X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

মিলিত হওয়ার আয়োজন

অনুবাদ : তনয় হোসনেয়ারা
২৭ জুন ২০২২, ১৫:০৫আপডেট : ২৭ জুন ২০২২, ১৬:১১

কীভাবে একজন ভালো প্রেমিক হতে হয়, সেটা মা আমাকে শিখিয়েছেন। কিছুটা অদ্ভুত শোনালেও এটাই সত্যি। কোনো নারীকে তৃপ্তি দিতে চাইলে অন্য নারীর কাছে কৌশল জেনে নিলে ব্যাপারটা সহজ হয়। নারীদের চাহিদার বিষয়ে একজন নারীই ভালো বলতে পারেন।
এসব দিক থেকে আমার মা ছিলেন অভিজ্ঞ। তার নিজস্বতা ছিল। উদারও ছিলেন। সঙ্গীদের সঙ্গে অনেক কিছুই শেয়ার করতেন তিনি। আর নিজের পছন্দ-অপছন্দের ব্যাপারেও স্পষ্ট ধারণা রাখতেন। মা নিজদায়িত্বেই ওগুলো আমাকে শিখিয়েছেন। নারীদের ব্যাপারে আমাকে নিজস্ব ধারণা গড়ে দিয়েছেন।
এসবের জন্য মাকে ধন্যবাদ। তার কারণেই এখন আমি সাগর উপকূলে জনপ্রিয় পুরুষ যৌনকর্মী হয়ে উঠতে পেরেছি। এই পেশাটাকে আমরা বলি ‘এসকর্ট’। নারীদের বেডরুমে পুরুষ এসকর্টদের খুব একটা ডাক পড়ে না। মেয়েদের তুলনায় আমাদের জন্য ব্যবসাটা কঠিন। তবে পুরুষরা যদি শর্ট পরে, খালি বুকে ফুটপাথে সার ধরে দাঁড়ায়, তখন অনেক নারীদের মনে ঝড় বয়ে যায়। এটা অনেকটা মসলার কাজ করে। এভাবেই আমাদের নানা কৌশল নিতে হয়। কৌশলী হয়েই আমরা যা বোঝাতে চাই, যা দিতে চাই সেটা বুঝিয়ে দিতে হয়। এ ধরনের কৌশলকেই বলা হয় এসকর্ট বিজ্ঞাপন।
আমি পুরো প্যাকেজ অফার করি। সম্পূর্ণ ডিনার-ডেট অভিজ্ঞতা দিতে পারি আমি। মুখে ইশারা করতে পারি। মুখ গোল করে জিহ্বা খেলানোর কৌশলটা অন্য কৌশলের চেয়ে বেশি কাজে দেয়। এতে ওদের ভেতর থেকে আহ্বান আসতে থাকে, ‘আসো, মুখের খেলা দেখাও এবং আসো এবং আবার আসো।’
সংবাদপত্র এবং ওয়েবসাইটে আমার সেবা অফার করি। সংবাদপত্রের ক্ষেত্রে খুব সংক্ষিপ্ত বক্তব্য হতে হয়—গুনে গুনে শব্দ বসাতে হয়। কোনো গড়বড় হওয়া চলে না। সে তুলনায় ওয়েবসাইট সহজ। ওখানে দরকারি টিকবক্সে টিক দিয়ে গেলেই কাজ সারা। অপশন দেওয়াই থাকে, শেষরাত, নাকি পুরো দিন? নিজের বাড়িতে নাকি অন্য কোথাও? বৃদ্ধা নারী? পুরুষ? ক্রস? ত্রিভুজ সম্পর্ক? ক্যাশ একসেপ্টেড? পে বিফোর সার্ভিস? রিপিট কাস্টমারস? এগুলো বেছে বেছে টিকচিহ্ন দিলেই হয়।
আমার ফোন শব্দ করে উঠল। বই থেকে চোখ সরিয়ে দেখলাম একটি সাইট থেকে নোটিফিকেশন এসেছে। ওটা একটা রিকোয়েস্ট। আমি উঠে গিয়ে কেটলি অন করে দেই, তারপর কম্পিউটার খুলি। এখন সকাল সাতটা বাজে। রিকোয়েস্টটা যে পাঠিয়েছে, সে সম্ভবত সকাল-সকাল ঘুম ভেঙেই সাইট ব্রাউজ শুরু করে দিয়েছে। আমাদের ব্যবসায় এই নারীদের ‘সকালের শান্তি’ বলে ডাকা হয়।
নারীরা সাধারণত এসব সেবা নিতে লজ্জা পায়। ওরা পুরুষ গ্রাহকদের মতো না। আমার যেসব বন্ধু নারীদের কাছে যায়, এরা বন্ধুদের সঙ্গে ওসব বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলাপ করে। নিজেদের অভিজ্ঞতা বলতে বলতে হাসাহাসিও করে।
