কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের সংকর মাধবপুর বিলপাড়া এলাকায় গোয়ালঘরে জ্বালানো কয়েলের আগুনে পুড়ে চার দিনমজুর পরিবারের ঘর, আসবাবপত্র ও টাকাসহ খড়ের গাদা পুড়ে গেছে। অগ্নিদগ্ধ মারা গেছে কয়েকটি গরু-ছাগল। সুবিধাজনক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় খবর পেয়েও আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১১টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
তবে আগুনে পুড়ে সর্বস্ব হারালেও সরকারি কোনও সহায়তা পায়নি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো। ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন- সংকর মাধবপুর বিলপাড়া গ্রামের মিজানুর, কাবেল, রশিদ ও ফজল হক। তারা দিনমজুর। এজন্য খাদ্য ও নির্মাণসামগ্রী মজুত না থাকাকে দায়ী করেছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলে এলাহী এসব তথ্য বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে গোয়ালঘরে কয়েল জ্বালিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে দিনমজুর মিজানুরের পরিবার। কয়েলের আগুন কখন বাড়িঘরে ছড়িয়ে পড়েছে, তা টের পাননি। রাত ১১টার দিকে আগুনের তাপে ঘুম ভাঙে তাদের। চিৎকারে প্রতিবেশীসহ এলাকাবাসী আগুন নেভাতে ছুটে আসে। মুহূর্তে পার্শ্ববর্তী ফজল হক, কাবেল ও রশিদের বাড়িতে আগুন আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পুড়ে যায় সবকিছু।
দিনমজুর মিজানুর ও রশিদ জানান, অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হওয়া মিজানুরের বাড়ির কোনও কিছুই অবশিষ্ট নেই। মিজানুরের দুটি ঘর পুড়েছে। নগদ ৬০ হাজার টাকা পুড়ে যাওয়াসহ একটি গরু দগ্ধ হয়ে মারা গেছে। কাবেলের তিনটি ঘর পুড়ে যায়। এ ছাড়া দুটি গরু ও ১০টি ছাগল অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যায়। ফজল হকের দুটি ঘর, রশিদের দুটি ঘর ও ১০টি ছাগল অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যায়। প্রত্যেকের ঘরে থাকা জিনিসপত্র পুড়ে যায়।
দিনমজুর ফজল হক বলেন, ‘আমাগো সব শ্যাষ। নিঃস্ব হলাম।’ তিনি আরও জানান, ফায়ার সার্ভিসকে বিষয়টি জানালে যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি উপজেলার খাজার ঘাট পর্যন্ত এসে ঘুরে যায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা করতে করতে সব পুড়ে যায়।
স্থানীয় নারী ইউপি সদস্য মিনারা বেগম বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। পরিবারগুলোর সদস্যরা দিনমজুরের কাজ করেন। তাদের জন্য দ্রুত সরকারি সহায়তা প্রয়োজন।’
ইউএনও ফজলে এলাহী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের কাছে শুকনো খাবার এবং টিন কোনোটি নেই। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি।’