X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৬ বৈশাখ ১৪৩১
জার্মান থেকে বাংলায়

কুর্ট তুশোলস্কির কবিতা

অনুবাদ : হেমায়েত মাতুব্বর
২৭ নভেম্বর ২০১৮, ১০:০০আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০১৮, ১০:০০

কুর্ট তুশোলস্কির কবিতা কুর্ট তুশোলস্কি ছিলেন একজন জার্মান ইহুদী কবি ও সাংবাদিক। তিনি ১৮৯০ সালের ৯ ই জানুয়ারি বার্লিনে জন্মগ্রহণ করেন। পনের বছর বয়সে বাবা মারা যাওয়ার পর মায়ের সাথে তার সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়। ফলে তিনি বার্লিন ছেড়ে নিকটবর্তী পোল্যান্ডের স্টেটিন শহরে চলে যান এবং সেখানেই শৈশব কাটান।

১৮৯৯ তিনি বার্লিনে ফিরে এসে স্কুলে ভর্তি হন, স্কুল পাশ করে আইন বিষয়ে ভর্তি হন। কিন্তু ১৯১৩ সালে ফাইনাল পরীক্ষা না দিয়ে সিদ্ধান্ত নেন নিজেকে সাহিত্যের জন্য নিবেদিত করবেন। এরপর কর্মজীবনে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন এবং থিয়েটার’র জন্য গল্প লেখা শুরু করে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে তিনি তার অসমাপ্ত লেখাপড়া শেষ করার সিন্ধান্ত নিয়ে ভর্তি হন ইয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষে চাকুরীর সুত্রে ১৯১৮ সালে মাঠ-পর্যায়ের গোয়েন্দা হিসেবে তাকে রোমানিয়ায় পাঠানো হয়। সেখানে গিয়ে বিস্ময়করভাবে তিনি খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেন। তাকে জার্মান ভাষার কবিদের মধ্যে অগ্রগণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জার্মান ভাষায় স্যাটায়ারধর্মী কবিতা তার হাতে সবথেকে বেশি ঐশ্বর্য পেয়েছে। ১৯৮৫ সাল থেকে কুর্ট তুশোলস্কির সোসাইটি তার নামে একটি পুরস্কার প্রবর্তন করে। স্যাটায়ারধর্মী লেখাকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। তুশোলস্কির ১৯৩৫ সালের ২১ শে ডিসেম্বর সুইডেনের গোটেনবুর্গে মৃত্যুবরণ করেন।


 

বড় শহরের চোখগুলো

যখন তুমি কাজে যাও

খুব সকালে,

যখন তুমি স্টেশনে দাড়াও

চিন্তাদের সাথে:

তখন শহর দেখায়

তার নিজস্ব রূপ

মানুষের ঘনত্বের মাঝে

হাজারো চেহারা :

দুটি অপরিচিত চোখ, একটি ছোট পলক,

ভ্রূ, চক্ষুতারা, চোখের পাতা

এটা কি ছিল? বোধহয় তোমার জীবনের ভাগ্য……..

অতীত, চলে যাচ্ছে, আর কখনো আসবে না।

 

সারাটা জীবন তুমি চলেছ

হাজারো পথের উপরে ;

চলার পথে দেখছ

সকলে তোমাকে ভুলেছে।

একটি চোখ ইশারা করে,

হৃদয়ের মাঝে স্পন্দিত;

তুমি এটা পেয়েছো

শুধু ক্ষনিকের তরে......

দুটি অপরিচিত চোখ, একটি ছোট পলক

ভ্রূ, চক্ষুতারা, চোখের পাতা

এটা কি ছিল? কেউ পারে না সময়কে ফিরিয়ে আনতে..........

অতীত, চলে যাচ্ছে, আর কখনো আসবে না।

 

তুমি অবশ্যই তোমার চলারপথে

শহরগুলোকে ঘুরে বেড়াবে;

একটা নাড়িঘাতে দেখবে

অপরিচিত বদল।

হতে পারে তা শত্রু

হতে পারে তা বন্ধু

হতে পারে সংগ্রামের মাঝে

তোমার দোসর

সম্মুখতে দেখায়

এবং অতীতে টানে.........

দুটি অপরিচিত চোখ, একটি ছোট পলক

ভ্রূ, চক্ষুতারা, চোখের পাতা

এটা কি ছিল?

এ বিরাট মানবতার থেকে এক টুকরো !

