প্রশ্ন: আমার বয়স ৩৬ বছর। আমার নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা নেই। আমি খুব সহজে আবেগতাড়িত হয়ে পড়ি। আমি যাকে একবার ভালোবাসি, তার উপর চরমভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়ি। এটা অন্যের জন্য সমস্যা তৈরি করে এটা আমি বুঝি। এই আবেগের কারণে অনেকবার নিজের আত্নসম্মান বিসর্জন দিয়েছি, অন্যকে সরি বলেছি ধরে রাখার জন্য। নিজের দোষ না থাকলেও। কিন্তু তারপরেও জীবনে কাউকে ধরে রাখতে পারিনি। আমি কীভাবে নিজের আবেগের উপর নিয়ন্ত্রণ আনবো?
উত্তর: ১) নিজেকে ভালোবাসুন: আপনার সকল আবেগ-অনুভূতি আপনার অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই এদেরকে ভালো বা মন্দ হিসেবে বিচার না করে নিরপেক্ষভাবে গ্রহণ করুন এবং আপন করে নিন। উদ্বেগ-প্রবণতার কারণে আপনি ভালোবাসার মানুষের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। যখনই আপনি আপনার সকল বৈশিষ্ট্য মেনে নেবেন তখনই আপনি নিজেকে নিঃশর্ত ভাবে ভালোবাসতে পারবেন এবং অন্যদের উপর আপনার আবেগীয় নির্ভরতাও কমে যাবে। তাই নিজের মধ্যে আসা চিন্তাভাবনা ও আবেগ অনুভূতিকে বাধা না দিয়ে আনন্দ ও ভালোবাসার সাথে গ্রহণ করুন।
২) নিজের চিন্তাভাবনাগুলো পর্যবেক্ষণ করুন: নিজের সাথে সময় কাটান এবং নিজের চিন্তাভাবনাগুলোকে পর্যবেক্ষণ করুন। নিজের পরিচয় এবং মূল্যবোধগুলোকে চিহ্নিত করুন। আপনি কে এবং আপনার জীবনের লক্ষ্যগুলো কী তা নির্ধারণ করুন।
৩) পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা বন্ধ করুন: পরিস্থিতির উপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ সবসময় থাকবে না এটাই স্বাভাবিক। সুতরাং পরিস্থিতির উপর নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা বন্ধ করে প্রকৃতির ছন্দের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করুন। প্রকৃতির স্রোতের সাথে গা ভাসিয়ে দিন।
৪) ব্যক্তিগত উন্নয়নে মনোযোগ দিন: আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য নতুন নতুন দক্ষতা অর্জন করুন। যেমন গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং এবং ভিডিও এডিটিং। অনলাইন কোর্স প্ল্যাটফর্ম যেমন Coursera, Udemy, এবং LinkedIn Learning থেকে কোর্স করতে পারেন। ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন। ব্লগিং বা ইউটিউব চ্যানেল শুরু করে বিজ্ঞাপন ও স্পন্সরশিপের মাধ্যমে আয় করতে পারেন। ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করতে পারেন যেমন হস্তশিল্প বা খাবার।
প্রশ্ন: আমার বয়স ৪৫ বছর। রক্তচাপ আর ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে। আমি ধূমপান করি অনেক বেশি। চেষ্টা করেও ধূমপান ছাড়তে পারছি না। অথচ আমি বুঝি আমার এটা ছাড়া দরকার। নিজের পরিবার আছে, সন্তান আছে। আমি অনেক চেষ্টা করেও পারছি না। কীভাবে নিজেকে বোঝাব?
উত্তর: ১) আত্মপ্রত্যয় বজায় রাখুন: আপনার পরিবার এবং সন্তানদের কথা ভেবে আপনি ধূমপান ছেড়ে দিতে চান। এই মুহূর্তে ছাড়তে না পারলেও নিজের কাছে সবসময় ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করুন। নিজের উপর জোর খাটাবেন না বা চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে হতাশ হবেন না। আপনার মধ্যে ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে বলেই আপনি ধূমপান ছেড়ে দিতে চাচ্ছেন।
২) নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি (NRT): নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি যেমন নিকোটিন গাম, প্যাচ ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন। এটি ধূমপানের অভ্যাস ছাড়তে সাহায্য করতে পারে।
৩) সমর্থন গ্রুপে যোগ দিন: ধূমপান ছাড়ার জন্য বিভিন্ন সমর্থন গ্রুপ রয়েছে। সেখানে যোগ দিয়ে অন্যদের সাথে আপন অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন এবং অন্যদের কাছ থেকে প্রেরণা পেতে পারেন।
৪) স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলুন: ধূমপানের বিকল্প স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলুন। নিয়মিত ব্যায়াম যেমন হাঁটা, দৌড়ানো, সাইকেল চালানো বা যোগব্যায়াম করতে পারেন। বাগান করা, বই পড়া, সিনেমা দেখা বা গান শোনার মতো শখ গড়ে তুলুন। মানসিক চাপ কমাতে মেডিটেশন বা গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন করতে পারেন। দেশী ফল, সবজি, এবং উচ্চ প্রোটিন ও ফ্যাট সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করুন।