ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক সামরিক সংঘাতের কয়েক সপ্তাহ পরই তুরস্ক সফর করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। ইস্তাম্বুলে প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। রবিবার (২৫ মে) এরদোয়ানের কার্যালয় জানিয়েছে, দুই দেশ প্রতিরক্ষা, জ্বালানি ও পরিবহণ খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির চেষ্টা চালাবে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, ‘সন্ত্রাসবাদ’ বিরোধী লড়াইয়ে শিক্ষা, গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান এবং প্রযুক্তিগত সহায়তায় সংহতি বৃদ্ধি করাটা তুরস্ক ও পাকিস্তানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে শরিফকে জানিয়েছেন এরদোয়ান।
তুরস্কের বাণিজ্যিক রাজধানী ইস্তাম্বুলে এই বৈঠক এমন সময়ে হলো, যখন সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের সময় ইসলামাবাদকে অস্ত্র সরবরাহ করার অভিযোগে নয়াদিল্লির তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে আঙ্কারা। তুরস্ক অবশ্য পাকিস্তানে অস্ত্র পাঠানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
পেহেলগামে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সশস্ত্র হামলায় ২৫ ভারতীয় ও একজন নেপালি নাগরিক নিহত হওয়ার পর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক হামলা চালায়। ভারত এ হামলার জন্য পাকিস্তানকে পরোক্ষভাবে দায়ী করেছে। যদিও পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এরপর তুরস্ক পাকিস্তানের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে এবং পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুই দেশের মধ্যে ‘সম্পূর্ণ যুদ্ধের’ ঝুঁকির ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে। আঙ্কারা দুই পক্ষকে উত্তেজনা হ্রাস করতে ‘বুদ্ধিমত্তা’ দেখানোর আহ্বান জানায় এবং পেহেলগাম হামলার বিষয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের পাকিস্তানের আহ্বানের প্রতি সমর্থন জানায়।
অবশ্য দুই দেশ গত ১০ মে একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়।
তবে এ ঘটনার পর আঙ্কারার প্রতি ভারতের অসন্তোষের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সম্প্রতি বলেন, ‘সম্পর্ক পারস্পরিক উদ্বেগের প্রতি সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে গড়ে ওঠে।’
এছাড়া ভারতে মুদি দোকান এবং শীর্ষস্থানীয় অনলাইন ফ্যাশন খুচরা বিক্রেতারা তুরস্কের পণ্যের বিরুদ্ধে বয়কট ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে চকোলেট, কফি, জ্যাম, প্রসাধনী সামগ্রী ও পোশাক।
তুরস্ক ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক রয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে এরদোয়ান ইসলামাবাদ সফরকালে দুই দেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে ২৪টি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করে।