পেজার এবং ওয়াকি-টকি বিস্ফোরণকে ‘সন্ত্রাসী কাজ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ। এই হামলাকে লেবাননের জনগণ ও দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা বলেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি। তার এই ভাষণ চলার সময় দক্ষিণ লেবাননে নতুন করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
অজ্ঞাত স্থান থেকে টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে নাসরাল্লাহ আরও বলেন, এই আক্রমণ আমাদের সমস্ত সীমা অতিক্রম করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘কোন সন্দেহ নেই যে আমরা একটি বড় নিরাপত্তা ও সামরিক আঘাতের শিকার হয়েছি যা প্রতিরোধের এবং লেবাননের ইতিহাসে নজিরবিহীন’।
বৈশিষ্ট্যহীন লাল পটভূমির সামনে প্রথাগত কালো পাগড়ি পরে টেলিভিশনে ভাষণ দেন নাসরাল্লাহ। ভাষণে তিনি আর ও বলেন, ইসরায়েলি হামলায় পিছু হটবে না হিজবুল্লাহ। শত্রু নেতানিয়াহু ও গ্যালান্টকে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেছেন, ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লেবানন এখানেই থামবে না। গাজা ও পশ্চিম তীরের মানুষকে সমর্থন দিয়ে যাবে লেবাননের প্রতিরোধী বাহিনী।’
এদিকে নাসরুল্লাহর ভাষণটি যখন সম্প্রচারিত হচ্ছিল, ঠিক তখনই বৈরুতে হামলা চালাচ্ছিল ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান। এই হামলার দায় স্বীকার করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তাদের যুদ্ধবিমানগুলো দক্ষিণ লেবাননে রাতারাতি হামলা চালিয়েছে। হামলা চালাতে গিয়ে তাদের দুই সেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, দুপুরের পর সীমান্ত এলাকায় বিমান হামলা পুনরায় শুরু হয়েছে।
গত মঙ্গল ও বুধবার লেবাননে দুই দফার হামলায় পেজার, ওয়াকি-টকি ও স্মার্টফোনের মতো যন্ত্র বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। হামলায় ৩৭ জন নিহত ও তিন হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। হিজবুল্লাহর জন্য একটি বড় ধাক্কা। এতে তাদের যোগাযোগব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়েছে। তবে এ হামলা শুধু হিজবুল্লাহর জন্যই নয়, দেশটির সাধারণ নাগরিক ও দেশের বাইরে সবার জন্য অত্যন্ত ভীতিকর হয়ে উঠেছে।
এই হামলার বিষয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করেনি ইসরায়েল। নিরাপত্তা সূত্রের মতে, এই হামলাগুলো সম্ভবত ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা-মোসাদ চালিয়েছে, যাদের বিদেশের মাটিতে জটিল হামলা চালানোর দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।