X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

‘কিডনি রোগ ভবিষ্যতে মহামারির আকার ধারণ করতে পারে’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৪ মার্চ ২০২৪, ১৫:৫৭আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৪, ১৬:০০

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশে ১০ বছর আগে কিডনি রোগীর সংখ্যা ছিল ৮০ লাখ থেকে ১ কোটি। বর্তমানে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ কোটি। বৃদ্ধির হার এতই বেশি যে অদূর ভবিষ্যতে এটা মহামারির আকার ধারণ করতে পারে।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা প্রায় আড়াই কোটি। তাদের মধ্যে আকস্মিক কিডনি রোগীর সংখ্যা ২৫-৩০ হাজার (প্রতি বছর), দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগীর সংখ্যা ৩৫-৪০ হাজার (প্রতি বছর)। বাংলাদেশে কিডনি রোগের চিকিৎসক রয়েছে ৩০০ জন। বর্তমান বিশ্বে কিডনি রোগের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।’

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দুইটি কিডনির প্রতিটিতে প্রায় ১০-১২ লাখ ছাকনি রয়েছে। মানুষের জন্ম গ্রহণের ৬ সপ্তাহের মধ্যেই কিডনির ছাকনি বা ফিল্টার মেমব্রেন পুরোপুরি তৈরি হয়ে যায়। অর্থাৎ কিডনি পুরোদমে কাজ শুরু করতে পারে। প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ২০০ লিটার রক্ত পরিশোধিত করে। এই পরিশোধিত রক্তের মধ্যে ১ থেকে ৩ লিটার শরীরের বর্জ্য পদার্থ প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেওয়া হয়। সুতরাং কোনও কারণে যদি এ ধরনের ফিল্টার বাধাপ্রাপ্ত হয় তখন আকস্মিক বা দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ হতে পারে। কিডনির কার্যকারিতা যাচাই করার জন্য রক্তে ক্রিয়েটিনিন নামক জৈব পদার্থ পরিমাপ করা যায়, যার মাধ্যমে কিডনি কতটুকু কাজ করছে তা বোঝা যায়। রক্তে ক্রিয়েটিনিন ছাড়াও প্রস্রাবে নির্দিষ্ট মাত্রার বেশি প্রোটিন বা এলবুমিন থাকলে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ আছে বলে ধরা হয়।

বাংলাদেশে এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশের শতকরা প্রায় ১৮ ভাগ মানুষ দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে ১১ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ শতাংশ এবং আইসল্যান্ডে ১০ শতাংশ মানুষ দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত।

আকস্মিক কিডনি রোগ

হঠাৎ কোনও কারণে যখন কিডনি তার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে তখন তাকে আকস্মিক কিডনি রোগ বলে। এ ক্ষেত্রে সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কিডনিকে পুনরায় আগের কর্মক্ষম অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায়। আকস্মিক কিডনি রোগের কারণগুলো হলো– ডায়ারিয়া, রক্তক্ষরণ, কিডনি প্রদাহ, তীব্র সংক্রমণ, আকস্মিক হৃদরোগ, কিডনির ক্ষতিকারক কিছু ওষুধ, মূত্রনালীর প্রতিবন্ধকতা। লক্ষণগুলো হলো প্রস্রাব কমে যাওয়া বা বন্ধ হয়ে যাওয়া, শরীরে পানি আসা ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়া। এ অবস্থায় প্রয়োজনে ডায়ালাইসিস দিতে হতে পারে।

দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগ

যখন কিডনির কার্যকারিতা তিন মাস বা তার বেশি সময় পর্যন্ত লোপ পেয়ে থাকে তাকে দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগ বলা হয়। দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগের কারণগুলো ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, নেফ্রাইটিস ও অন্যান্য। লক্ষণ হলো- বমি বমি ভাব, ক্ষুধা মন্দা, প্রথম দিকে ঘন ঘন প্রস্রাব, পরে কমে যাওয়া, ক্রমান্বয়ে দুর্বলতা বৃদ্ধি পাওয়া, রক্ত স্বল্পতা, ও শ্বাস কষ্ট।

অকেজো কিডনি রোগীর চিকিৎসা সম্পর্কে বলা হয়, ডায়ালাইসিস ও কিডনি সংযোজন ব্যয়বহুল চিকিৎসা পদ্ধতি। একজন কিডনি অকেজো রোগী যদি নিয়মিত হিমোডায়ালাইসিস করে তাহলে মাসে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়। সিএপিডি করলে মাসে খরচ হয় প্রায় ৪০ হাজার টাকা। উভয়ক্ষেত্রেই অন্যান্য ওষুধ খেতে হয়। কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট অপারেশনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ওষুধ ও হাসপাতালে থাকা বাবদ খরচ হয় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা। অপারেশনের পর ওষুধ বাবদ প্রথম বছরে খরচ হয় ১ থেকে দেড় লাখ টাকা। পরে প্রতি বছর ৫০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়।

বিএসএমএমইউর কিডনি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন– ইউরোলোজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. তৌহিদ রমা সাইফুল ইসলাম দিপু, কিডনি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এএইচ এম হামিদ আহমেদ, অধ্যাপক ডা. কেবিএম হাদিউজ্জামান, সহযোগী অধ্যাপক ডা. ওমর ফারুক প্রমুখ।

/এসও/আরকে/
সম্পর্কিত
শিব নারায়ণ দাসের মরদেহ বিএসএমএমইউ-এ হস্তান্তর
কণ্ঠের সুচিকিৎসা দেশেই সম্ভব: বিএসএমএমইউ ভিসি
আলাদা হচ্ছে আরও এক জোড়া শিশু
সর্বশেষ খবর
তাপদাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
প্রাক-প্রাথমিক বন্ধই থাকছেতাপদাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
ঘামে ভেজা চুলের যত্নে কী করবেন
ঘামে ভেজা চুলের যত্নে কী করবেন
ইউক্রেনের তিনটি অঞ্চলের জ্বালানি স্থাপনায় রুশ হামলা
ইউক্রেনের তিনটি অঞ্চলের জ্বালানি স্থাপনায় রুশ হামলা
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে সুসংহত করতে হবে: ধর্মমন্ত্রী
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে সুসংহত করতে হবে: ধর্মমন্ত্রী
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই