সৌদি তেল স্থাপনায় ড্রোন হামলাকে কেন্দ্র করে সৌদি আরব বা যুক্তরাষ্ট্র যদি কোনও সামরিক হামলা চালায় তাহলে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হবে বলে হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ। বৃহস্পতিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ হুঁশিয়ারি জানান।
ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি গুরুতর কথা বলতে যাচ্ছি। আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা সামরিক মোকাবিলায় জড়িত হতে চাই না। কিন্তু নিজেদের ভূখণ্ড রক্ষার ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করব না।
সৌদি আরব বা মার্কিন সেনাবাহিনী হামলা চালালে ফল কী হবে জানতে চাইলে জাভেদ জারিফ বলেন, একটি সর্বাত্মক যুদ্ধ।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি আরামকোর দুটি বৃহৎ তেল স্থাপনায় ড্রোন হামলা চালানো হয়। ওই হামলার পর সৌদি আরবের তেল উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আসে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করেন। যুক্তরাষ্ট্রের তরফে স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করে হামলার নেপথ্যে ইরান জড়িত রয়েছে বলে দাবি করে। হামলার পর ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথিরা দায় স্বীকার করলেও যুক্তরাষ্ট্র এই হামলার পেছনে ইরানকে দায়ী করে আসছে। যদিও ইরান এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, আমরা ইরানের ওপর খুবই বিশেষ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছি। এর আগে এক টুইটে তিনি জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন নুচিনকে ইরানের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার বাড়ানোর ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।
সামরিক অভিযান চালানো হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, সব পথই খোলা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘চূড়ান্ত পদক্ষেপের সম্ভাবনা তো আছেই। তার আগেও অনেক কিছু করার আছে।’ চূড়ান্ত পদক্ষেপ বলতে তিনি যুদ্ধকে বুঝিয়েছেন বলে জানান। আর বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেন, তেল খনিতে হামলা আসলে ইরানের যুদ্ধ অভিযানেরই শামিল।
যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির মিত্রদের প্রতি বৃহস্পতিবার টুইটারে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিখেছেন, ইয়েমেনে বিপর্যয় অবসানের সুযোগকে কাজে লাগানোই ক্ষতিপূরণের পথ, বিপর্যয়কে আরও বাড়িয়ে তোলা নয়। গত কয়েক দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের মিথ্যাচার ও প্রতারণা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। বি-টিমের অবশিষ্ট সদস্যরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এখনও যুদ্ধের জন্য উসকানি দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৌদি যুবরাজ বিন সালমান, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, আবুধাবির যুবরাজ বিন জায়েদ ও বরখাস্তকৃত মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনকে একসঙ্গে ‘বি-টিম’ বলে অভিহিত করে থাকেন।