পনেরোই আগস্ট ভোরবেলা
একটি রক্তনদী এসে মিশেছিল বত্রিশ নম্বর বাংলাদেশে।
বারুদের স্রোতে কানকা ভাসিয়ে একঝাঁক লেমন হাঙর ছুটে এসেছিল
বুলেটের মতো দাঁত নিয়ে।
কদাকার শকুনের জলপাইডানা
কবরের মতো অন্ধকার বুনেছিল ভোরের শরীরে।
সাত কোটি মানুষের চৌদ্দ কোটি চোখ নিয়ে
বাংলাদেশ তখন উজানের স্বপ্নঘুমে,
বকের ডানা থেকে উড়ালবিদ্যা শিখে নক্ষত্র ছোঁয়ার নভোচারী।
ভোরের নরমে মাথা রেখে ঘুমঘোরে অচেতন আমাদের ভালোবাসাগুলো।
ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল হৃদয় নিয়ে
মায়াগন্ধে সুবাসিত আমাদের নির্মাণকলার ঋষি।
অকস্মাৎ বুলেটের নির্মম আঘাত
খানখান করে দিলো বাংলাদেশের হৃদয়!
হৃৎপিণ্ডের রক্তে লাল হলো তেরোশত নদী,
টেকনাফ থেকে তেতুলিয়ার সড়কগুলো
খরস্রোতা হতে হতে লাল করে দিলো বঙ্গোপসাগরের শরীর!
সুন্দরবনের প্রতিটি বৃক্ষের পাতা
রক্তজবা হয়ে ঝরে গেল ইতিহাসের পৃষ্ঠায়।
আলোকিত সূর্যের শরীর ঢেকে গেল শিশিরের লালে।
বাংলাদেশকে হত্যা করা হলো বাংলাদেশের বুকে!
লাল-সবুজের সফেদ কফিনে পুরে
মাটিচাপা দেওয়া হলো ত্রিশ লাখ শহিদের রক্তঋণে কেনা স্বাধীনতা।
শহর, বন্দর, গ্রাম, গঞ্জ, হাট, জনপদ, লোকালয় থেকে
রাতের কান্নার মতো ধ্বনিত হতে লাগল অস্তিত্ব হারানোর মাতম।