মা আমাকে খুব দরকারি একটি বিষয় শিখিয়েছেন—কখনো কখনো গ্রাহক যা আশা করে, সেটা মুখ ফুটে বলতে পারে না। এ ক্ষেত্রে গ্রাহককে সহযোগিতা করতে হয়। নিজের মতো করে বৈচিত্র্য তৈরি করে ওদেরকে পছন্দ করে নিতে বলতে হয়। জিজ্ঞেস করতে হয়, এটা ভালো মনে হচ্ছে তো? ওটা ভালো হয়েছে তো? ওরা মুখ ফুটে বলার আগেই ওদের সামনে বৈচিত্র্য দাঁড় করাও। তোমার শরীরের কোথায় স্পর্শ করবে, প্রয়োজনে সেটিও দেখিয়ে দাও।
আমি আমার ল্যাপটপের সামনে বসি। ছোট্ট জানালা দিয়ে সাগর দেখা যাচ্ছে। গরম বাতাসে ভেসে আসা শ্যাওলার গন্ধ আমার ভালো লাগে। গন্ধটা খুব শান্ত। শীত শেষ হয়ে আসছে, এই মৌসুমেই আমি বেশি ব্যস্ত থাকি। ঠান্ডা দিনে সবারই একটু আদর দরকার হয়।
ল্যাপটপের পর্দা এদিক ওদিক নেচে স্থির হলো। আমি পাসওয়ার্ড দিলাম। একটিমাত্র ম্যাসেজ এসেছে। গতকাল থেকে লোকজন আমার প্রোফাইল দেখেছে বিশবার। অবাক হলাম। ভাবলাম একটা নতুন প্রোফাইল পিকচার দেওয়া দরকার। এতে গ্রাহকের আগ্রহ বাড়তে পারে। কিন্তু নিশ্চিত করে কিছুই বলা যায় না। তারচেয়ে বরং এখন আমার জন্য যে অপেক্ষা করে আছে তার ডাকে সাড়া দেওয়াই ভালো। এই বিষয়টিতে সবসময় মা গুরুত্ব দিতেন।
হাই, আমি চল্লিশ বছর বয়সি নারী। এভাবে কখনো কাউকে ডাকিনি। কিছুদিন হলো স্বামীকে ছেড়ে দিয়েছি। বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর সময়টা উদযাপন করতে একবার অভিজ্ঞতা নিতে চাচ্ছি। আমার হাতে সময় আছে। তোমার সময় হলে রিপ্লাই করো। আমি বৃহস্পতিবার রাতটা আশা করছি।—টিনা।
বয়স্ক নারী আমার পছন্দ। এরা একবার আমার সঙ্গ পেলে বারবার ডাকে। এরা খুব সহজ হয়, অনেককিছুই পরোয়া করে না। কেবল এগুলোর কারণেই এই নারীদের আমি পছন্দ করি, সেটা নয়। কিছু সিনেমা দেখলে এমনিতেই বয়স্কদের প্রতি আস্থা তৈরি হয়। এই নারীরা কমবয়সি যেকোনো নারীর তুলনায় অনেক ভালো করেই চাইতে পারে। এরা নিজেদের চাহিদার ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা রাখে। নিয়মকানুন জানা থাকে। কখন কি করা উচিত সেটাও জানে। আর আমি চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি—এদেরকে অনেক সময়ই শরীর সম্পর্কে নতুন কিছু শেখানোর চেষ্টা করি, যেটা এরা আশাও করে না। অনেকসময় এরা যা আশা করে, সেটা চাইতে পারে না, ঠিক করে নির্বাচনও করতে জানে না। আমি বুঝতে পারি, তাদের কেবল নতুন একটা পদ্ধতি দরকার।
আমি নিয়মিতই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে যাই। মা সবসময়ই বলতেন, এটি কাজের অংশ। কাজের মতোই রুটিন চেকআপকে গুরুত্ব দিতে হবে। রাতে কাওকে ঠান্ডা করতে হলে নিজেকে ভালো থাকতে হবে। গত মাসে আমি শেষবার চেকআপে গিয়েছিলাম। আমার নিয়মিত ডাক্তার তখন ছিলেন না। তিনি দূরে কোথাও গিয়েছিলেন। তাই মুখ হাঁ করা, কান পরীক্ষা করার মতো একটা সাধারণ চেকআপ সেরে এলাম।
তখন অবশ্য একটা শঙ্কা কাজ করছিল। কিন্তু অন্য কোনো ডাক্তারের কাছে যেতে মন সায় দেয়নি। যে ডাক্তারের কাছে নিয়মিত যাই, তার কাছেই স্বাচ্ছন্দ্য লাগে। তিনি যত্ন করে আমাকে টিট করেন। ভালো করেই জানেন আমার অণ্ডকোষ কিভাবে ধরতে হয়।
