জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের তালিকার সঙ্গে সমিল রেখে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সংশোধনী এনেছে পাকিস্তান। সংশোধিত আইন অনুযায়ী জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে নিষিদ্ধ থাকা ব্যক্তি ও সংগঠনগুলো পাকিস্তানেও নিষিদ্ধ বলে বিবেচিত হবে। আইনটি কার্যকর হলে তা লস্কর ই তৈয়বা, জামাত-উদ-দাওয়া এবং হরকত উল মুজাহিদীনের মতো সংগঠনগুলোর জন্য দুঃসংবাদ ডেকে আনবে। জাতিসংঘের তালিকা মেনে আইন সংশোধন করার কারণে এখন পাকিস্তান এই সংগঠনগুলোর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে পারবে।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতিসংঘের তালিকায় ২৭টি জঙ্গি গোষ্ঠীকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট মামনুন হোসেন সন্ত্রাসবিরোধী আইন (এটিএ) ১৯৯৭ এর সংশোধন এবং সংশোধিত এন্টি টেরোরিজম অর্ডিন্যান্স ২০১৮ জারি করার পর দেশজুড়ে জঙ্গিবিরোধী নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১১-বি ও ১১-ইই ধারার সংশোধনী অনুযায়ী জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নিষিদ্ধ তালিকায় থাকা জঙ্গি সংগঠন ও ব্যক্তিরা পাকিস্তানেও নিষিদ্ধ হবে। পাকিস্তানের সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন আগেই জাতিসংঘের নিষিদ্ধ তালিকায় থাকা সংগঠন ও ব্যক্তিদের তহবিল সংগ্রহ নিষিদ্ধ করেছিল। অচিরেই কার্যকরের অপেক্ষায় থাকা সংশোধিত সন্ত্রাসবিরোধী অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী নিষিদ্ধ: সংগঠনগুলোর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে।
প্যারিসে অনুষ্ঠিতব্য ফিনান্সিয়্যাল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ) এর বৈঠকের কয়েকদিন আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হলো। ইসলামাবাদ কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের চাপে এফএটিএফ পাকিস্তানকে নিষিদ্ধ তালিকায় রাখতে পারে। এতে পাকিস্তানের জন্য আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক লেনদেন সংক্রান্ত খরচ বেড়ে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্র আর তাদের মিত্ররা ধারাবাহিক অভিযোগ করে আসছে, আফগান তালেবান ও তাদের মিত্র হাক্কানি নেটওয়ার্ককে পাকিস্তানে ‘নিভৃত আবাস’ গড়ে তোলার সুযোগ করে দিয়েছে ইসলামাবাদ। নতুন বছরের টুইটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মিথ্যাচার ও সন্ত্রাসবাদে মদদের অভিযোগ তুলে পাকিস্তানে সহায়তা বন্ধের হুমকি দেওয়ার পর ৫ জানুয়ারি নিরাপত্তা সহযোগিতা স্থগিতের ঘোষণা দেয় ওয়াশিংটন। অবশ্য, হাক্কানি নেটওয়ার্ক,তালেবান ও লস্কর-ই-তৈয়বার মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে পাকিস্তান তহবিল যুগিয়ে যাচ্ছে বলে ক্রমাগত অভিযোগ করে যাওয়ার পরও দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ছিন্ন হয়নি। এবার ট্রাম্পের ঘোষণার পরও মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার কথা জানিয়েছেন। বলেছেন, সহায়তা স্থগিত সাময়িক। আর এটি আপাতত স্থগিত করা হলেও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলবে যুক্তরাষ্ট্র।