পেহেলগামে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রবিবার (৪ মে) ভারতের এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিংহ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বলে জানিয়েছে সূত্র। এই বৈঠকটি এমন এক সময়ে হলো যখন এর আগের দিনই নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল দিনেশ কে ত্রিপাঠীর সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছিলেন মোদি। ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
যদিও এই সাক্ষাতের কোনও সরকারি বিবৃতি গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়নি। তবে ২২ এপ্রিলের হামলার পর ভারতের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া নিয়ে চলমান আলোচনা হিসেবেই বৈঠকটিকে দেখা হচ্ছে। ওই দিন বন্দুকধারীরা পেহেলগামে পর্যটকদের একটি দলের ওপর গুলি চালায়। নিহতদের সবাই বেসামরিক নাগরিক ছিলেন। তাদের অনেকে বিভিন্ন রাজ্য থেকে বসন্তকালীন ভ্রমণে দক্ষিণ কাশ্মীরের এই অঞ্চলে গিয়েছিলেন। এটি সাম্প্রতিক বছরগুলিতে কাশ্মীরে বেসামরিকদের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা।
এরপরপরই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। পাকিস্তানও পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী চলতি সপ্তাহের শুরুতে অনুষ্ঠিত একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে প্রতিরক্ষা নেতৃত্বকে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন যে, ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর হাতে ‘সম্পূর্ণ কার্যকরী স্বাধীনতা’ রয়েছে—কবে, কীভাবে এবং কোথায় এই হামলার জবাব দেওয়া হবে, তা নির্ধারণ করার জন্য। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান এবং সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর প্রধানরা।
পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের দু’দিন পর প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছিলেন, ‘লড়াইকে পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে’ এবং অপরাধীদের ‘কল্পনার বাইরে শাস্তি’ দেওয়া হবে। তার এই বক্তব্যকে পাকিস্তানকে উদ্দেশ করে সরাসরি বার্তা হিসেবে দেখা হয়।
ইতিহাস বলছে, সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত সবসময়ই কঠোর জবাব দিয়েছে। ২০১৬ সালে উরি হামলার পর নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে জঙ্গি ঘাঁটিতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছিল ভারত। ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর বালাকোটে বিমান হানা চালানো হয়। বালাকোট অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল ভারতীয় বিমানবাহিনী।
পহেলগাম হামলার পর কূটনৈতিক ও কৌশলগত নানা পদক্ষেপে পাকিস্তানের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে ভারত। এর মধ্যে একটি হলো, ভারত-পাকিস্তান নদীর পানিবণ্টন চুক্তি কিছু ধারাকে স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত।
যদিও প্রধানমন্ত্রী ও শীর্ষ কর্মকর্তারা কঠোর বার্তা দিচ্ছেন, তবুও এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া বা তার সময়সূচি ঘোষণা করা হয়নি।