বে-র জন্য
গভীর রাতে
আবার সব ঝলমল হ’য়ে উঠলো
বাইরে থেকে গুঁড়িয়ে গিয়ে
আমি জমে যেতে শুরু করলুম
পূর্ণ চৈতন্যে
অবোধ আমার দেহ হটাৎ মৃদু তানে
দৃঢ় হ’য়ে উঠতে লাগলো
প্রতি নিশ্বাসে
‘এখন জেগে উঠো না দোহাই।’ আমি ভাবলুম
আর দম আটকে রইলুম
কিন্তু ততক্ষণে প্রতিকারহীন দেরি হ’য়ে গেছে
আবার এসে ঘা মেরেছে অর্থহীনতা
কখনও আমি এমন তীব্রভাবে অনুভব করিনি যে
আমি আছি সংখ্যালঘুদের মধ্যে
জানলার বাইরে
সর্বশক্তিমান ছাড়া আর-কিছুই নেই
প্রথমে দু-একটি পাখি গান ক’রে উঠলো
তারপর সে যে কত
গান
হ’য়ে উঠলো বিষম কোলাহল
বাতাস কোনো প্রতিধ্বনিঘর
বিরাম নেই অন্ত নেই
এমনই এক পরিণাম
হটাৎ না-কোনো স্মৃতি
না-বা ভবিষ্যতের কোনো ভাবনা
আমি চিৎপাত প’ড়ে রইলুম অনেকক্ষণ আমার আতঙ্কের মধ্যে
সাহস হলো না যে
চোখ খুলি
আবারও সেই শীতরাতটির অভিজ্ঞতা
যখন একবারও পাশ
ফিরিনি
ঠান্ডায় কুণ্ডলী পাকিয়ে গিয়েছিলুম তখন
এখন চিৎপাত
আমার বাইরের বিভীষিকা সম্বন্ধে নিরক্ষর—
বাতাস কেমন উঁচু পরদায় ঝিনঝিন ক’রে উঠছে!
আর তারপর
বলা নেই কওয়া নেই
জানালার খুব কাছেই
পাখিদের ঐ বিষম কোলাহলের মধ্যে একটা নীচু শিশের সুর
একটা জুকবাক্সের সুর
‘কোনো মানুষ তবে!’ আমি ভাবলুম
মারাত্মক আতঙ্কের মধ্য থেকে প্রতিটি বর্ণ বানান ক’রে-ক’রে
আর শুকিয়ে ঝ’রে গেলুম
কোনো নড়াচড়া না-ক’রেই
‘সেই যাকে খুন করা হ’লো বিদেহী দানবটিকে দিয়ে
নির্জন ঊষার আলোয়...’
মাটির তলার ভাঁড়ার থেকে ঢেউয়ের পর ঢেউ উঠে এলো আতঙ্ক
আর আমার ভেতরকার কাণ্ডজ্ঞানধরা-লোকটা
কান পেতে শুনলো :
সুরটা ফিরে এলো আবার
আবারও :
‘কোনো পাখি শিশ দেয় না এমন একঘেয়ে
ছায়ামূর্তি আমাকে হেসে উড়িয়ে দিতে চাচ্ছে
সে মুচকি হাসছে ভেংচি কেটে
আলকাতরাকালো ঠোঁটে’
আমি ভেবেছিলুম
আলো
যখন আমি মিটমিট ক’রে তাকালুম
আর তো সেই একই রঙ আছে
সেই যেকালে আমি তখনও বিশ্বাস করতুম নরকে
আর জানলার পাশের শিশদেয়া দানবটা
নিঃশব্দে তার কব্জি ঝমঝমালো
যেন সে এখন সত্যি হেস্তনেস্ত করতে চাচ্ছে
‘সেই সকালে ফ্রেডি কুইন এটা গায়নি কি?’
আমি ভাবলুম
‘কিন্তু কোন পাখি?’ কাণ্ডজ্ঞানধরা-লোকটা
তারপরেই পাশের ঘরে জেগে উঠলো বাচ্চাটি
আর চেঁচিয়ে বললে
তার ঘুম আসছে না
‘অবশেষে!’ আমি বললুম
তার কাছে গিয়ে
তাকে শান্ত করলুম আমি
অহংবোধে ভরা
একটা গ্যারাজের দরজা সশব্দে বন্ধ হলো
প্রথম ভোরে-ওঠা লোককে কাজে যেতে হবে
পরের দিনের সন্ধেবেলায় আমি ছেড়ে এলুম
মস্ত সুন্দর নগরীর
অসমতল গড়ানো প্লাজাগুলো
খোলামেলা মফসসলের এই পুনরাবৃত্তি তার পাহাড়গুলোর দিগন্তসমেত
বাড়িগুলোর মধ্যে
জমি
প্রলম্বিত ঢুকেছে নগরে
এইসব প্লাজায়
যেখানে তুমি একেবারে আক্রান্ত হ’য়ে পড়বে আর-কোনোখানে যতটা নয়
দিগন্ততৃষায়...
যখন আমি পাতালরেলের স্টেশনের সিঁড়ি বেয়ে উঠে এলুম
নগরের এই অংশ ছিলো
বাদলমেঘে অন্ধকারে ঢাকা
আর তার পরেই রাস্তাটায় বাতি জ্বালিয়ে দেয়া হলো
আমার পেট মুচড়ে
ফেটে বেরুল জীবনের জন্য কেমন-একটা টান
আমি হো-হো হেসে উঠলুম
ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে গেলো নানা কাফেয়
বিয়ার টেনে
আমি তাকিয়ে-তাকিয়ে দেখলুম
আর আমার মনে প’ড়ে গেলো
মনে প’ড়ে গেলো যখন তাকিয়ে আছি
তাকিয়েই রইলুম
কোনো উন্মুখ কামনা ছাড়াই
স্মৃতিও
কামনা ছাড়াই
আমি কোনোকিছুর দিকে ঠায় তাকিয়ে থাকতে চাইনি
দেখতে যাইনি কোনো সিনেমা
থেকে গিয়েছিলুম রাস্তাতেই
চোখ কুঁচকে
যখনই আমি তাকিয়ে-তাকিয়ে
কেমন নিরুৎসাহ হ’য়ে যাচ্ছিলুম
কিন্তু আমি তাকাতে পারছিলুম তাকাতেই পারছিলুম
ভাষাহারা না-হ’য়ে গিয়েও!
আমি সব্বাইকে বাজিয়ে নিতে দিলুম
আর তাকে বুঝে ফেললুম—
যেহেতু সবকিছু ছিলো আমার অচেনা
আমি সহজেই ফস্টিনস্টি করতে পারতুম
এমনকি কোনো খুনের সঙ্গেও
সে তো আমারই প্রতিমূর্তি
দূরে
কেবলই নতুন-নতুন গাড়ির আবির্ভাব হ’তে লাগলো
ঐ কুঁজবসানো প্লাজার গভীর থেকে
সন্ধ্যার আকাশ ছিলো এত নীল
যে এমনকি যে-কুত্তাটা রাস্তায় বসে হাগছিলো
তাকেও মনে হলো জাদু-করা
অবিশ্বাসে আমি শিউরে উঠলুম
আচম্বিতে আমি হ’য়ে উঠেছি সবস্তুক জ্যান্ত
জিনিশ
আমার দেহ শুয়ে রইলো আশ্চর্যভাবে বিস্মৃত
আমার দু-ঠ্যাঙের মধ্যে
আনন্দ উঠে এসেছে
গভীরতম গভীর থেকে
আর দখল ক’রে নিয়েছে আমার জায়গা
‘আমিও সুখী হ’তে পারি!’ আমি ভাবলুম
‘তোমরা আমাকে হিংসে করছো না কেন।’
কতদিন যে আমি নিজেকে ভুলেছিলুম
আর তবু হ’য়ে উঠেছিলুম
যা আমি হতে চেয়েছিলুম তা-ই
আমি অল্প খেতুম
কথা বলতুম শুধু নিজের সঙ্গে—
কোনো চাহিদা নেই এত-সুখী
কেউ আমার কাছে ঘেঁষতে পারবে না এত-উৎসুক
আত্মবোধহীন
আর আত্মনির্ভর
একের মধ্যেই আত্মবোধহীনতার
গভীরতম সত্তা হিশেবে
আমি
যেন উদ্দীপ্ত কোনো কল
সবকিছু ঘ’টে গেলো দৈবাৎ
যে একটা বাস এসে থামলো
যে আমি তাতে উঠে পড়লুম
যে তাতে চ’ড়ে বেড়ালুম দাম উশুল না-হওয়া অব্দি
যে আমি রাস্তার পর রাস্তায় হাঁটলুম
যতক্ষণ-না পাড়া গেলো বদলে
যে আমি নতুন-নতুন পাড়ায় হেঁটে বেড়ালুম
আমি বাঁচলুম
যেমন যা দেয় জীবন
আর কোনো দোনোমনা ভাব নেই সারা দিয়ে উঠি সঙ্গে-সঙ্গে
অনুভব করিনি কিছুই বিশেষত্বময়
—না ‘একবার আমি দেখেছিলুম’—
নিছকই অনুভব করেছিলুম
বেড়ালরা শুঁকে-শুঁকে ঘরে বেড়াচ্ছে মস্ত-সব গোরস্থানের
জমকালো কবরগুলো
অতি মিরকুট্টে যুগলরা ব’সে আছে কাফেগুলোয়
আর মিলেমিশে খাচ্ছে স্যালাদ নিসেয়াস...
