X
শনিবার, ১৮ মে ২০২৪
৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ইরানের ওপর আসছে কঠিনতম মার্কিন নিষেধাজ্ঞা, আপাতত ছাড় পাচ্ছে ৮ দেশ

বিদেশ ডেস্ক
০৩ নভেম্বর ২০১৮, ০৫:১৬আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০১৮, ০৫:২০

২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তির অধীনে বাতিল করা ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করতে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। হোয়াইট হাউস বলছে, ইরানের ওপর জারি করা কঠিনতম নিষেধাজ্ঞা এত যাচ্ছে এটা। এবারের নিষধাজ্ঞার লক্ষ্যবস্তু হবে ইরানের জ্বালানি, সমুদ্র পরিবহন এবং ব্যাংকিং খাত। তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ইরানের তেল আমদানি অব্যাহত রাখা আটটি দেশকে এখনই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনছে না যুক্তরাষ্ট্র। পারমাণবিক চুক্তি বহাল রাখতে চাওয়া ইউরোপীয় দেশগুলো বলছে, ইরানের সঙ্গে ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর বৈধ বাণিজ্যকে সুরক্ষা দেবে তারা। এনিয়ে মে মাস থেকে ইরানের ওপর দ্বিতীয় দফায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। ইরানের ওপর আসছে কঠিনতম মার্কিন নিষেধাজ্ঞা, আপাতত ছাড় পাচ্ছে ৮ দেশ
২০১৫ সালে ওবামা আমলে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তিতে মারাত্মক ত্রুটি আছে দাবি করে গত মে মাসে এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই ঘোষণার পর ধারাবাহিকভাবে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই চুক্তি অনুযায়ী পারমাণবিক কর্মসূচি শিথিল করার বিনিময়ে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা থেকে সুরক্ষা পেয়ে আসছিল ইরান। শুক্রবার এক টুইটার বার্তায় ট্রাম্প বলেন, নিষেধাজ্ঞা আসছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের ওপর এবারে আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এতে ইরানের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তিগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। তবে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে নিরুদ্বিগ্ন তারা।

তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা চুক্তি স্বাক্ষরের পর দাবি করেছিলেন, এই চুক্তির ফলে পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণ থেকে ইরানকে আটকানো যাবে। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া এবং চীনও এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে এসব দেশ এখন বলছে, ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য অব্যাহত রাখতে তারা নতুন একটি পরিশোধ পদ্ধতি চালু করবেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করছেন, এই চুক্তি অগ্রহণযোগ্য কারণ এর মাধ্যমে ইরানের ব্যালেস্টিক মিসাইল কর্মসূচি বন্ধ করা যায়নি। আর সিরিয়া ও ইয়েমেনসহ প্রতিবেশি দেশগুলোতে ইরানের হস্তক্ষেপ বন্ধ করা যায়নি। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ‘মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ’ শুরুর অভিযোগ করেছে ইরান।

আগামী ৫ নভেম্বর (সোমবার) থেকে পুনর্বহাল হবে ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা। এর লক্ষ্যবস্তু হবে, সমুদ্র পরিবহন, জাহাজ নির্মাণ, অর্থনীতি এবং জ্বালানি। ইরানের সাতশোরও বেশি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, জাহাজ ও বিমানকে রাখা হয়েছে নিষেধাজ্ঞার তালিকায়। এর মধ্যে আরও থাকবে বড় বড় ব্যাংক, তেল রফতানিকারক, সমুদ্র পরিবহন কোম্পানিও।

এর আগে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি ইরান থেকে তেল আমদানি করা দেশগুলোকেও নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনার ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তবে এখনই সেই ঘোষণা বাস্তবায়ন করছে না যুক্তরাষ্ট্র। এর ব্যাখ্যা হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও বলেছেন, কয়েকটি দেশ এখনই ইরানের তেল আমদানি বন্ধ করতে পারবে না। এখন তাদের এই শর্তেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে যে তারা ইরানের তেল আমদানি ধাপে ধাপে কমিয়ে দেবে এবং একসময় তা বন্ধ করে দেবে।

ইরানের কাছ থেকে তেল আমদানি করা আট দেশের মধ্যে রয়েছে মার্কিন মিত্র ইতালি, ভারত, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে তুরস্কও এই ছাড় পাচ্ছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, এই নিষেধাজ্ঞার মৌলিক লক্ষ্য হলো ইরানের আচরণে পরিবর্তন আনা। নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ইরানকে ১২টি অবশ্য পালনীয় শর্ত দিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে সন্ত্রাসবাদে সমর্থন ও সিরিয়ায় সামরিক হস্তক্ষেপ বন্ধ এবং পুরোপুরিভাবে পারমাণবিক ও ব্যালেস্টিক মিসাইল কর্মসূচি বাতিল করা।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম কাশেমি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, কিভাবে অর্থনৈতিক বিষয়ের ব্যবস্থাপনা করতে হবে তা ইরান জানে এবং তাদের সক্ষমতা রয়েছে। তিনি বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার মধ্য দিয়ে আমেরিকা তার লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে এমন ভাবনা সুদূর পরাহত এবং এ ধরণের নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে তাদের রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জন করতে পারার কোনও সম্ভাবনা নেই।

/জেজে/
সম্পর্কিত
ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল!
জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্র: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
‘ভেবেছিলাম দেশের সমস্যা ক্ষণস্থায়ী, এখন আরও বেড়েছে’
সর্বশেষ খবর
এক মাসের মধ্যে চালু হচ্ছে এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনায় আহতদের জন্য হাসপাতাল
এক মাসের মধ্যে চালু হচ্ছে এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনায় আহতদের জন্য হাসপাতাল
চলতি বছর সৌদিতে প্রথম বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু
চলতি বছর সৌদিতে প্রথম বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু
কিশোরগঞ্জে নারীর মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করবে র‍্যাব
কিশোরগঞ্জে নারীর মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করবে র‍্যাব
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র রাজপথে মোকাবিলা করতে হবে: পরশ
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র রাজপথে মোকাবিলা করতে হবে: পরশ
সর্বাধিক পঠিত
যাত্রীর জামাকাপড় পুড়িয়ে পাওয়া গেলো সাড়ে চার কোটি টাকার স্বর্ণ
যাত্রীর জামাকাপড় পুড়িয়ে পাওয়া গেলো সাড়ে চার কোটি টাকার স্বর্ণ
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
মামুনুল হক ডিবিতে
মামুনুল হক ডিবিতে
সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের স্থান পরিদর্শন প্রধান বিচারপতির
সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের স্থান পরিদর্শন প্রধান বিচারপতির
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি