সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের মানবিজের উপকণ্ঠে একটি গাড়ি বোমা হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত ও আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। সোমবারের এই বিস্ফোরণে হতাহতের এই তথ্য নিশ্চিত করেছে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্যালয়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
এই বিস্ফোরণটি গত ডিসেম্বরে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর দেশটিতে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা। এই ঘটনাটি গত এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে এই অঞ্চলে সপ্তম গাড়ি বোমা হামলা। এই এলাকায় তুরস্ক-সমর্থিত বাহিনী ও কুর্দি-নেতৃত্বাধীন একটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে।
সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার কার্যালয় এই ‘সন্ত্রাসী’ হামলার নিন্দা জানিয়েছে এবং বলেছে যে, তারা এই ঘটনার জন্য দায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করবে।
প্রেসিডেন্ট কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, এই অপরাধের জন্য দায়ীদের সবচেয়ে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে, যাতে সিরিয়ার নিরাপত্তা বা জনগণের ক্ষতি করার কথা ভাবা যে কারও জন্য একটি উদাহরণ হয়ে ওঠে।
হাসপাতাল কর্মীরা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন, রাতে একটি গাড়ির কাছে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে, যেখানে বেশিরভাগ কৃষি শ্রমিক ছিলেন। হোয়াইট হেলমেটস নামে পরিচিত সিরিয়ান সিভিল ডিফেন্স বলেছে, এই হামলায় অন্তত ১১ জন নারী ও তিন শিশু নিহত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত কোনও গোষ্ঠী এই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেনি।
শনিবার শহরটিতে একটি গাড়ি বোমা হামলায় চারজন নিহত ও অপর নয়জন আহত হয়েছেন বলে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা জানিয়েছে।
মানবিজের একজন কর্মী ও সাংবাদিক জামিল আল-সাইয়েদ অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন, বারবার হামলার কারণে বাসিন্দাদের আরও সতর্ক হতে বাধ্য করা হয়েছে।
২০১১ সালে শুরু হওয়া সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময়কালে তুরস্কের সীমান্তের দক্ষিণে ও আলেপ্পোর পূর্বে অবস্থিত মানবিজের নিয়ন্ত্রণ বহুবার পরিবর্তিত হয়েছে।
গত ডিসেম্বরে তুরস্ক-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো মার্কিন-সমর্থিত কুর্দি-নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) থেকে এটি দখল করে। গোষ্ঠীটি সোমবারের বোমা হামলার নিন্দা জানিয়েছে। এসডিএফ প্রমাণ ছাড়াই বলেছে যে, তুরস্কের ‘ভাড়াটে সেনারা’ এই হামলার পিছনে রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাটো মিত্র তুরস্ক এসডিএফকে পিপলস প্রোটেকশন ইউনিটস (ওয়াইপিজি) ও কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) শাখা হিসেবে দেখে। ওয়াইপিজি ও পিকেকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ঘোষণা করেছে তুরস্ক।