আমি ছিলুম একেবারে আহ্লাদে আটখানা
মোরগের মতো ডেকে ডেকে ঘুরেছি...
কিন্তু আমার স্বপ্নগুলোর মধ্যে
আমি কিন্তু এখনও সব আগ্রহ হারিয়ে ফেলিনি
শামুক ব্যক্তিত্বের
ঘিনঘিনে কাদার পথরেখার পেছনে পড়েছিলুম
লজ্জা হয়নি আমার
শুধু রাগ
বেশি মদ খেয়ে
আমি নিজেকে বানিয়ে ফেললুম নিরাকাঙ্ক্ষী
মাঝে-মাঝেই চোখের পাতা পিটপিট ক’রে হ’য়ে উঠলুম বিরক্তিকর
পথচারীরা সবাই হেঁটে চ’লে যায়
যাদের হাবভাব তারকার মতো
‘লিভাই-জিন্স-পরা লোকজন!’ আমি ভাবলুম
‘বিজ্ঞাপন-মহাকাশযুগের শরীররা!’
—‘যা তোমার নিজের সম্বন্ধেই সব কথা খুলে ব’লে দেয়’
আমি ভাবলুম
পূর্ববর্তী সমানুকম্পা ছাড়াই
এই বদমেজাজে আমি হ’য়ে উঠলুম ওপরভাসা
যা-কিছুই আমি দেখলুম
আমি তাকে অনুভব করলুম যেন ছুঁয়েছি
একে দেখালো
এত খোঁচা-খোচা
আর বিকারগ্রস্ত
একবার আমি যখন পাওনা চোকাচ্ছি
নোটটা দলামোচা হ’য়ে গেলো
বিক্রিওলার নিশ্বাসে
যেন কোনো তাওয়ার ওপর
এক গুবরেপোকা
কেমন যেন ভালো লাগছিলো না আমার
আমার চামড়ার ভেতরে
সবকিছুতেই কেমন চুলবুলুনি
এখন আর আমি তেমন নিরুদ্বেগে ঘামছিলুম না
অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সব
যেন ভুল জায়গায় বসানো...
আর বুলভার
কুকুরের গুয়ের আঁকিবুঁকি কাটা...
‘কী ধৃষ্টতা
এই তোমাদের তোমরা যারা আফ্রিকা থেকে রপ্তানি হয়েছো
আমার সামনে নরদমা সাফ করছো
ও-রকম জন্তুর মতো গরহাজির চোখে!’
হাল ছেড়ে দিলুম আমি
আর রওনা হলুম অন্য শহরের উদ্দেশে
যেখানে আমার বন্ধুরা আছে
এক নিঃসাড় পরিবাহী বস্তু
পরিবহণ ব্যবস্থার মধ্যখানে
আপন বিস্মৃত
যদি-না আমার হাতের এমন সূক্ষ্ম বোধ থাকতো
হাগামোছা-কাগজের জন্য
আর মাখনের
আর হ্যাম-সালামী-সসেজের গন্ধের জন্য
যারা চিরকাল প’ড়ে আছে ওখানে
প্লাসটিকের মোড়কের মধ্যে!
যত্ন নেয়া হচ্ছে তো
হ্যাঁ
শুধু তার যে দাম দিতে পারে
মাথা গোঁজার ঠাই
হ্যাঁ
কোনো এককের অংশ হিশেবে
আর তা সেই যা-ই হোক না কেন :
এ এক অন্য ধরনের অর্থহীনতা
মারাত্মক আতঙ্ক ছাড়াই
আমার বুক নেচে ওঠে না কারু জন্যে
আর নগরটাকে আমার বিদেশ মনে হলো
তার চেনা সব বিখ্যাত দৃশ্য সত্ত্বেও
বাড়ির দরজাগুলো সব তালাবন্ধ
সন্ধে আটটায়
আর আমি ফোন করলুম
যেতে চাই ব’লে
এক বন্ধুর অন্ধকার অ্যাপার্টমেন্টে
আমি ব’সে রইলুম অন্যমনস্ক
আমার কান ভনভন ক’রে উঠলো
আর শুনতে পেলো আমার নিজেরই আত্মাহীন স্বর
সুখী হ’য়ে একমাত্র যা আমি মনে করতে পারি
তা শুধুই সুখ
অসুখী যখন শুধুই দুঃখ
উদাসীন আমি ইনিয়ে বিনিয়ে বললুম
কেমন তোফা কাটছে আমার সবকিছু
তারপর আমরা শরীর বিশয়ে বললুম
যৌন অভিব্যক্তিগুলো
আমাদের রসদ জোগালো বেহায়াপনার
অন্য সবকিছুর জন্য
যারাই আমাদের আড্ডায় যোগ দিতে এলো আমরা তাদের সম্ভাষণ জানলুম
খিস্তিতে
আর রাশ ছেড়ে দিলুম
তারা হারিয়ে ফেললো তাদের অচেনাত্ব
এমনকি শহরতলির
মাটির তলার মদের দোকানে ঢোকবার সময়েও
আমরা প্রলম্বিত ক’রে দিলুম আমাদের সব আমূলকল্পনা
গাড়ি দাঁড় করানো যায় এমন জায়গা খুঁজতে-খুঁজতে
সেখানে আমরা তাদের ফেলে দিলুম
সবকিছুই কামের কোনো জোর তাড়া ছাড়াই
বাসের ওপরতলায়
একেবারে ডাহা-অচেনা লোকেরা চোখ টিপে হাসলো
আমাদের কথাবার্তা শুনে
আর টের পেয়ে গেলো আমাদের সঙ্গে তাদের কী গলাগলি ভাব
কী দেখানেপনা
যেই আমাদের কেউ
হটাৎ করে উল্লেখ ক’রে বসে কোনোকিছুর!
কিন্তু কেউ-না-কেউ সবসময়েই থাকে
যে যৌনতার ইশারা পায়
কথিত অন্যকিছুতে...
অথচ তবু নিজের সম্বন্ধে কেউ কিছুই বললো না
আমরা শুধু ইচ্ছাপূরণকারী স্বপ্ন বানালুম
কোনো সত্যি-কাহিনীর বিব্রতভাব কদাপি নয়
কেমন ক’রে পারিপার্শ্বিক ঝংকৃত হ’য়ে উঠলো তখন
আর কেবল এই মুহূর্তটি ছাড়া আর-কিছুতেই কোনো সুখ নেই :
বেলনের মতো গেলাশে
টক মদের দিলখোলা ভাব
থেমো না
দোহাই থেমো না।
এই দাঁতচাপা নিষ্ঠুর নতুন যুগের
অবর্ণনীয় খুঁটিনাটিগুলো
তাদের হারানো সংযোগের শৃঙ্খলা খুঁজে পেলো
নোংরা অশ্লীল-সব গল্পে
হ্যালো
অর্থ ফিরে এসেছে আবার!
