X
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
২১ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতে জাতীয় দলের তকমা হারাচ্ছে কংগ্রেস?

রক্তিম দাশ, কলকাতা
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২০:৪৪আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২২:০৬

আঞ্চলিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে বারবার বিজেপিবিরোধী জোট গঠনে ব্যর্থ কংগ্রেস কয়েক দশক ধরে ভারতের জাতীয় দল হিসেবে নিজের অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তুলেছে। সম্প্রতি ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স (ইন্ডিয়া জোট) করতে গিয়ে আরও একবার বিপর্যয়ের মুখে শতাব্দী প্রাচীন দলটি। চব্বিশের লোকসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে, ইন্ডিয়া জোটে টিকে থাকা দলগুলোর সঙ্গে আসন ভাগাভাগির সমীকরণে আদৌ সিলমোহর পড়বে কিনা তার কোনও নিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে না। যার ফলে যৌথ প্রচার, নির্বাচনি কৌশলের জন্য যে সাংগঠনিক কাঠামোর দরকার, তা এখন বিশ বাও জলে।

বিহারভিত্তিক জনতা দল (ইউনাইটেড) এবং পশ্চিমবঙ্গভিত্তিক তৃণমূল কংগ্রেস আনুষ্ঠানিকভাবে বিরোধী জোট ছেড়ে দিয়েছে। আম আদমি পার্টি (আপ)-এর পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান ঘোষণা করেছেন, তার দল রাজ্যে একা লড়বে এবং কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করবে না। যদিও দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে মানের অবস্থানকে সমর্থন করেনি। এর মানে মোট ৯৫টি আসন ইতোমধ্যে জোটের বাইরে। যদি আম আদমি পার্টির সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল দিল্লিতেও দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে মোট ১০২টি আসন থাকবে জোটের বাইরে।

জম্মু ও কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহও প্রকাশ্যে বলেছেন, ‘আসন ভাগাভাগির ফরমুলা নিয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত না নিলে কিছু বিরোধী দল আলাদা জোট গঠন করতে পারে।’

রাজনৈতিক সমালোচকদের মতে, প্রথম থেকেই এই জোট ছিল নেতৃত্বহীন। এই জোটে নেতৃত্বের ভূমিকা গ্রহণ করার বা ঐক্য ও সংহতির স্বার্থে কিছু স্বার্থ বিসর্জন দিতে অনুপ্রাণিত করার বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গি কোনও দলেরই ছিল না। ‘আমরা কোনও প্রধানমন্ত্রীর প্রজেক্ট না করেই লড়াই করবো’—এই ঘোষণা আসলে কঠিন বাস্তবতা থেকে এসেছে, তা স্পষ্ট। এই জোটের প্রতিটি দলের সুপ্রিমোই প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হতে আগ্রহী। কারণ, কারোরই এককভাবে নিজস্ব কোনও ক্যারিশমা বা জাতীয় পর্যায়ে গ্রহণযোগ্যতা নেই।

জোটের প্রায় শরিকই আঞ্চলিক দল–যারা কংগ্রেসের সঙ্গে লড়াই করে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করেছে। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করা তাদের জন্য সঠিক রাজনীতি হবে না। কারণ এক, মূল সমর্থকরা তাদের কংগ্রেসের পরিবর্তে বেছে নিয়েছিল। দুই, এটি তাদের নিজস্ব ভোটব্যাংক এলাকায় পুনরায় জমি ফিরে পাওয়ার জন্য দুর্বল কংগ্রেসকে জায়গা দেওয়ার মতো হবে। এই আঞ্চলিক দলগুলোর বেশিরভাগই ভবিষ্যতে তাদের রাজ্যের সীমানা ছাড়িয়ে নিজেদের ভিত্তি প্রসারিত করতে চায়। তাই প্রতিটি দল অন্য শরিকদের ভোটের দিকে নজর রাখলেও কেউই তাদের নিজ রাজ্যে তাদের মূল ভোটারদের ভাগ করতে ইচ্ছুক নয়। কংগ্রেস যে তাদের ভোট দখল করার পরিকল্পনা করছে, দলটির জাতীয় মর্যাদা পুনরুদ্ধার করবে ও প্রধানমন্ত্রী পদের দাবি করবে, তা জোটের সব শরিকের কাছে সর্বদা স্পষ্ট ভয়ের ছিল। এই ভয়ের কথা জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর জেডি (ইউ) স্পষ্ট করে বলেছিল। শরিকরা প্রকাশ্যে আসন ভাগাভাগির জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করছে। বিরোধী জোটের নেতৃত্বকে ‘হাইজ্যাক’ করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগও প্রকাশ্যে এসেছে। জোটের মধ্যে আসন ভাগাভাগি আলোচনাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে শিথিলতার জন্য কংগ্রেস সমালোচনার মুখে পড়েছে।

