জনপ্রিয় টিভি সিরিজ স্কুইড গেইমের প্রায় বাস্তব চিত্রায়ণ দেখা যাচ্ছে চীনে। তবে খেলায় অংশগ্রহণ করতে কাউকে জীবন বাজি রাখতে হচ্ছে না। মাঝে দিয়ে প্রতারকরা প্রচুর পরিমাণে অর্থ আত্মসাৎ করছে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সে বুধবার ৯২৫ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে।
চীনের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থায় হতাশাগ্রস্তদের আর্থিক পুরস্কার, ঋণ পুনর্গঠন ও অন্যান্য সুবিধার লোভ দেখিয়ে সক্রিয় রয়েছে একটি প্রতারক চক্র।
টিভি সিরিজটিতে পুরস্কারের জন্য অংশগ্রহণকারীদের জীবন বাজি রেখে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হতো। তবে চীনের প্রতারক চক্র মানুষকে বিভিন্ন রকম 'আত্মনিয়ন্ত্রণমূলক' চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করার বিনিময়ে অর্থের লোভ দেখিয়ে ফাঁদ পাতছে।
দেশটির আদালত ধরনের কিছু অভিযোগ যাচাই করেছে। কয়েকটি ঘটনায় দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে কয়েক হাজার মার্কিন ডলার জামানত রেখে তাদের একটি রুমে একাকী সময় কাটাতে বলা হতো। নির্দেশনা মেনে নির্ধারিত সময় একা কাটাতে পারলেই লাখ ডলারের ওপর পুরস্কারের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল তাদের। তবে বাংলাদেশের জীনের বাদশার মতোই তারা অর্থ আত্মসাৎ করে হাওয়া হয়ে যায়।
আইসোলেশন চ্যালেঞ্জগুলো সাধারণত টিকটকে প্রচার করা হয়। চলতি বছর অনেক মানুষ এইসব চ্যালেঞ্জে অংশ নিয়েছেন। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়ে যাওয়ার কারণে মানুষের মধ্যে পুঞ্জীভূত হতাশা থেকেই তারা এসবে অংশ নিচ্ছেন। চীনের নীতিনির্ধারকরা দেশের আর্থিক খাতে গতিবৃদ্ধির জন্য নতুন পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে চলেছেন।
ওইসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে আরও রয়েছে, দিনে ১৫ মিনিটের বেশি টয়লেট ব্যবহার না করা ও দিনে দুইবারের বেশি অ্যালার্ম ঘড়ি স্পর্শ না করা।
প্রতারকদের খপ্পরে পড়া ব্যক্তিদের একজন হলেন সান। তিনি ৩০ দিনের একটি আইসোলেশন চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন। তার নির্দেশনায় ধূমপান ও মদ্যপান, ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার, আর কামরার বাইরের কারও সঙ্গে যোগাযোগ নিষিদ্ধ হয়েছিল। তিনি ৭৪০ মার্কিন ডলার রেজিস্ট্রেশন ফি দিয়ে খেলায় অংশগ্রহণ করেন প্রায় ৫০ গুণ পরিমাণ অর্থ পুরস্কার পাওয়ার আশায়।
এই অভিযোগ আদালত পর্যন্ত গড়ালে, সানকে ৭৪০ ডলার ফেরত দেওয়ার জন্য এক আয়োজককে আদেশ দেয় কর্তৃপক্ষ।
আরেক ধরনের জালিয়াতির কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মানুষকে তাদের ঋণ পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিশাল অঙ্কের ফি আদায় করে থাকে একটি গোষ্ঠী। কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে বলেছে, মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রি করতে পারে তারা।
চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির পরিবারগুলোতে ঋণের পরিমাণ নভেম্বর নাগাদ ১১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।