সুদানে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ দ্রুততার সঙ্গে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। মিসর তাদের ২৭ সেনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছে। সুদানে সংঘাতে লিপ্ত এক গোষ্ঠী তাদের আটক করেছে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, লিবিয়ার এক সেনাপতি তাদের পছন্দের পক্ষকে অস্ত্র সরবরাহ করার প্রস্তাব দিয়েছেন।
আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং পশ্চিমা কূটনীতিকরা লড়াই বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের আহ্বানে রাজধানী খার্তুমের কিছু অংশে লড়াইয়ের তীব্রতা কমেছে।
এমনকি রাশিয়ার কুখ্যাত ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপও জড়িয়ে পড়েছে। ওয়াগনার প্রধান প্রকাশ্যে প্রস্তাব দিয়েছেন বিবদমান দুই জেনারেলের মধ্যে মধ্যস্থতা করার। কিন্তু মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, তিনি অস্ত্র সরবরাহের কথাও বলেছেন।
ওয়াগনার প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভজেনি প্রিগোজিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘জাতিসংঘ ও অন্যরা সুদানিদের রক্তপাত চায়’। কোনও রসিকতার ধারেকাছে না গিয়ে ইউক্রেনে রাশিয়ার হয়ে নৃশংস সামরিক অভিযানে থাকা প্রিগোজিন বলেছেন, ‘আমি শান্তি চাই’।
আন্তর্জাতিক এসব সক্রিয়তাকে অপ্রত্যাশিত মনে হতে পারে। কিন্তু এতে দেশটির জটিল পরিস্থিতি উঠে আসছে যা দুই জেনারেলের সংঘাত শুরুর আগে থেকেই বিদ্যমান ছিল। বছরের পর বছর ধরে সুদানকে কুক্ষিগত করার চেষ্টা চলমান ছিল।
২০১৯ সালের বিপ্লবে তিন দশকের স্বৈরাচারী প্রেসিডেন্ট ওমর হাসান আল-বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করেন লাখো বিক্ষোভকারী। বশিরের পতনে দেশটিতে একটি উজ্জ্বল ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ উদয় হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এতে আফ্রিকার তৃতীয় বৃহত্তম দেশে বহিরাগত শক্তিগুলোর নিজেদের স্বার্থ হাসিলের নতুন সুযোগও তৈরি করে। কৌশলগতভাবে নীল নদ ও লোহিত সাগরে অবস্থিত দেশটিতে রয়েছে প্রচুর খনিজসম্পদ, কৃষির সম্ভাবনা। সম্প্রতি কয়েক দশকের নিষেধাজ্ঞা ও বিচ্ছিন্নতা থেকে অবমুক্ত হয়েছে দেশটি।
কর্মকর্তারা বলছেন, সুদানের লোহিত সাগরের বন্দরে নিজেদের যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করতে চায়। লোভনীয় স্বর্ণের খনির বিনিময়ে ওয়াগনার বাহিনী সাঁজোয়া যান ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে। ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে লড়াই সুদানের সংঘাতে লিপ্ত একটি পক্ষ লে. জেনারেল মোহামেদ হামদানকে অর্থ দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। মিসর সংঘাতে জড়িত অপর জেনারেল আব্দুল ফাত্তাহ আল-বুরহানকে সমর্থন দিচ্ছে। তারা সমর্থন প্রমাণে সেনা ও যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে আরব বিশ্বের এড়িয়ে যাওয়া ইসরায়েলও সুদানের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি আদায় করতে চাইছে।
আর পশ্চিমা দেশগুলো সবচেয়ে কঠিন ধারণা বাস্তবায়নে জোর দিচ্ছে–গণতন্ত্রে রূপান্তর। একই সঙ্গে তারা আফ্রিকায় চীন ও রাশিয়ার প্রভাব সম্প্রসারণ মোকাবিলারও আশা করছে।
একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিফট ভ্যালি ইনস্টিটিউটের সুদানি বিশ্লেষক মাগদি এল-গিজৌলি বলেন, সবাই সুদানে একটি ভাগ চায় এবং সবার হস্তক্ষেপ দেশটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিল না। স্বার্থের অনেক বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং অনেক বেশি দাবি। এরপর ভঙ্গুর ভারসাম্যের বিস্ফোরণ, যেমনটি দেখা যাচ্ছে।
কয়েকটি পরাশক্তি পক্ষ নেওয়া, এমনকি অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে তারা সুদানের গণতন্ত্রপন্থি শক্তিগুলোকে দুর্বল করেছে এবং খার্তুমের রাজপথে লড়াইরত সামরিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের সহায়তার মাধ্যমে দেশকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে সহযোগিতা করেছে।
গত এক সপ্তাহে চার শতাধিক বেসামরিক নিহত হয়েছে এবং আহতের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়েছে বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ। জেনারেল আল-বুরহানের নেতৃত্বাধীন নিয়মিত সেনাবাহিনী এবং লে. জেনারেল হামদানের নেতৃত্বাধীন আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এই লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েছে।
সুদানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিদেশি শক্তি হলো সংযুক্ত আরব আমিরাত। তেল সমৃদ্ধ পারস্য উপসাগরীয় দেশটি হর্ন অব আফ্রিকায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিজের আক্রমণাত্মকভাবে বাড়িয়েছে। সুদানে দেশটির স্বার্থ কয়েক দশক পুরনো। শুরু হয়েছে বিশাল কৃষি সম্ভাবনা দিয়েছে। আমিরাত নিজেদের খাদ্য সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ নিরসনে সুদানে বাজি ধরেছে। কিন্তু কাতার ইস্যুতে আমিরাতকে সমর্থন জানাতে আল-বশির অস্বীকৃতি জানালে দুই দেশের সম্পর্কে ফাটল ধরে। আল-বশির উৎখাত হওয়ার পর সৌদি আরব ও আমিরাত দেশটিকে ঘুরে দাঁড়াতে ৩০০ কোটি ডলার সহযোগিতার ঘোষণা দেয়।
প্রকাশ্যে সুদানে চলমান ক্ষমতার লড়াইয়ে কোনও পক্ষ নেয়নি আমিরাত এবং দেশটি কোয়াড নামের কূটনৈতিক গ্রুপের সদস্য। এই গ্রুপে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, সৌদি আরব। কিছু দিন আগেও দেশগুলো সুদানকে বেসামরিক ফিরিয়ে আনার জন্য জোর দিয়ে আসছিল।
কিন্তু কর্মকর্তারা বলছেন, একই সময়ে আমিরাত জেনারেল হামাদানকে সামনে আসতে সহযোগিতা করেছে। দারফুরে নৃশংসতার অভিযোগে অভিযুক্ত ভয়ঙ্কর মিলিশিয়া বাহিনীর প্রধান তিনি। দুবাই হয়ে বাণিজ্যের মাধ্যমে নিজের শক্তি সঞ্চয় করেছেন তিনি।
২০১৮ সালে ইয়েমেনে যোদ্ধাদের লড়াইয়ে পাঠানোর জন্য জেনারেল হামদানকে অর্থ দেয় আমিরাত। সুদানি কর্মকর্তারা বলছেন, ইয়েমেনের সংঘাত জেনারেলকে আরও প্রভাবশালী করে তুলেছে। এই বিষয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
সুদানে স্বর্ণ আহরণ ও তা দুবাইয়ে বিক্রি করে অর্থ-বিত্ত গড়েছেন জেনারেল হামদান। ইউক্রেন যুদ্ধের আগে তিনি মস্কোতে রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং সুদানে স্বর্ণের খনির লাইসেন্স দিয়ে ওয়াগনার গ্রুপের সঙ্গে অংশীদারত্ব গড়ে তুলেছেন।
বেশ কয়েকজন পশ্চিমা কর্মকর্তা বলছেন, জেনারেল হামদানের সম্পদের মধ্যে রয়েছে গবাদি পশু, জায়গা-জমি, বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থা। এই অর্থের বেশিরভাগ দুবাইতে রয়েছে। এই অর্থ তাকে আধা সামরিক বাহিনী গড়ে তুলতে সহযোগিতা করেছে। এমনকি তার বাহিনীর এখন সুদানের নিয়মিত সেনাবাহিনীর চেয়ে ভালোমানের সরঞ্জাম রয়েছে। এটি দুই পক্ষের বিরোধের একটি কারণ।