জেডি (ইউ) নেতা কেসি ত্যাগী অভিযোগ করে বলেছেন, নীতীশ ও অখিলেশ বারবার আসন ভাগাভাগি আলোচনায় বিলম্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কংগ্রেস বলেছে হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা ও কর্ণাটকে কোনও আসন ভাগাভাগি হবে না। তারা বিজেপিকে সব আসন জিততে দেবে, কিন্তু আমাদের কোনও আসন দেবে না। কিন্তু বিহার, ইউপি, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ এবং তামিলনাড়ুতে তাদের শক্তির অনুপাতে আসন চাইবে। তারা ইউপিতে ১৫টি, বিহারে ১০টি, মহারাষ্ট্রে ২০টি, পশ্চিমবঙ্গে ৮টি আসন চায়। তারা ষড়যন্ত্র করে আমাদের সব অ-কংগ্রেস দলগুলোকে শেষ করতে চেয়েছিল। কংগ্রেসের সামনে আজ প্রশ্ন টিকে থাকার। বেঁচে থাকার পরিবর্তে তারা পুনরুজ্জীবনের আশা করছে। তাদের বেঁচে থাকার জন্য ত্যাগ স্বীকার করা উচিত ছিল। প্রথম দিন থেকে কংগ্রেসের মনোভাব খুব ইতিবাচক ছিল না। কংগ্রেসের একগুঁয়ে মনোভাবের কারণে জোট ভাঙছে। কংগ্রেসের মধ্যে একটি গ্রুপ রয়েছে, যা জোটের নেতৃত্ব দখল করতে চায়।’

অন্যদিকে, রাহুল গান্ধীর ‘ন্যায় যাত্রা’ জোটের শরিকদের বিরক্ত করেছে, তার নিজের দল বা জোটের জন্য তিনি কিছুই অর্জন করতে পারেনি। এমনকি ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ রাজ্যগুলোতেও একক শো দেখাতে গিয়ে, জোটের শাসক দলগুলোকে না জানিয়ে কংগ্রেস কেবল জোটের রাজনীতিতে নিজের সংকীর্ণ মনোভাবকে তুলে ধরেছে। তামিলনাড়ুর শাসক দল ডিএমকেও প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছে, কংগ্রেস শরিকদের স্বার্থ উপেক্ষা করে কেবল তাদের আসনের কথা মাথায় রেখেছে।

তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তিনি কংগ্রেসকে দুটি আসনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন এই শর্তে যে তারা বামপন্থিদের সঙ্গ ছাড়বে। কংগ্রেস এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। মমতা বামেদের বিরুদ্ধে তার রাজনৈতিক যাত্রায় বিভিন্ন সময়ে বিজেপির পাশাপাশি কংগ্রেসের সমর্থন নিয়েছিলেন। সেই পটভূমিতে মমতা তার নিজের রাজ্যে বামপন্থিদের সঙ্গে জোট করবেন বলে আশা করা যায় না। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করা আজ মমতার জন্য একটি রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা, বিশেষ করে গত কয়েক বছরে তিনি যে ধরনের রাজনীতি গ্রহণ করেছেন। পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস ও বামেরা দীর্ঘদিন ধরেই স্বাভাবিক মিত্র। কংগ্রেস গত তিনটি লোকসভা নির্বাচনে ধারাবাহিকভাবে ভোট শতাংশ হারিয়েছে। এমনকি গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও বামদের সঙ্গে জোট করেছে। বাম, কংগ্রেস এবং ভারতীয় সেক্যুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর সম্মিলিত ভোট বেড়ে হয়েছে ১০ শতাংশ। পরের বিধানসভা নির্বাচনের আর মাত্র দুই বছর বাকি, তাই মমতা এই জোটের জন্য আসন ছেড়ে তাদের নতুন করে জমি তৈরি করতে দিতে নারাজ।

উত্তরপ্রদেশে প্রধান বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টি (এসপি) অন্য রাজ্যে আসন পাওয়ার লক্ষ্যে এই জোটে যুক্ত হয়েছিল। কিন্তু মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় কংগ্রেসসহ বিরোধীদের হতাশাজনক ফলে তাদের আশা ভঙ্গ হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসও এসপির সঙ্গে আসন সমঝোতার আশা করেছিল। কিন্তু কোনও আলোচনা ছাড়াই অখিলেশ কংগ্রেসের জন্য ১১টি লোকসভা আসন বরাদ্দের ঘোষণা করেছে। এই একতরফা সিদ্ধান্ত কংগ্রেসকে হতাশ করেছে। কংগ্রেস আমেথি, রায়বেরেলি, ফতেহপুর সিক্রি বা আগ্রা, বুলন্দশহর, নয়ডা, গাজিয়াবাদ, সাহারানপুর, কানপুর এবং মহারাজগঞ্জসহ ২৫টি আসনের একটি তালিকা তৈরি করেছে বলে জানা গেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস যা করেছে তারই জবাব দিয়েছেন অখিলেশ। কংগ্রেস অখিলেশকে আরও আসন বরাদ্দ করার জন্য বিএসপি কার্ডের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু বিএসপি প্রধান মায়াবতী এককভাবে লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছেন। এখন এসপির সঙ্গে জোট গঠন বা এককভাবে লড়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই কংগ্রেসের। বর্তমান পরিস্থিতিতে, সোনিয়া তার ঘাঁটি রায়বেরেলিকে রক্ষা করার জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। রায়বেরেলিকে নিজেদের রাখতে কংগ্রেস যেকোনও ধরনের আলোচনায় যেতে পারে। উনিশের লোকসভায় কংগ্রেস উত্তরপ্রদেশে মাত্র চারটি আসন–কানপুর আরবান, আমেথি, রায়বেরেলি ও ফতেহপুর সিক্রিতে সরাসরি লড়াই করেছিল। এর মধ্যে রায়বরেলিতে জয়ী হলেও অন্য তিনটি আসনে দ্বিতীয় হয়েছিল। ফতেহপুর সিক্রি আসনে কংগ্রেস রাজ বব্বরকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করালেও তিনি জামানত হারান। ২০২২ সালের বিধানসভায় অবস্থান আরও খারাপ হয়েছে কংগ্রেসের। তারা  বিজেপি ও এসপির পরে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। আমেথিতে কংগ্রেস চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে ও রায়বেরেলির তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রে জামানত হারিয়েছে।

