বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে বিমানবন্দর ও মেট্রো স্টেশনের হামলার নেপথ্যে দেশটির কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েফ এরদোয়ান। তুরস্ক অভিযোগ করেছে, ব্রাসেলসের বিমানবন্দরে আত্মঘাতী হামলায় জড়িত দুই সহোদরের একজন তুরস্কে আটক হয়েছিলেন এবং পরে তাকে ফেরত পাঠানো হয়। বেলজিয়াম কর্তৃপক্ষকে ‘বিদেশী সন্ত্রাসবাদী’র বিষয়ে সতর্কও করা হয়। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোনও সতর্কতা অবলম্বন করেননি।
বুধবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান দাবি করেছেন, তুর্কি কর্তৃপক্ষ গত বছর জুনে ব্রাহিম এল-বাকরাওইকে সিরীয় সীমান্তের নিকটবর্তী গাজিয়ানতেপ এলাকা থেকে আটক করে এবং পরে জুলাইয়ে তাকে নেদারল্যান্ডে ফেরত পাঠানো হয়।
তিনি আঙ্কারায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘তাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আমরা ১৪ জুলাই ২০১৫ তারিখে বেলজিয়াম দূতাবাসকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। একজন ‘বিদেশী সন্ত্রাসবাদী’র বিষয়ে আমাদের হুশিয়ারি সত্ত্বেও বেলজিয়ামের কর্তৃপক্ষ তার সাথে সন্ত্রাসবাদের কোনও সম্পর্ক শনাক্ত করতে পারলো না।’
তবে বাকরাওইকে কিভাবে নেদারল্যান্ড থেকে বেলজিয়ামে স্থানান্তরিত করা হয়, সে বিষয়ে এরদোগান কিছু উল্লেখ করেননি। বেলজিয়াম কর্তৃপক্ষ এখনও ওই অভিযোগের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকালে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে বিমানবন্দর ও মেট্রো স্টেশনে পৃথক বোমা হামলায় অন্তত ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২০ জন মেট্রো স্টেশনের হামলায় এবং ১৪ জন বিমানবন্দরে হামলার ঘটনায় নিহত হন। এছাড়াও শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।
এদিকে, বুধবার হামলায় জড়িতদের ধরতে অভিযান জোরদার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ব্রাসেলসের বিমানবন্দর ও মেট্রো স্টেশনে হামলার পর সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তিনজনকে শনাক্ত করা হয়, যার একজন নাজিম। বাকি দুজন ছিলেন আত্মঘাতী হামলাকারী। ওই দুই হামলাকারী খালিদ এল-বাকরাওই ও ব্রাহিম এল-বাকরাওই পরস্পরের ভাই বলে নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
ব্রাসেলসের বিমানবন্দরের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে যুক্তরাষ্ট্রের তদন্তকারীরা জানান, ফুটেজে তিন সন্দেহভাজন হামলাকারীকে ব্যস্ত চেক ইন এলাকার দিকে বোমাভর্তি স্যুটকেস টেনে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। এরমধ্যে দুই সন্দেহভাজন সহোদর তাদের বাম হাতে কালো রংয়ের দস্তানা পরে ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, ওই দুজন তাদের নখের আবরণে ঢাকা ডিভাইস ব্যবহার করেই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন। সূত্র: আলজাজিরা।
/এসএ/বিএ/