X
সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫
২৩ আষাঢ় ১৪৩২
ভিয়েতনামের কবি

ট্রান ভ্যাং সাও-এর দুটি কবিতা

অনুবাদ: শাশ্বত ভট্টাচার্য
০৬ জুলাই ২০২০, ১৬:১৮আপডেট : ০৬ জুলাই ২০২০, ১৬:২২

[ট্রান ভ্যাং সাও ভিয়েতনামের হু শহরে জন্মগ্রহণ জন্মগ্রহণ। প্রথম ইন্দোচিনা যুদ্ধের সময় তার পিতা ফরাসিদের হাতে খুন হন। ট্রান ভ্যাং সাও ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় আন্ডারগ্রাউন্ড সংবাদপত্র ‘থানহান চ্যান মিং’ (আমেরিকার বিরুদ্ধে যুবকগণ) প্রকাশের কাজে অবদান রেখেছিলেন। তিনি ১৯৬৫ সালে ‘জাতীয় মুক্তিফ্রন্টে’ যোগ দেন। নামের সঙ্গে ‘ভ্যাং সাও’ অংশটুকু তার ছদ্মনাম— যার অর্থ হলো ‘হলুদ তারা’।

১৯৬৯ সালে তিনি যুদ্ধে আহত হন। যুদ্ধের সময় ট্রান ভ্যাং সাও কমিউনিস্ট মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হন। তারপরও ১৯৭২ সাল থেকে তাকে কালো তালিকাভুক্ত ও কারারুদ্ধ এবং তার পাণ্ডুলিপিগুলো বাজেয়াপ্ত করা হয়। ট্রান ভ্যাং সাও-এর কবিতাগুলো ইংরেজী থেকে অনুবাদকৃত।] ট্রান ভ্যাং সাও-এর দুটি কবিতা

 

স্ত্রীকে সন্তান প্রসবের জন্য নিয়ে যাওয়া

মে মাসের একটি সকালে আমি সন্তান জন্মদানের জন্য তোমাকে নিয়েছিলাম

বৃষ্টিময় ধানকাটার সময়

আমি খুশি হয়েছিলাম তুমি সহজেই প্রসব করেছিলে একটি পুত্র-সন্তান

রাস্তার দুধারের বৃক্ষসারি স্থির ভেজা

আকাশ পৃথিবী আর আমাদের পূর্বপুরুষদের

ধন্যবাদ জানাতে মা একগুচ্ছ ধূপকাঠি জ্বালিয়েছিলেন

 

আমার স্ত্রী প্রসূতিশয্যায় শুয়ে নিশ্বাস ফেলছিলো

তার বড় এবং গোলাকার পেট

একজন মানুষ হিসেবে আমার কিছুই করার ছিলো না, আমি বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলাম

আমি সিগারেট টানছিলাম আর উঁকি দিচ্ছিলাম

আমি কিছুই মনে করতে পারছিলাম না

দুটো ঊর্ধ্বমুখী ধাতব পেয়ালা একটি জলপাত্রের কাছে

কিছু নুড়িপাথর ঘরের চালের প্রান্তভাগে

বৃষ্টি আর হবে না

আমি উবু হয়ে বসেছিলাম আমি উঠে দাঁড়িয়েছিলাম আমি একটি সিগারেট টেনেছিলাম

আমি পিছনে আর সামনের দিকে তাকিয়েছিলাম

আমার স্ত্রী প্রসূতিশয্যায় শুয়ে নিশ্বাস ফেলছিলো

তার বড় এবং গোলাকার পেট

তার মুখের সামনে একটি উজ্জ্বল খোলা জানালা

কাছের বাগানের একটি কলাপাতা জলবিন্দুর পতন দেখিয়েছিলো

আমি ঘরের ভিতর থেকে আসা দুজন নারীর কণ্ঠস্বর শুনতে পাচ্ছিলাম

থুয়ান আন স্ট্রিটে একটি ট্রাকের ইঞ্জিন অকস্মাৎ তীক্ষ্ণ আওয়াজ করে উঠল

এবং একটি শিশুর ক্রন্দনধ্বনি

আমি প্রবেশদ্বারে পা বাড়ালাম

দুজন নারী আমাকে দেখলো এবং হাসলো

আমি বাড়ির পথে হাঁটালাম

পাতাগুলির ওপর ঝিরিঝিরি বাতাস—

আমি জোরে জোরে নিজেকে বললাম

কিছুক্ষণের জন্য রৌদ্র হবে না

 

আমি খাবার জন্য মাংস চাই

আমি একদিন মাংস খাওয়ার কথা নিজেই কল্পনা করি

জোরে হেসে উঠে আনন্দের সাথে বলি

একটি মাংসের টুকরো তার সাথে চর্বির একটি বড় খণ্ড

আমার গলা দিয়ে পিছলে নেমে যায়

আমার দুই চোখ খুলে যায় প্রসারিত হয়ে

আমি আসন করে মেঝেতে বসেছি

অনেক মাংসে পূর্ণ একটি প্লেট আমার মুখের সামনে

সবুজ পেঁয়াজের দীর্ঘ ডালাপালা ভাসছে তেলের মাঝে

হাতে ধরা চপস্টিকস মুখ দিয়ে চিবুচ্ছি

পাতার মধ্যদিয়ে সূর্য জ্বলছে

গ্রীষ্মের বিকেলে কোনো বাতাস নেই

 

আমি ঘুম থেকে উঠি এবং আমার গ্রীবায় আঁচড় কাটি

নদীর জল লবনাক্ত

আমি সরুগলির শেষপ্রান্তে গিয়ে ধুমপান করি

তারপর উচ্চস্বরে নিজেকে বলি

পরিবেশ শীতল করার জন্য আজ সন্ধ্যায় বইবে বজ্রসহ ঝড়ো হাওয়া ।

(আগস্ট ১৯, ১৯৮২)

//জেডএস//
সম্পর্কিত
টি. এস. এলিয়টের 'জে. আলফ্রেড প্রুফরকের প্রেমগীতি'
আনা কাস্তিলোর কবিতা
রূপকুমারী নদীর চুম্বন
সর্বশেষ খবর
বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও ২ জনের মৃত্যু
বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও ২ জনের মৃত্যু
কোনও কিছু চাপিয়ে দিচ্ছে না ঐকমত্য কমিশন: আলী রীয়াজ
কোনও কিছু চাপিয়ে দিচ্ছে না ঐকমত্য কমিশন: আলী রীয়াজ
খুলনায় অসুস্থ নারীর পাশে দাঁড়ালো ‘স্বপ্ন’ কর্মীরা
খুলনায় অসুস্থ নারীর পাশে দাঁড়ালো ‘স্বপ্ন’ কর্মীরা
সরকার ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন আয়োজন করবে, মির্জা ফখরুলের প্রত্যাশা
সরকার ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন আয়োজন করবে, মির্জা ফখরুলের প্রত্যাশা
সর্বাধিক পঠিত
লোহিত সাগরে জাহাজে হামলায় আগুন, ডুবে যাওয়ার শঙ্কা
লোহিত সাগরে জাহাজে হামলায় আগুন, ডুবে যাওয়ার শঙ্কা
ফার্মেসিতে ওষুধের আড়ালে ‘ট্যাপেন্টাডল’ বিক্রির অভিযোগ, আটক ৫
ফার্মেসিতে ওষুধের আড়ালে ‘ট্যাপেন্টাডল’ বিক্রির অভিযোগ, আটক ৫
নদীতে ইলিশের দেখা মিলছে না কেন
নদীতে ইলিশের দেখা মিলছে না কেন
বিশেষ বিমানে গুজরাট থেকে দুই শতাধিক ‘বাংলাদেশি’কে সীমান্তে পাঠালো ভারত 
বিশেষ বিমানে গুজরাট থেকে দুই শতাধিক ‘বাংলাদেশি’কে সীমান্তে পাঠালো ভারত 
সেই ব্যাংক কর্মকর্তার খোঁজ মিলেছে
সেই ব্যাংক কর্মকর্তার খোঁজ মিলেছে