নে। শহীদ মিনার এলাকায় নেই কোনও বৈদ্যুতিক বাতি। সন্ধ্যার পর শহীদ মিনারে বসে মাদকসেবীদের আড্ডা।

এছাড়া শহীদ মিনারের বেদীর পেছনে চলে মলমূত্র ত্যাগ। শহীদ মিনারের পুরো এলাকা জুড়ে রাখা হয় সিটি করপোরেশনের গাড়ি। এমন চিত্র রংপুর শহরের শহীদ মিনারের। 

ভাষা সৈনিক, মুক্তিযোদ্ধাসহ বিশিষ্টজনরা দীর্ঘদিন ধরে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসনের এদিকে কোনও দৃষ্টি নেই। দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে শহীদ মিনারটি নির্মাণ করার দাবি জানালেও নেই কোনও পদক্ষেপ।

ভাষা সৈনিক ও রংপুর পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আফজাল জানান, তিনি চেয়ারম্যান থাকাকালীন বিভিন্ন জনের সহযোগিতায় শহীদ মিনার নির্মাণ করেছিলেন। তবে ইচ্ছা ছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে নির্মাণ করার। সেটা নানা কারণে সম্ভব হয়নি। 

দীর্ঘদিনেও নতুন করে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া কেন হচ্ছে না তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘এখন যে শহীদ মিনার আছে সেটি নির্মাণ করার পর এর পবিত্রতা রক্ষার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া এখন সেসব উদ্যোগ নেই।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা শাহাদত হোসেন বলেন, ‘শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষার উদ্যোগ নেই। তার উপর বছরের বেশিরভাগ সময় এলাকাটি দখল করে চলে নানা প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন আয়োজন। তখন পুরো এলাকা ঢেকে যাওয়ায় শহীদ মিনারটি দেখা যায় না। ওই সময় বেদীর পেছনে অস্থায়ী টয়লেট বানিয়ে শহীদ মিনারের পবিত্রতা নষ্ট করা হয়। সন্ধ্যা হলেই মাদকসেবীদের আড্ডা বসে। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হলেও তা করা হয় না।’

আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের উদ্যোগে শহীদ মিনার ও পাবলিক লাইব্রেরি এলাকায় সভা সমাবেশ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো। এখন রাজনৈতিক দলগুলো এখানে কালেভাদ্রে সমাবেশ করে। রংপুরের রাজনীতি আর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের তীর্থভূমি বলে পরিচিত পাবলিক লাইব্রেরি মাঠের এক কোণায় নির্মাণ করা হয়েছিল শহীদ মিনার। তবে সেই জৌলুস এখন আর নেই বলে জানালেন সাংস্কৃতিক কর্মী জীবন। 

রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিতে হয়। মাঠের পাশের শহীদ মিনারটি কারা দেখভাল করেন এ নিয়ে সিটি করপোরেশন আর জেলা প্রশাসনের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য রয়েছে। সিটি করপোরেশনের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা শহীদ মিনারের দেখভাল করার জন্য একজন কর্মচারীকে নিয়োগ দিয়েছি। একুশে ফ্রেরুয়ারি এলে শহীদ মিনারে রং করা, ধোয়া-মোছাসহ সব কাজ করা হবে।’

এ ব্যাপারে নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক চিত্র লেখা নাজনীন সাংবাদিকদের বলেন, ‘রংপুর শহীদ মিনারকে পূর্ণাঙ্গ শহীদ মিনার করতে উদ্যোগ নেওয়া হবে। এখানে সব ধরনের আড্ডা বন্ধ করা হবে।’

এ ব্যাপারে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জানান, রংপুরের বিশিষ্টজনদের সঙ্গে কথা বলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে শহীদ মিনার নির্মাণ করার উদ্যেগ নেওয়া হবে। সেইসঙ্গে শহীদ মিনারে মাদকসেবীদের আড্ডা বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

/আরআর/
সম্পর্কিত
সাত দফা দাবিতে ঢাকায় নার্সিং শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
ব্যবসায়ীদের দখলে শহীদ মিনার, জুতা নিয়ে উঠছেন ক্রেতারা 
সিলেটে স্বাধীনতা দিবসের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে ফুল দিতে বাধা
সর্বশেষ খবর
খেলাফত শ্রমিক আন্দোলনের নেতার জন্য থানা ঘেরাও, মুক্তি না দিলে হরতাল
খেলাফত শ্রমিক আন্দোলনের নেতার জন্য থানা ঘেরাও, মুক্তি না দিলে হরতাল
পূজার অনুষ্ঠানে হামলায় আহত ৩, গ্রেফতার ২
পূজার অনুষ্ঠানে হামলায় আহত ৩, গ্রেফতার ২
এনবিআর ভেঙে দুই ভাগ হলো, অধ্যাদেশ জারি
এনবিআর ভেঙে দুই ভাগ হলো, অধ্যাদেশ জারি
কালুরঘাটে হচ্ছে নতুন সেতু, ভিত্তিপ্রস্তরে থাকছে না প্রধান উপদেষ্টার নাম
কালুরঘাটে হচ্ছে নতুন সেতু, ভিত্তিপ্রস্তরে থাকছে না প্রধান উপদেষ্টার নাম
সর্বাধিক পঠিত
পররাষ্ট্র সচিবের অফিসার্স ক্লাবের সদস্য পদ স্থগিত
পররাষ্ট্র সচিবের অফিসার্স ক্লাবের সদস্য পদ স্থগিত
আসন্ন বাজেটে নতুন কী থাকছে
আসন্ন বাজেটে নতুন কী থাকছে
আ.লীগ-ছাত্রলীগের ২৬ নেতার আত্মসমর্পণ
আ.লীগ-ছাত্রলীগের ২৬ নেতার আত্মসমর্পণ
রংপুরের হাসপাতাল নেপাল ও ভুটানের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে: প্রধান উপদেষ্টা
রংপুরের হাসপাতাল নেপাল ও ভুটানের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে: প্রধান উপদেষ্টা
পাকিস্তানে ভারত হামলা করলে সহায়তা করবে বালুচ লিবারেশন আর্মি
পাকিস্তানে ভারত হামলা করলে সহায়তা করবে বালুচ লিবারেশন আর্মি