কিউবায় যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে কারাগারে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের (৯/১১) হামলায় সন্দেহভাজন তিন বন্দি স্বীকারোক্তি দিতে রাজি হয়েছে। বুধবার (৩১ জুলাই) মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তিন সন্দেহভাজনের মধ্যে ৯/১১ হামলার মাস্টারমাইন্ড খালিদ শেখ মোহাম্মদ এবং তার দুই সহযোগী রয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
পেন্টাগন স্বীকারোক্তি চুক্তির বিস্তারিত জানায়নি। তবে, এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, এই চুক্তির মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিল করার বিনিময়ে স্বীকারোক্তি দেওয়া হয়েছে। চুক্তির শর্ত সম্পর্কে বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি, তবে জীবন কারাদণ্ডের প্রস্তাব থাকতে পারে বলে জানা গেছে।
মোহাম্মদ গুয়ানতানামো বে কারাগারের সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য বন্দি। ২০০২ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের নির্দেশে ৯/১১ হামলার পর আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সন্দেহভাজনদের আটক করার জন্য এই কারাগার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই কারাগারের বন্দির সংখ্যা এক সময় ৮০০-এ পৌঁছেছিল। বর্তমানে তা ৩০ জন বন্দির জন্য সীমিত।
মোহাম্মদকে বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র এবং পেন্টাগনে হাইজ্যাক করা যাত্রীবাহী বিমান দিয়ে হামলার পরিকল্পনার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে। ৯/১১ হামলায় প্রায় ৩ হাজার মানুষ নিহত এবং যুক্তরাষ্ট্রকে আফগানিস্তানে দুই দশকের যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয়।
মোহাম্মদকে জিজ্ঞাসাবাদে নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনা হচ্ছে। ২০১৪ সালের সিনেট গোয়েন্দা কমিটির একটি রিপোর্টে বলা হয়, মোহাম্মদকে কমপক্ষে ১৮৩ বার ওয়াটারবোর্ডিং করা হয়েছে।
পেন্টাগনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মোহাম্মদের পাশাপাশি আরও দুই বন্দিও স্বীকারোক্তি চুক্তিতে রাজি হয়েছে। তারা হলো: ওয়ালিদ মুহাম্মদ সালিহ মুবারক বিন আত্তাশ এবং মোস্তফা আহমেদ আদাম আল হাওসাওই।
তিনজনকে প্রথমে যৌথভাবে অভিযোগ করা হয় এবং ২০০৮ সালের ৫ জুন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পরে ২০১২ সালের ৫ মে দ্বিতীয়বারের মতো যৌথভাবে অভিযোগ করা হয়।
মার্কিন সিনেট রিপাবলিকান নেতা মিচ ম্যাককনেল স্বীকারোক্তি চুক্তির সমালোচনা করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আলোচনার চেয়ে খারাপ কিছু হতে পারে না।