সাবেক জার্মান প্রেসিডেন্ট ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোর্স্ট কোয়েহ্লার মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৮১ বছর। তিনি ২০০৪ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে, ২০০০ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত আইএমএফ এর প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
জার্মানির ফেডেরাল প্রেসিডেনশিয়াল অফিসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, সাময়িক অসুস্থতা ভোগের পর শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দেহত্যাগ করেছেন কোয়েহ্লার।
জার্মানি অধ্যুষিত পোল্যান্ডে ১৯৪৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন কোয়েহ্লার। লুডিউইগসবার্গে স্থায়ীভাবে বসবাসের আগে পরিবারের সঙ্গে শরণার্থী শিবিরে কেটেছে তার শৈশব।
অর্থনীতি বিষয়ে দক্ষতাসম্পন্ন এবং খ্রিষ্টান ডেমোক্র্যাট দলের সদস্য কোয়েহ্লার সাবেক চ্যান্সেলর হেলমুট কোহলের অধীনে উপ অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০ সালে কমিউনিস্ট শাসন পতনের পর পশ্চিম জার্মানের মুদ্রা মার্কের পূর্ব জার্মানিতে প্রচলনের ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি সরকারের বিরুদ্ধেও অবস্থান নিতে দ্বিধা করেননি। ২০০৫ সালে তিনি নতুন নির্বাচনের জন্য পার্লামেন্ট ভেঙে দেন। ২০০৭ সালে তৎকালীন চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেলের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিশ্বায়নের জন্য জার্মানিকে যথাযথভাবে প্রস্তুত করতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।
তবে দ্বিতীয় মেয়াদের এক বছর পর এক রেডিও সাক্ষাৎকারের জেরে সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করেন তিনি। ওই সাক্ষাৎকারে জার্মান সেনাবাহিনীর বিদেশি সামরিক অভিযানের অর্থনৈতিক স্বার্থের বিষয়ে কথা বলেছিলেন তিনি।
তা সত্ত্বেও, প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে তুলনামূলকভাবে কম বিখ্যাত এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব জনপ্রিয়তা জরিপে দ্রুত জার্মানির অন্যতম প্রিয় নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।
তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে দেওয়া বিবৃতিতে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাংক ওয়াল্টার স্টেইনমিয়ার বলেছেন, জাতির সক্ষমতার পাশাপাশি জনগণের সৃজনশীলতা ও উদ্যমের প্রতি গভীর আস্থা রাখতেন কোয়েহ্লার। এই বিশ্বাসের জোরেই এত মানুষের মন জয় করে নিয়েছিলেন তিনি।