মহারাষ্ট্রে ৪৮টি লোকসভা আসন রয়েছে। এখানে কংগ্রেস এনসিপি ও শিবসেনা (ইউবিটি)-এর সঙ্গে জোট করতে চাইছে। কিন্তু এই ভাবনা সম্প্রতি বড় ধাক্কা খেয়েছে কংগ্রেসের হেভিওয়েট নেতা মিলিন্দ দেওরা কংগ্রেস ছেড়ে শিবসেনায় যোগ দেওয়ায়। মিলিন্দ দেওরা দক্ষিণ মুম্বাই থেকে দুবার কংগ্রেস সাংসদ ছিলেন। এনসিপি ও শিবসেনা (ইউবিটি) কংগ্রেসের কাছে আরও আসন দাবি করবে বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ গত দুটি লোকসভা ভোটের খারাপ ফল। ২০১৪ সালে, কংগ্রেস মহারাষ্ট্রে ২৬টি আসনে লড়াই করেছিল এবং মাত্র ২টি জিতেছিল এবং ২০১৯ সালে ২৫টিতে লড়াই করে মাত্র একটি আসনে জিতেছিল।

পাঞ্জাবে ১৩টি লোকসভা আসন। কংগ্রেস সাংরুর (জামানত হারিয়েছিল) এবং জলন্ধর আসনের পরপর দুটি উপ-নির্বাচনে খারাপ পারফর্ম করেছে। এই কারণে, আম আদমি পার্টি কংগ্রেসকে আসন দিতে আগ্রহী নয়।

একইভাবে কেরালায় ২০টি লোকসভা আসন। বামফ্রন্ট ক্ষমতায়, কংগ্রেস বিরোধী অবস্থানে রয়েছে। উনিশের লোকসভায় আইইউএমএল দুটি আসনে লড়াই করেছিল ও জিতেছিল। আইইউএমএল কেরালায় আরও আসন দাবি করতে পারে, যা রাজ্যে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ জোটের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। সিপিআই রাহুল গান্ধীকে তাদের ওয়ানাড় আসন ছেড়ে দিয়ে উত্তর ভারতে একটি আসন থেকে লড়াই করার জন্য চাপ দিচ্ছে। তামিলনাড়ুতে কংগ্রেস ২০১৯ সালে ৯টি আসনে লড়াই করেছিল এবং ৮টি জিতেছিল। কিন্তু এবার, ডিএমকে কংগ্রেসকে কম আসনে লড়াই করতে বলতে পারে। কারণ কংগ্রেস সারাদেশে এখন শক্তি হারিয়েছে।

/এএ/
সম্পর্কিত
রাশিয়ার ‘ওয়ান্টেড’ তালিকায় জেলেনস্কি
সম্পূর্ণ দুর্ভিক্ষের কবলে উত্তর গাজা: ডব্লিউএফপি প্রধান
কায়রোতে গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা জোরদার
সর্বশেষ খবর
রাশিয়ার ‘ওয়ান্টেড’ তালিকায় জেলেনস্কি
রাশিয়ার ‘ওয়ান্টেড’ তালিকায় জেলেনস্কি
সম্পূর্ণ দুর্ভিক্ষের কবলে উত্তর গাজা: ডব্লিউএফপি প্রধান
সম্পূর্ণ দুর্ভিক্ষের কবলে উত্তর গাজা: ডব্লিউএফপি প্রধান
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীর মুখেই কুলুপ
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীর মুখেই কুলুপ
চিনি-লবণ মিশিয়ে নকল প্যাকেটে স্যালাইন তৈরি, গ্রেফতার ৩
চিনি-লবণ মিশিয়ে নকল প্যাকেটে স্যালাইন তৈরি, গ্রেফতার ৩
সর্বাধিক পঠিত
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
মিল্টনের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিতদের এখন কী হবে
মিল্টনের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিতদের এখন কী হবে
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
বিসিএসে সফলতায় এগিয়ে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা
বিসিএসে সফলতায় এগিয়ে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা
চট্টগ্রামে যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
চট্টগ্রামে যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে