যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল কেইন প্যাক্সটন নিউ ইয়র্কের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়, ওই চিকিৎসক টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে টেক্সাসের এক নারীকে গর্ভপাতের ওষুধ সরবরাহ করেছিলেন। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
মামলাটি টেক্সাসের কলিন কাউন্টি জেলা আদালতে দায়ের করা হয়েছে। প্যাক্সটন অভিযোগ করেছেন, নিউ ইয়র্কের নিউ পল্টজ এলাকার চিকিৎসক মার্গারেট কার্পেন্টার মিফেপ্রিস্টোন ও মিসোপ্রোস্টল নামের দুটি ওষুধ টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে টেক্সাসের এক নারীকে সরবরাহ করেছেন। গর্ভপাতের জন্য এদুটি ওষুধ ব্যবহৃত হয়।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অর্ধেকেরও বেশি ঘটনায় ওষুধের মাধ্যমে গর্ভপাত করানো হয়। ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট গর্ভপাত নিষিদ্ধ করার জন্য রাজ্যগুলিকে অনুমতি দেওয়ার পর বিষয়টি আগ্রহের আরও কেন্দ্রে চলে আসে। ইতোমধ্যেই ২০টিরও বেশি রাজ্যে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, ওই নারী গর্ভপাতের ওষুধ গ্রহণের পরে শারীরিক জটিলতার সম্মুখীন হন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে তার সঙ্গী ওষুধগুলির সম্পর্কে জানতে পেরে এই ঘটনা প্রকাশ করেন।
রিপাবলিকান অ্যাটর্নি জেনারেলের পক্ষ থেকে এই ধরনের এটিই প্রথম কোনও পদক্ষেপ। দেশটির রক্ষণশীল এলাকার নাগরিকদের কাছে গর্ভপাতের ওষুধ সরবরাহে বাধা দিতে এটি রিপাবলিকানদের পেশিশক্তির একটি উদাহরণ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নিউ ইয়র্ক হচ্ছে ডেমোক্র্যাট-নেতৃত্বাধীন একটি অঞ্চল। অন্য রাজ্যের রোগীদের গর্ভপাতের ওষুধ সরবরাহ করা চিকিৎসকদের সুরক্ষা দিতে তারা কিছু আইন অনুমোদন করেছে। এই আইন অনুসারে, নিউ ইয়র্কের আইনের আওতায় কর্মরত কোনও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গর্ভপাতের ওষুধ সরবরাহ সংক্রান্ত মামলা, বিচার বা শাস্তি দেওয়ার চেষ্টায় অন্য কোনও রাজ্যকে নিউ ইয়র্ক সহযোগিতা করবে না।
নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমস বলেছেন, অন্য রাজ্যগুলো গর্ভপাতের সেবা প্রদানকারীদের ওপর চড়াও হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে গর্ভপাত সুবিধা রক্ষার জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল হতে পেরে নিউ ইয়র্ক গর্বিত। আমাদের সেবাপ্রদানকারীদেরকে অন্যায়ভাবে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টার বিরুদ্ধে সবসময় সুরক্ষা দেওয়া হবে। ভয়ভীতি দেখিয়ে বা হুমকি দিয়ে আমাদের মাথা নত করানো যাবে না।
এদিকে, প্যাক্সটন দাবি করেছেন, টেক্সাসে চিকিৎসার লাইসেন্স ছাড়াই সেবা দিয়েছেন কার্পেন্টার। এর মাধ্যমে টেক্সাসের গর্ভপাত আইন ও পেশাগত আইন লঙ্ঘন করেছেন তিনি। আইন লঙ্ঘনের জন্য কার্পেন্টারকে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে বলে দাবি করেছেন প্যাক্সটন। এছাড়া, পূর্বের প্রতিটি আইন লঙ্ঘনের জন্য অন্তত এক লাখ মার্কিন ডলার করে অর্থদণ্ডের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
ওই চিকিৎসক অ্যাবরশন কোয়ালিশন ফর টেলিমেডিসিন নামক এক সংগঠনের সদস্য। সংগঠনটি টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে দেশব্যাপী গর্ভপাতের অধিকারকে সমর্থন করে। তিনি হেই জেইন নামে একটি অনলাইন টেলিহেলথ ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছিলেন। তারা গর্ভপাতের ওষুধ সরবরাহ করে।
মামলার বিষয়ে তার পক্ষ থেকে কোনও মন্তব্য পায়নি যায়নি।