গাজায় ত্রাণ বিতরণে ইসরায়েলের উদ্যোগে নেওয়া যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত একটি বেসরকারি মানবিক সংস্থার প্রধান জ্যাক উড পদত্যাগ করেছেন। রবিবার (২৫ মে) পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
গত দুই মাস ধরে গাজা হিউমেনিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন জ্যাক উড। পদত্যাগপত্রে তিনি বলেন, ‘এই সংস্থা মানবতা, নিরপেক্ষতা, পক্ষপাতহীনতা এবং স্বাধীনতার নীতিগুলো মেনে চলতে পারছে না, যা তিনি কখনও পরিত্যাগ করবেন না।’
উডের বিবৃতিতে বিস্তারিত কিছু উল্লেখ করা হয়নি। পদত্যাগ বিষয়ে রয়টার্সের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়াও দেননি সাবেক এই মার্কিন মেরিন কর্মকর্তা।
এক বিবৃতিতে ফাউন্ডেশনের পরিচালনা পর্ষদ বলেছে, উডের পদত্যাগে তারা হতাশ, তবে গাজা উপত্যকার পুরো জনগোষ্ঠীর কাছে সহায়তা পৌঁছানোর প্রচেষ্টা থেকে তারা সরে আসবে না।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের ট্রাকগুলো প্রস্তুত এবং রওনা দেওয়ার জন্য তৈরি। সোমবার থেকে সংস্থাটি সরাসরি গাজায় ত্রাণ সরবরাহ শুরু করবে এবং সপ্তাহ শেষের আগেই ১০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনির কাছে পৌঁছাবে বলে জানায় তারা।
‘আমরা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে গাজার পূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সেবা দিতে দ্রুত সক্ষমতা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছি।’
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মার্চের শুরু থেকে জারি থাকা অবরোধ কিছুটা শিথিল করার পর সাম্প্রতিক দিনগুলোতে গাজায় সীমিত পরিমাণে মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে শুরু করেছে।
একটি বৈশ্বিক ক্ষুধা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সতর্ক করেছে, গাজার এক চতুর্থাংশ জনগোষ্ঠী, অর্থাৎ পাঁচ লাখ মানুষ অনাহারের ঝুঁকিতে রয়েছে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিষ্ঠিত গাজা হিউমেনিটারিয়ান ফাউন্ডেশন জাতিসংঘের কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছে। জাতিসংঘ কর্মকর্তারা বলেছেন, সংস্থাটির ত্রাণ বিতরণ পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক স্থানান্তর এবং আরও সহিংসতা ডেকে আনবে।
এই প্রকল্পটি ইসরায়েলের উদ্যোগে শুরু হয় এবং এতে জাতিসংঘ ও ঐতিহ্যগত ত্রাণ সংস্থাগুলোর পরিবর্তে বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে ত্রাণ পরিবহনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই ত্রাণ বিতরণ সীমিত সংখ্যক তথাকথিত নিরাপদ কেন্দ্রের মাধ্যমে গাজার দক্ষিণে পরিচালিত হওয়ার কথা।
এই মাসের শুরুর দিকে উড ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষকে এক চিঠিতে জানান, ফাউন্ডেশন কোনও ত্রাণপ্রাপকের ব্যক্তিগত শনাক্তযোগ্য তথ্য ইসরায়েলের সঙ্গে ভাগাভাগি করবে না।
তিনি আরও অনুরোধ জানান যে, ফাউন্ডেশনের পরিকাঠামো পুরোপুরি চালু না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যমান ব্যবস্থার মাধ্যমে পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রবাহ নিশ্চিত করা হোক।