X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

শি জিনপিংয়ের মস্কো সফরে ‘উদ্বিগ্ন নজর’ ইউক্রেনের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২০ মার্চ ২০২৩, ১৯:৩৭আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৩, ০৯:২১

চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মস্কো সফরে উদ্বিগ্ন নজর রাখছে ইউক্রেন। কিয়েভের আশঙ্কা, বেইজিং হয়তো শেষ পর্যন্ত রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। যা যুদ্ধের গতিপথ বদলে দেবে।

ইউক্রেন যুদ্ধে নিজেকে নিরপেক্ষ শক্তি হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে চীন। রুশ আক্রমণের নিন্দা জানানো কিংবা রাশিয়াকে বড় ধরনের সহযোগিতা, কোনোটিই করেনি বেইজিং।

চীন জোর দিয়ে বলে আসছে, তারা ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতার নীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আক্রমণের পর রাশিয়াকে কূটনৈতিক সমর্থন দিয়েছে দেশটি।

বেইজিংয়ের ওপর কোনও প্রভাব খাটানোর সুযোগ না থাকায় ইউক্রেন আশা করছে, ভঙ্গুর ভারসাম্য বজায় রাখতে চীনের নেতার ওপর চাপ প্রয়োগ করবে পশ্চিমা মিত্ররা।

কিয়েভভিত্তিক নিউ ইউরোপ থিংক ট্যাংক-এর ফার্স্ট ডেপুটি ডিরেক্টর সের্গেই সোলদকি বলেন, ইউক্রেনের প্রত্যাশা একেবারে কম: পরিস্থিতির যেন আরও অবনতি না হয়।

বিষয়টি সংবেদনশীল হওয়ার কারণে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ শি’র সফর নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে চাইছেন না। সোমবার শুরু হওয়া এই সফর চলবে বুধবার পর্যন্ত। সফরে অন্তত দুইবার বৈঠক করবেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা বলেন, ইউক্রেন সফরটি নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করবে। আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ হলো চীন যেন অপর দেশের আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে।

একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ফেব্রুয়ারিতে অভিযোগ করেছে, রাশিয়ার ঝিমিয়ে পড়া আক্রমণে গতি আনতে অস্ত্র সরবরাহের কথা বিবেচনা করছে চীন।

ফেব্রুয়ারিতে সিআইএ প্রধান উইলিয়াম বার্নস বলেছিলেন, আমরা আত্মবিশ্বাসী যে চীনের নেতারা রাশিয়াকে প্রাণঘাতী অস্ত্র সরবরাহের বিষয়টি বিবেচনা করছে।

সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, এসব অস্ত্রের মধ্যে থাকতে পারে গোলাবারুদ ও ড্রোন। চীন দৃঢ়ভাবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

এখন পর্যন্ত মস্কোকে ড্রোন সরবরাহ করেছে শুধু ইরান। ইউক্রেনীয় জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলার জন্য এসব ড্রোন ব্যবহার করেছে রুশ বাহিনী।

মার্কিন কর্মকর্তারা এর আগে দাবি করেছেন, চীনা কোম্পানিগুলো ইতোমধ্যে রাশিয়াকে প্রাণঘাতী নয় এমন সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক সিনিয়র ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা বলেছেন, চীন যদি রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ শুরু করে তাহলে আমাদের জন্য তা গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে।

চীন ‘সাড়া’ দিচ্ছে না

চীনের পক্ষ থেকে রাশিয়াকে প্রাণঘাতী অস্ত্র সরবরাহের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা পরিষদের সেক্রেটারি ওলেক্সি ডানিলভ। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার অপরাধের সঙ্গী হবে না চীন। 

সোমবার মস্কো পৌঁছেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট। ছবি: এপি

ইউক্রেনীয় বিশ্লেষক ইউরি পইতাও এমন সরবরাহের সম্ভাবনা খুব একটা দেখছেন না। বর্তমানে তাইপেভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি রিসার্চ-এর ভিজিটিং রিসার্চ ফেলো হিসেবে কর্মরত এই বিশ্লেষক বলেন, চীনা ট্যাংক, আকাশযান বা মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম সরবরাহের আশঙ্কা করছি না।

এই মুহূর্তে চীন নিজেকে সম্ভাব্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে হাজির করতে চাইছে। ফেব্রুয়ারিতে বেইজিং ১২ দফা প্রস্তাব তুলে ধরে মস্কো ও কিয়েভকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে।

তবে ইউক্রেন ও পশ্চিমা কর্মকর্তারা অভিযোগ করছেন, প্রস্তাবে ইউক্রেনের দখলকৃত ভূখণ্ড থেকে রুশ সেনাদের প্রত্যাহারের বিষয়ে কিছু ছিল না। চীন অবশ্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের ‘একতরফা’ নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেছে।

পশ্চিমা দেশগুলো চীনের ১২ দফা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, চীনের সঙ্গে আমাদের কাজ করা প্রয়োজন। দৃশ্যত তিনি চীনকে বিরক্ত করতে চাইছেন না।

ইউক্রেন ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বিচ্ছিন্ন আলোচনা হলেও যুদ্ধ শুরুর পর এখন পর্যন্ত চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাননি জেলেনস্কি। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট প্রকাশ্যে বলেছেন, শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তিনি আলোচনা করতে চান।

পইতা বলেন, আগস্ট থেকে শি’র সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন জেলেনস্কি। কিন্তু চীন সাড়া দিচ্ছে না।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, মস্কো সফরের পর জেলেনস্কির সঙ্গে এমন আলোচনায় অংশ নিতে পারেন চীনা প্রেসিডেন্ট। তবে বড় কোনও অগ্রগতি ঘটবে না বলে মনে করছেন পইতা। তার মতে, অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিকভাবে চীনের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ রাশিয়া। ইউক্রেনের চেয়ে তাদের কাছে রাশিয়ার গুরুত্ব বেশি।

ফার্স্ট ডেপুটি ডিরেক্টর সের্গেই সোলদকি বলেন, চীন নিয়ে কিয়েভ প্রকৃতপক্ষে কোনও নীতি গড়ে তোলেনি। দুই বছর ধরে বেইজিংয়ে তাদের কোনও রাষ্ট্রদূত নেই। ফলে শিগগিরই চীন আমাদের কথা শুনবে, এমনটি আশা করার কোনও অর্থ হয় না।

সূত্র: এএফপি

/এএ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
লোকসভা নির্বাচন: রাস্তার দাবিতে ভোট বয়কট করলেন গ্রামবাসী
মুখ থুবড়ে পড়েছে ইউক্রেনের অস্ত্র খাত
লোকসভা নির্বাচন: মণিপুরে ভোটকেন্দ্রে সংঘর্ষ
সর্বশেষ খবর
শিশু হাসপাতালে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না: ফায়ার সার্ভিস
শিশু হাসপাতালে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না: ফায়ার সার্ভিস
ভোট দিতে এসে কেউ উৎফুল্ল, অনেকেই ক্ষুব্ধ!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনভোট দিতে এসে কেউ উৎফুল্ল, অনেকেই ক্ষুব্ধ!
বায়ার্নের নজরে থাকা নাগেলসমানের সঙ্গে জার্মানির নতুন চুক্তি
বায়ার্নের নজরে থাকা নাগেলসমানের সঙ্গে জার্মানির নতুন চুক্তি
নড়াইলে ‘সুলতান মেলা’ উপলক্ষে আর্ট ক্যাম্প
নড়াইলে ‘সুলতান মেলা’ উপলক্ষে আর্ট ক্যাম্প
সর্বাধিক পঠিত
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!