যে তিন রাষ্ট্রপ্রধান প্রকাশ্যে জেনারেল হামদানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তাদের একজন হলে আমিরাতের নেতা শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। সর্বশেষ তারা ফেব্রুয়ারিতে বৈঠক করেছেন। অপর দুই রাষ্ট্রপ্রধান হলে ইরিত্রিয়া ও চাদের।
সুদানের কূটনীতিকরা বলছেন, আমিরাতে জেনারেল হামদানের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র হলেন দেশটির ভাইস-প্রেসিডেন্ট শেখ মনসুর বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। তিনি ব্রিটেনের ম্যানচেস্টার সিটি ফুটবল ক্লাবের মালিক। জেনারেল হামদানের জেলাশহর দারফুরের সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে দীর্ঘ যোগাযোগ রয়েছে।
তবু আমিরাতের অপর প্রিন্সরা জেনারেল হামদানের প্রতিদ্বন্দ্বীর পক্ষ নিয়েছেন। ২০২০ সালে আবুধাবির উপ-শাসক শেখ তাহনুন বিন জায়েদ আল নাহিয়ান ওসামা দাউদে ২২৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছেন। এই সুদানি টাইকুনের সঙ্গে নিয়মিত সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তাদের কৃষি প্রকল্প দেশটির সেরা কৃষিজমির ১ লাক একরজুড়ে বিস্তৃত।
বেশ কয়েকজন বিদেশি কর্মকর্তা বলছেন, গত সপ্তাহে লড়াই শুরু হওয়ার পর আমিরাতের কূটনীতিকরা এটি বন্ধে উঠেপড়ে লেগেছিলেন। এক পশ্চিমা কর্মকর্তা বলেছেন, মনে হচ্ছে আমিরাতিরা ‘ক্রেতার অনুশোচনায়’ ভুগছে।
কিন্তু লড়াই চলমান থাকলেও কিছু অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত ছিল।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, জেনারেল হামদানকে অস্ত্র দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন লিবিয়ার একজন সেনাপতি খলিফা হিফতার। আমিরাত তাকে অস্ত্র ও তহবিল দিয়ে আসছে। এই অস্ত্র হিফতারের নিজের মজুত নাকি আমিরাত থেকে সরবরাহ করা হবে তা স্পষ্ট নয়।
সুদানের সামরিক বিভাজনের অপর পক্ষে রয়েছে দরিদ্র কিন্তু আরও বড় দেশ মিসর।
গত বছর সুদানের অভ্যন্তরে যখন উত্তেজনা বাড়তে থাকে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি প্রকাশ্যে সেনাপ্রধান জেনারেল আল-বুরহানের পক্ষ নিয়েছিলেন। যে গণতন্ত্রপন্থি গণঅভ্যুত্থানে সুদানের প্রেসিডেন্ট উৎখাত হয়েছিলেন তারা সিসির জন্য শত্রুর মতো। কারণ ২০১৩ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখলের পর লৌহকঠিনতার সঙ্গে নিজ দেশে এমন বিক্ষোভ দমন আসছেন তিনি।
এক সময়কার মিলিশিয়া নেতা জেনারেল হামদানকে গভীর সন্দেহ করেন সিসি। তিনি চান, সুদান শাসিত হোক তার মতো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রশিক্ষিত সেনা কর্মকর্তা দ্বারা। এছাড়া ব্যক্তিগত যোগাযোগও রয়েছে: সিসি ও বুরহান একই সামরিক কলেজে পড়াশোনা করেছেন।
এই বছরের শুরুতে মিসর কায়রোতে একটি রাজনৈতিক উদ্যোগ নেয় সুদানের মতবিরোধ অবসানের জন্য। কিন্তু খার্তুমে যেসব বিদেশি কূটনৈতিকরা জেনারেল হামদান ও জেনারেল বুরহানের বিরোধ মেটানোর চেষ্টায় জড়তি ছিলেন তারা বলছেন, মিসর সুদানের সেনাবাহিনীর পক্ষে ও জেনারেল হামদানের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে পুরো উদ্যোগ ভেস্তে দেয়।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-র সাবেক বিশ্লেষক ও বর্তমানে ওয়াশিংটনে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের আফ্রিকা বিশেষজ্ঞ ক্যামেরন হাডসন বলেন, মিসর স্পষ্ট করেছে তারা নিজের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তে মিলিশিয়া নেতাকে বরদাশত করবে না।
