বিশ্বের শীর্ষ ৫০টি সি-ফুডের তালিকায় স্থান পেয়েছে ভারতের বাঙালি রেসিপি চিংড়ি মালাইকারি। তালিকাটি তৈরি করেছে খাবারের বিশ্বকোষ হিসেবে পরিচিত টেস্ট অ্যাটলাস। তাদের এই তালিকায় ৪.৫ রেটিং পেয়ে ৩১তম অবস্থানে আছে এই ডিশ। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এই খবর জানিয়েছে।
চিংড়ির এই তরকারি শুধু স্বাদেই নয়, ঐতিহ্যেও সমৃদ্ধ। শেফ বৈভব ভার্গবের মতে, চিংড়ি মালাই রেসিপিটি বাংলার সাংস্কৃতিক বিবর্তনের সঙ্গে জটিলভাবে জড়িত। ঐতিহ্যগতভাবে পূর্ববঙ্গের মানুষ নিরামিষ খাবার এবং পেঁয়াজ ও রসুন ছাড়া রান্না করা মাছ পছন্দ করত। এদিকে, পশ্চিমবঙ্গে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রভাব ছিল। এখানেই চিংড়ি মালাই কারি প্রথম রান্না করা হয়।
ভার্গব বলছিলেন, দেশভাগের আগে বাঙালি খাবারে ইলিশের রাজত্ব ছিল। তবে নরম টেক্সচার আর কাটাবিহীন হওয়ায় চিংড়ি ব্রিটিশদের আরও বেশি আকর্ষণ করে। স্বাদের এই পরিবর্তনের কারণে চিংড়ি মালাইয়ের উত্থান হয়, যা ব্রিটিশ অভিজাতদের জন্য উপযুক্ত একটি খাবার হিসেবে বিবেচিত।
চিংড়ি মালাইকারি তৈরির জন্য ধৈর্য এবং পূর্ণ মনোযোগের প্রয়োজন। শেফ ভার্গব দুটি মূল পদ্ধতির উপর জোর দিয়েছেন:
১. ক্যারামেলাইজড অনিয়ন: কাটা পেঁয়াজকে ঘিয়ে হালকা ভেজে রান্না করলে তরকারিতে সেগুলোর মিষ্টি স্বাদ পাওয়া যায়।
২. গ্রেটেড কোকোনাট ম্যাজিক: টাটকা গ্রেট করা নারকেল এবং নারকেলের দুধ এই রেসিপিতে একটি ক্রিমি টেক্সচার এবং সুগন্ধের মাত্রা যোগ করে। চিনির ছোঁয়া এর স্বাদ আরও বাড়িয়ে দেয়।
ক্রিমি নারকেল এবং রসালো চিংড়ি এই রেসিপির অন্যতম উপদান হলোও স্বাদ বাড়ানোর আসল উপাদানটি থাকে চিংড়ির মাথায়। ঐতিহ্যগতভাবে বাঙালিরা এই রেসিপির আসল স্বাদের জন্য চিংড়ির ‘মগজ’ উপভোগ করে থাকেন। শেফ ভার্গব চিংড়ির উন্নত মানের মাথার জন্য ‘বাগদা চিংড়ি’ ব্যবহারের পরামর্শ দেন।