নিমগ্ন বিষাদে কাঁপে রক্তাক্ত চাঁদের দেহ
লোহার করাত দিয়ে যারা কেঁটেছিল দীর্ঘ রাজ্যপাট
দিঘির নীলজল, প্রিয় কণ্ঠস্বর! তারা আজো বেঁচে আছে
ভোগমগ্ন হলুদ বৃক্ষ হয়ে
সেদিন ছিল দিন ও রাত্রির এমন নিঃসীম আঁধার
যে আঁধারে ডুবেছিল সূর্য দেবতা! হে
আদিম পিতা একদিন আমাদের দিয়েছিলে মাটির কবচ
প্রিয় বর্ণমালা, আনন্দসঙ্গীত, বাঁচার পৃথিবী
বোধের ঔরস, সবুজ পত্রালি, পূর্ববাংলা
তারপর এক কালরাত্রি ছুঁয়ে যায় ঘাতকের নগ্ন উল্লাসে
সেদিন আমার শৈশব হয়েছিল আক্রান্ত
অগ্নির বিক্ষত শিখা আলোর মহিমা পিষ্ট হয়েছিল
একদঙ্গল ষাঁড়ের পায়ের নিচে
আমার স্বপ্ন শৈশব সুতীক্ষ্ন পালক অন্তর্গত শোকের নদীতে
ছিল অনন্তপ্রবাহ। সেই থেকে চিনেছি বিষের আরক
মানুষের চোখের ভেতরে কত বিষ কত হিংসা খেলা করে
দেখেছি শববাড়ি পাথরহৃদয় আগুনের ডালপালা
গুলিবিদ্ধ অসংখ্য লাশ, কুরুক্ষেত্র, উড়ন্ত আগুন
উদ্যত কালো হাত, বিষণ্ন মানচিত্র
হে পিতা! তুমি আলোর ভেতরে জেগে আছ আলো হয়ে
বৃক্ষের ভেতরে বৃক্ষ, নদীর ভেতরে নদী, স্বপ্নের ভেতরে স্বপ্ন
তুমি শতাব্দীর স্বপ্নপুরুষ, অপাপ ঋষি, সারা বাংলার কবি
অনন্তের পাখি হয়ে আমাদের দাও পালকের উষ্ণতা