সুদানে মিসরের ভূমিকা নিয়ে উত্তেজনাও দুই জেনারেলের লড়াইকে তীব্র করেছে। ১২ এপ্রিল, দুই জেনারেলের মধ্যে লড়াই শুরু হওয়ার তিন দিন আগে জেনারেল হামদানের আরএসএফ যোদ্ধারা মেরোওয়েতে একটি সামরিক ঘাঁটি ঘিরে ফেলে। রাজধানী খার্তুম থেকে ২০০ মাইল উত্তরে ঘাঁটিটির অবস্থান। এখানে মিসরের সেনা ও প্রায় এক ডজন মিসরীয় যুদ্ধবিমান মোতায়েন রয়েছে।
এই ঘটনায় সুদানের সেনাবাহিনী প্রকাশ্যে প্রতিক্রিয়া জানায়। তাদের দাবি, মিসরীয় সেনারা সেখানে প্রশিক্ষণ মহড়ায় অংশ নিচ্ছিল। জেনারেল হামদান হয়ত আশঙ্কা করছিলেন, লড়াই শুরু হলে, তার শত্রু সুদানের সেনাবাহিনীকে বিমান সহযোগিতা দেবে মিসরীয়রা।
যখন লড়াই ছড়িয়ে পড়েছে জেনারেল হামদানের বাহিনী মেরোওয়ে ঘাঁটি থেকে অন্তত ২৭ মিসরীয়কে আটক করে। এই ঘটনায় পশ্চিমা কর্মকর্তারা দ্রুত উত্তেজনা প্রশমনের উদ্যোগ নেন, যাতে করে একটি বিস্তৃত ও আঞ্চলিক সংঘাত এড়ানো যায়।
বৃহস্পতিবার জেনারেল হামদানের বাহিনী আটক মিসরীয়দের হস্তান্তর করলে এই নাটকের অবসান ঘটে। পশ্চিমা কর্মকর্তারা বলছেন, সুদানের সংঘাতে মিসরের জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি এখনও রয়েছে।
গত কয়েক দিনে রাজধানীতে লড়াই তীব্র হলে জেনারেল হামদানের বাহিনী বিমান হামলার মুখে পড়েছে। খার্তুমে যুদ্ধবিমান থেকে রকেট ও বোমা ফেলা হয়েছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, তবে সম্প্রতি আরএসএফ একটি শক্তিশালী অস্ত্র সরবরাহের প্রস্তাব পেয়েছে প্রিগোজিনের কাছ থেকে। এর মধ্যে রয়েছে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র। জেনারেল হামদান এসব অস্ত্র নেওয়ার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেননি। এগুলো আসবে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে থাকা ওয়াগনারের মজুত থেকে।
সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে রাশিয়ার দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক রয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে ওয়াগনার গ্রুপ দেশটিতে তাদের কর্মকাণ্ড বাড়িয়েছে। তারা খনি থেকে স্বর্ণ আহরণ করছে, ইউরেনিয়াম অনুসন্ধান করছে এবং দারফুরে ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহ করছে।
স্বার্থ রয়েছে ইসরায়েলেরও। মার্কিন সমর্থনে ২০২০ সালে সুদানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। গত বছর ইসায়েলের বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের একটি প্রতিনিধিদল সুদান সফর করেছে। এ সময় তারা জেনারেল হামদানসহ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে। আলোচনা সম্পর্কে অবগত পশ্চিমা ও সুদানি কর্মকর্তারা বলছেন, মোসাদের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসদমন ও গোয়েন্দা সহযোগিতার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
সুদানে সবচেয়ে কম সফল বিদেশি প্রকল্প হলো পশ্চিমাদের গণতন্ত্রে রূপান্তর। চলতি মাসে ক্ষমতা ভাগাভাগি করা দুই জেনারেল বেসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার কথা ছিল। কিন্তু এখন এই লক্ষ্য অর্জন ভেস্তে যাওয়ায় সৌদি আরব ও আমিরাতের মতো পশ্চিমা উপসাগরীয় শক্তিকে দিয়ে দুই জেনারেলকে ঠান্ডা করার চেষ্টা করছে।
উপসাগরীয় দেশগুলো সুদানি জেনারেলদের সম্পদকে হাতিয়ার বানিয়ে সুবিধা আদায় করতে পারে ইঙ্গিত করে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের এক বিশেষজ্ঞ অ্যালান বসওয়েল বলেন, তারা কথা না শুনলে কি তারা সম্পদ জব্দ করবে? কেউ-ই সুদানে ব্যর্থ রাষ্ট্র চায় না।
নিউ ইয়র্ক টাইমস অবলম্বনে।