চীনের সর্বাধুনিক সিনক্রোট্রন রেডিয়েশন ফ্যাসিলিটির হাই এনার্জি ফোটন সোর্স বা এইচইপিএস নির্মাণের চূড়ান্ত ধাপে প্রবেশ করেছে। চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সেসের অধীনে ইনস্টিটিউট অব হাই এনার্জি ফিজিক্স, যা এই প্রকল্পের মূল উন্নয়নকারী, বৃহস্পতিবার বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত ২০২৫ চোংকুয়ানছুন ফোরামের সমান্তরাল অধিবেশনে এই অগ্রগতির ঘোষণা দিয়েছে।
সিনক্রোট্রন রেডিয়েশন লাইট সোর্স সাধারণত একটি স্টোরেজ রিং থেকে উৎপন্ন উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বিকিরণ। চীনের এইচইপিএস প্রকল্পটি বিশ্বে সর্বোচ্চ উজ্জ্বলতার চতুর্থ প্রজন্মের সিনক্রোট্রন রেডিয়েশন ফ্যাসিলিটি হতে চলেছে। পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, চিকিৎসা গবেষণা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণায় অত্যন্ত শক্তিশালী এক্স-রে পরীক্ষার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহৃত হবে এটি।
২০১৯ সালের ২৯ জুন বেইজিংয়ের হুয়ারৌতে এই প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রকল্পটি ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
সম্পন্ন হলে এটি সূর্যের তুলনায় এক লক্ষ কোটি গুণ বেশি উজ্জ্বল আলো উৎপন্ন করতে সক্ষম হবে। বিমান, জ্বালানি, পরিবেশ, প্রাণবিজ্ঞান এবং ওষুধ সম্পর্কিত গবেষণার জন্য এটি উন্মুক্ত থাকবে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে এইচইপিএস বিশ্বমানের ৯৩ পিকোমিটার রেডিয়ান ইলেকট্রন বিম এমিটেন্স সূচক অর্জন করেছে, যা ৪০ মিলি-অ্যাম্পিয়ারের বেশি বিম কারেন্ট উৎপাদন করতে সক্ষম। যার মানে হলো এটি উচ্চমানের উজ্জ্বল সিনক্রোট্রন বিকিরণ উৎপন্ন করতে পারছে।
প্রকল্পের পরিচালক প্যান ওয়েইমিন বলেন, প্রকল্পটি একটি বিশেষ প্রযুক্তিগত পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে, যা বুস্টারকে একসঙ্গে অ্যাক্সিলারেটর এবং অ্যাকিউমুলেটর হিসেবে ব্যবহার করে। এর ফলে অবকাঠামোর খরচও কমেছে।
প্রকল্পের অ্যাক্সিলারেটর বিভাগের উপপ্রধান চিয়াও ইয়ি জানান, প্রকল্পের ইনজেকশন ও এক্সট্রাকশন সিস্টেম ইলেকট্রন বিম পুনঃব্যবহারের সুযোগ তৈরি করেছে, যা এটিকে পরিবেশবান্ধব করেছে।
প্রকল্পের প্রথম ধাপে ১৪টি ব্যবহারকারী বিমলাইন এবং একটি পরীক্ষামূলক বিমলাইন নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে হার্ড এক্স-রে ইমেজিং বিমলাইন প্রকৌশল উপকরণের অভ্যন্তরীণ মাইক্রোস্ট্রাকচার গবেষণার জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম।
এইচইপিএস-এর নির্বাহী উপপরিচালক তং ইউহুই বলেন, ‘এই বিমলাইন উন্নত ইনসারশন ডিভাইস ও দীর্ঘ স্যাম্পল-সোর্স দূরত্বের সমন্বয়ে উচ্চতর সামঞ্জস্য, গভীরতর অনুপ্রবেশ, বিস্তৃত দৃষ্টিসীমা এবং উচ্চতর রেজোলিউশন অর্জন করতে সক্ষম, যা প্রচলিত এক্স-রে প্রযুক্তির তুলনায় অনেক বেশি কার্যকর।’
সূত্র: সিএমজি