মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, সৌদি আরবের সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। বুধবার (২২ মে) তিনি এই মন্তব্য করেছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
এই চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক জ্বালানি, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা দেবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিকে। ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বৃহত্তর মার্কিন উদ্যোগের অংশ এই চুক্তি।
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের এক শুনানিতে ব্লিঙ্কেন বলেছেন, চুক্তিটি চূড়ান্ত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে হতে পারে। কিন্তু সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য গাজায় শান্ত পরিস্থিতি ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের একটি পথরেখা থাকতে হবে বলে তিনি সতর্ক করেছেন।
তিনি বলেছেন, নীতিগতভাবে চুক্তিগুলো চূড়ান্ত হওয়ার খুব কাছাকাছি রয়েছে। অবশ্যই যখন এগুলো চূড়ান্ত হবে আমরা সেগুলো পর্যালোচনার জন্য কংগ্রেসের কাছে আসব। চূড়ান্ত করতে আমাদের মাত্র কয়েক সপ্তাহ লাগতে পারে।
ব্লিঙ্কেন আরও বলেছেন, স্বাভাবিকীকরণ প্রক্রিয়ার জন্য সৌদি আরব একেবারে স্পষ্ট করে বলেছে তারা দুটি বিষয় চায়: গাজায় শান্তি এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্বাসযোগ্য একটি পথ।
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে সূত্রের বরাতে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছিল, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আনার মার্কিন উদ্যোগ পুনরায় সচল করতে সম্ভাব্য চুক্তির নীতি ও প্রস্তাবের খসড়া করা হয়েছে। ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা ও পরে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে মার্কিন উদ্যোগে ভাটা পড়েছিল।
কিন্তু সৌদি-মার্কিন চুক্তির বড় লক্ষ্য অর্জিত হবে কি-না তা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে। কারণ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যেকোনও উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছেন।
৭ অক্টোবরের পূর্বে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একটি ত্রিপক্ষীয় আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এর আওতায় ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিনিময়ে সৌদি আরবকে মার্কিন নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
কিন্তু এখন বাইডেন প্রশাসন রিয়াদের সঙ্গে একটি পৃথক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। দরকষাকষির মাধ্যমে চুক্তি চূড়ান্ত করতে চায় তারা। ইসরায়েল এতে যুক্ত হবে কি-না সেই সিদ্ধান্ত নেতানিয়াহুর ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
মার্কিন কর্মকর্তাদের আশা, সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঐতিহাসিক সুযোগ হাতছাড়া করবেন না নেতানিয়াহু। কিন্তু ইসরায়েলের সবচেয়ে ডানপন্থি সরকারকে পতনের হাত থেকে রক্ষা করাসহ নেতানিয়াহু যে দেশে চাপে রয়েছেন তা সম্পর্কে সচেতন তারা।
ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ওয়াশিংটন একটি জিম্মি চুক্তির মাধ্যমে গাজায় শান্তি পুনরুদ্ধারে কাজ করছে। যা একটি যুদ্ধবিরতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। এটি হলে ইসরায়েলকে চুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
তিনি বলেছেন, এখন পর্যন্ত এটি ইসরায়েলের জন্য একটি অনুমানমূলক বা তাত্ত্বিক প্রশ্ন ছিল। ধরে নিচ্ছি যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। তখন সেই অনুমানমূলক বা তাত্ত্বিক প্রশ্নটি একটি বাস্তব প্রশ্নে পরিণত হবে। তখন তাদের উত্তর দিতে হবে।