অতীত, চলে যাচ্ছে, আর কখনো আসবে না

 

বায়ুপরিবর্তন

চলো রেলগাড়িতে চড়ি,

চলো, বালক, চলো

জলতরীর উপরে

বাতাসে ভাসা তোমার চুল। 

 

কোন এক অচেনা শহরে যাও,

অপরিচিত পথে হাঁটো ;

অপরিচিতের চিৎকার শোনো, 

পান করো অচেনা কোন পাত্রে। 

 

কারখানা আর টেলিফোন থেকে,

কোন পুরাতন বইয়ে পুঞ্জীভূত করে,

উপরিভাগ দেখো আমার পুত্র,

পান্ডিত্য যেন নীরব পরিত্যক্ত। 

 

সারা আফ্রিকা ঘোরো,

মরুভূমির উপত্যকা দেখো;

নীল সমুদ্রকে শ্রবণ করো

শোনো প্রবল প্রবাহ।

 

যেভাবে পৃথিবীটা, সেভাবে ঘোরো দ্রুত,

বিশ্রামহীন আর স্থিরহীন;

বগির পিছনে বসে এসো তুমি।

 

সত্যিকারের ভালোবাসা

আমি যখন ক্লান্তদেহে ঘরে ফিরি,

মৃতপ্রায় কণ্ঠে ও শক্তিহীন হাতে

তখন তুমি কাছে বসো, শত আদর ও অনুগতে 

অবশ্যই ! অবশ্যই তোমাকে ভালোবাসতে হবে।

 

রাত্রি এখনই একটা দুর্গ

আমি জানি, তুমিই সর্বসেরা

এবং কেন এরকম হয়?

তুমি যে স্বর্গীয়, সহায় !

 

তুমি সুপ্রতিভ। অনুমান করনি,

যা প্রথমেই স্ট্যালিন বলেছিলো;

কিছুই জানতে না লাইপজিগের আদালতের

এবং শিল্পশতাব্দীর।

 

তুমি একটা গণিকালয়কে পান্থনিবাস মনে কর,

ব্রোনেনকে জনপ্রিয় উৎস

আমি তোমাকে ভালবাসি, কারণ ........

তুমি যে স্বর্গীয়, সহায় !

 

আমার ধূসর ভাগ্য, সময়ের পর সময়

আমি অন্যের দুয়ারে ভিড়ি।

অন্য নারীরা যে এতো সুন্দর

আবরণের মাঝেও তা দেখতে হয়।

 

অনুতপ্ত হয়ে তোমার কাছে আবার ফিরি

এবং পরমভাগ্যকে উপভোগ করি.......

বোকারা দু’বার ভালবাসে :

তুমি যে স্বর্গীয়, সহায় !

 

পার্ক মানুষ শূন্য

 

এখানে সুন্দর, এখানে আমি নীরবে স্বপ্ন দেখতে পারি।

এখানে আমি একজন মানুষ, শুধু অসামরিকই নই—

এখানে আমি বামেও যেতে পারি। সবুজ বৃক্ষের নিচে

কোন ফলক বিধি-নিষেধের কথা বলে না।

 

ঘাসের উপরে পড়ে আছে একটি মোটা বল।

একটা পাখি ঠোঁকর দেয় একটি উজ্জ্বল পাতা।

ছোট্ট বালক নাকে আঙ্গুল দিচ্ছে,

এবং আনন্দ পাচ্ছে, যখন সে কিছু খুঁজে পাচ্ছে।

 

একজন আমেরিকান পরীক্ষা করছে

যে ঠিক বলেছে এবং গাছের এখানে দাঁড়ানো,

প্যারিসের বাহির থেকে প্যারিসের ভেতর থেকে:

সে কিছুই দেখে না, তবুও সব দেখবে।

 

বাচ্চারা হৈচৈ করছে রঙিন পাশে

সূর্য কিরণ ঢালছে এবং একটা ঘর চকমক করছে

আমি নীরবে বসি এবং আমার বিকিরণ ছড়াই

এবং নিজেকে শান্তি দেই আমার পৃতিভূমি থেকে।

//জেডএস//
সম্পর্কিত
প্রিয় দশ
দোআঁশে স্বভাব জানি
প্রিয় দশ
সর্বশেষ খবর
মাড় ফেলে ভাত রান্না হলে ‘১৫ ভাগ অপচয় হয়’
মাড় ফেলে ভাত রান্না হলে ‘১৫ ভাগ অপচয় হয়’
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