আর তো দেখতে হবে না আমায় উৎকণ্ঠিত মুখ
মাঝ রাতে আর কখনও না
এমনকি একা পরিত্যক্ত হ’লেও
আমি বস্তে পারি আমার উত্তরচিন্তাগুলোর
সুরক্ষিত প্রহরায়
শান্তভাবে আমি দেখলুম
বেরিয়ে-আসা গোড়ালিটিকে
কাৎরে বেরুচ্ছে আমার বুকের ধকধক থেকে
তোফা বোধ করলুম খাশা
নিজের সম্বন্ধে কিছুই অনুভব না-ক’রে
‘বাল আমার’ আমি ব’লে উঠলুম
নৈর্ব্যক্তিকভাবে
তারপরেই ব্যাপারটা সিরিয়াস হ’য়ে উঠলো
আর এই সিরিয়াসভাব এমন আচমকা ঘা-টা কষালো
যে সে আর আমি থাকতে চাইলো না
আসলে যার কথা বোঝানো হয়েছিল
তারপরে আমি হ’য়ে উঠলুম কৌতূহলী
তারপর নির্মম নিরঙ্কুশ
আমি তো কোনো বেশ্যাকে নেবো পরের ভালো বাথরুমটাতে
আর কোনো ছেনালি নেই
আর-কোনো খিস্তি-টিস্তি নেই
আর-কোনো ন্যাকামি নেই
‘সেক্স চাই’ না-বলে আমি এখন বলি
‘তোমার সঙ্গে ঘুমুতে চাই’
—যদি অবশ্য আদৌ কিছু বলি
আমি আমার নখ ছেঁটেছি
যাতে তোমাকে খুব বেশি ব্যথা দিতে না-হয়
আমার কামের তাড়ায়
হটাৎ আমি কোনোকিছুকেই তার
নাম ধ’রে ডাকতে পারি না
আগে আমি যৌনতার রূপক আবিষ্কার করেছি
তুমুল-সব অসন্দিগ্ধ জিনিসেও
এখন
কামের অভিজ্ঞতার সময়
আমরা অনুভব করি যৌনক্রিয়াগুলোকে
অন্য কোনোকিছুর রূপক হিশেবে
নড়াচড়া আমাকে মনে করিয়ে দেয়
কীসের কথা?
কোলাহলগুলো সব বস্তুজগতের কোলাহল
তার গন্ধ মনে করিয়ে দেয়...
আমাকে এমনকি চোখও বুজতে হয় না
যা-যা আমার চোখের সামনে আছে
তাদের চেয়ে একেবারে ভিন্ন ঘটনাগুলোকে একই সঙ্গে অনুভব করতে
আর ‘সত্যিকার’ ছবিগুলো
‘তথ্যগুলো’ বর্ণনা করা তো
ইচ্ছাধীন
কারণ
কেবল ‘অন্য’ ছবিগুলোই
যার মধ্যে ‘সত্যিকারগুলো’
আমাকে ক্রমশই দোল খাওয়ার
আসলে ‘সত্যি’
আর ‘অন্য’ ছবিগুলোই
যার মধ্যে ‘সত্যিকারগুলো’
আমাকে ক্রমশই দোল খাওয়ায়
আসলে ‘সত্যি’
আর ‘অন্য’ ছবিগুলো
মোটেই কোনো রূপক নয়
বরং অতীত থেকে উঠে-আসা
মুহূর্ত
শরীফ মেজাজ যাদের মুক্ত ক’রে দিয়েছে
—যেমন এইমাত্র আমার মনে প’ড়ে গেল
ঘাসের ওপর এক শজারু
একটা আপেল
কাঁটায় গোঁজা
হিঁচড়ে টেনে বার করছো সংকেতগুলোকে
তোমার নিশ্বাসের সঙ্গে
তোমার চৈতন্যের গভীর থেকে...
এইভাবেই আমি হ’তে পারি কোমল স্নেহাতুর
প্রেমে না-প’ড়েও
আর গোড়ালিগুলোর চামড়া
বিবর্ণ নাভি
আর গভীর-তৃপ্তির সুখী হাসি
কোনো বিরোধ নেই এদের মধ্যে
আর প্রতিটি জিনিশ প্রতিটি জিনিশ
আবার অন্যটির সঙ্গে গভীর জড়ানো :
জানালার পাশে পাতাগুলো
বাচ্চাটা গান গেয়ে-গেয়ে নিজেকে জাগিয়ে রাখার চেষ্টা করছে
কাকভোরে এক বাড়ির কাঠামো
সেই তখনকার
যখন তুমি বিশ্বাস করতে চিরকালকে
‘হ্যাঁ, হজম করো তো দেখি এইটে!’
‘সৌন্দর্য’ হ’লো এক ধরনের খবর’ আমি ভাবলুম
তোমার গায়ের তাপে
আর স্মৃতির আঁচে উষ্ণ
‘তুমিই আমাকে জোর করো
আমি যা হ’তে চাই
তা হ’তে’ আমি ভাবলুম
বেঁচে-থাকা
এতদিনে শুরু করেছে
আমার কাছে কিছু-একটা বোঝাতে—
থেমো না দোহাই!
এই মাত্র ট’লে গেলুম আমি
যখন খেয়াল ক’রে দেখলুম
কেমন আচমকা কবিতাটা শেষ হ’য়ে গেলো
পুনর্মুদ্রণ