ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো অন্য আরব রাষ্ট্রগুলোও এগিয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে কেবল মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতাই বাড়বে না বরং এই অঞ্চলের মানুষের জীবনেরও উন্নয়ন ঘটবে। যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সামরিক সুবিধা দেওয়া অব্যাহত রাখবে বলেও জানান তিনি। পাঁচ দিনের মধ্যপ্রাচ্য সফরের প্রথম দিনে সোমবার (২৪ আগস্ট) জেরুজালেমে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর এসব কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা ঘোষণার পর ইসরায়েল এখন পর্যন্ত তিনটি আরব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সমঝোতায় পৌঁছেছে। ১৯৭৯ সালে মিসর ও ১৯৯৪ সালে জর্ডানের পর গত ১৩ আগস্ট সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ইসরায়েলের সমঝোতায় পৌঁছানোর কথা জানানো হয়। এদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন,সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সমঝোতায় পৌঁছানোর চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
ওই চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত পূর্ণাঙ্গ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে- বিনিময় হবে রাষ্ট্রদূত, চালু হবে সরাসরি ফ্লাইট ও বাণিজ্য। চুক্তির বিনিময়ে দখলকৃত পশ্চিম তীরের অংশ বিশেষে বসতি সম্প্রসারণের পরিকল্পনা বাতিলের কথা জানিয়েছে ইসরায়েল। তবে অনেকেই মনে করেন এই চুক্তির কারণে ফিলিস্তিনের সঙ্গে ইসরায়েলের শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যাবে।
সোমবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। উষ্ণতা বিনিময়ের পর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ইসরায়েল-আমিরাত চুক্তির প্রশংসা করেন পম্পেও বলেন, ‘খুবই আশাবাদী যে অন্য আরব রাষ্ট্রগুলোও এতে যোগ দিচ্ছে দেখতে পাবো।’ তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং তাদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেলে কেবল মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতাই বাড়বে না বরং এতে তাদের নিজ নিজ দেশের মানুষের জীবনেরও উন্নয়ন হবে।’
আমিরাতের সঙ্গে চুক্তিটি নতুন যুগের সূচনা করেছে মন্তব্য করে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আশা করি ভবিষ্যতে আরও সুখবর পাবো, হয়তো নিকট ভবিষ্যতেই।’
ইসরায়েল ও মার্কিন কর্মকর্তাদের বিশ্বাস পরবর্তী দেশ হিসেবে বাহরাইন, ওমান ও সুদান ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে পারে। পাঁচ দিনের মধ্যপ্রাচ্য সফরের সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত ছাড়াও সুদান ও বাহরাইন সফরের কথা রয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর।
তবে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা আশা করলেও আমিরাতের চুক্তির প্রশংসা করায় গত সপ্তাহে মুখপাত্রকে বহিষ্কার করেছে সুদান। আমিরাতের পদক্ষেপকে বিশ্বাসঘাতকতা বলে আখ্যা দিয়েছে ফিলিস্তিন। পূর্বের শান্তি পরিকল্পনা অনুযায়ী ইসরায়েলের সঙ্গে আরব রাষ্ট্রগুলোর শান্তি প্রতিষ্ঠার আগে তাদের সঙ্গে সংঘাত বন্ধের শর্ত ছিলো।