ইদানীং আমার কিছুটা ক্লান্তি লাগে। না, নিয়মিত যে একঘেয়ে কাজগুলো করছি, ওসবের জন্য নয়। তবে কেন ক্লান্তি লাগছে, সেটা নিয়ে খুব একটা ভাবতেও যাইনি। সারাটা জীবন পূর্ণ গতি নিয়ে কেউ চলতে পারে না। কারো গাড়িতে কেবল একটা এক্সেলেটর থাকুক, এটা কেউ চায় না। বরং সবারই হ্যান্ডব্র্যাকসহ জরুরি কিছু পয়েন্টের দরকার হয়। ভাবছি এবারের কাস্টমারের কাজটা সেরে রিফ্রেশমেন্টের জন্য এক-দুই সপ্তাহ বিরতি নেব। মা সবসময় বলতেন—বিশ্রাম খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্রাম না হলে কাজের আনন্দ থাকে না। তখন নারীদের ছড়ানো পায়ের মাঝখানে যেতে বিরক্তি লাগবে।
আমি নিজেকে ফিট রাখার চেষ্টা করি। আমার শক্তপোক্ত একটা শরীর আছে। ওই শরীরটা নগ্ন মোমের মতো নয়। অন্য পুরুষদের মতো ওভাবে কাজ করি না আমি। নিজেকে প্রাকৃতিক রাখতে পছন্দ করি। আমার মনে হয়, এ কারণেই কাস্টমাররা আমার কাছে আরাম পায়। ওরা আমাকে নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকে। ভাবে—যার কাছ থেকে সেবা নিচ্ছে সে একঘেয়ে নিয়মেই দিন পার করে দেয় না। আমি দেখতে যেমন, কাজে তারচাইতেও বেশি। শুধু বেশিই নই, চমৎকার।
টিনাকে জানিয়ে দিলাম, তার বাড়িতেই মিলিত হওয়ার আয়োজন করতে। আমিও প্রস্তুত হতে থাকলাম। নিয়মিত দৌড়াতে থাকলাম। ব্যায়াম করি। পাথরে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখি। এতে মন শান্ত হয়। ঠান্ডার মধ্যে দৌড়ানো কঠিন। তবুও দৌড়াতে দৌড়াতে ক্লান্ত হয়েই থামি।
আমি তার দরজায় বেল চাপি। সে দরজা খোলে। ডালা একটু ফাঁকা করে দাঁড়ায়। নিজের কেনা পণ্যটাকে যাচাই করতে থাকে। তাকে কিছুটা নার্ভাস, আবার কিছুটা কৌশলী দেখাচ্ছে। সম্ভবত আমাকে প্রোফাইল পিকচারের সঙ্গে তুলনা করছে। আমি সবসময় ওটা আপডেট রাখার চেষ্টা করি। শুক্রবারের লেবেল লাগানো সালাদ সোমবারে খেতে কেউ পছন্দ করে না।
মেয়েটার লম্বা গড়ন। হালকা বাদামি চুল আলতো করে বেঁকে গেছে। ওপরের দিকে ঢিলেঢালা সাদা ব্লাউজ, নিচে গাঢ় রঙের জিন্স। একটু পেছনে সরে গিয়ে এপার্টমেন্টে ঢোকার জায়গা করে দিলো আমাকে। এপার্টমেন্টটা মনোরম। পুরোটাজুড়ে খেলা করছে নীলাভ ছায়া। নীল দিয়েই সাজানো। একপাশের দেওয়াল গভীর নীল, এর মধ্যে ধূসর রঙ। দেখে মনে হয়, আকাশ ভেঙে পড়েছে। বেলকনিতে পাহাড়ের দৃশ্য, কিছুটা অন্ধকার।
‘দেখতে সুন্দর’, নীরবতা ভেঙে বললাম
‘হুম। আমার পছন্দের।’
‘অনেকদিন ধরে আছ এখানে?’
সে ইতস্তত, সম্ভবত চিন্তিত। বেশি কিছু বলা ঠিক হবে কি না ভাবছে।
‘বেশিদিন হয়নি। ডিভোর্সের পর থেকে।’
আমি তার কাছাকাছি যেতে শুরু করলাম। সে লজ্জা পাচ্ছে। এর পর দীর্ঘ একটা বিরতি।
‘প্রথম কয়েক মিনিটে এমনই হয়, অদ্ভুত একটা অনুভূতি।’ বললাম আমি। ‘আমাকে একটি অন্ধকার অধ্যায় হিসেবে ভাবার চেষ্টা করো।’
সে ঘাবড়ে গিয়ে হাসল এবং রান্নাঘরের দিকে পায়চারি করতে থাকল।
‘তুমি কি ওয়াইন পছন্দ করো?’
‘পছন্দ করি, পরিমিত। কিন্তু তুমি আরো কাছে আসতে পারো।’
সে দ্বিধায় পড়ল। নিজেকে পুরোপুরি ঢেলে দিতে তারও এক গ্লাস ওয়াইন দরকার। পরে এক গ্লাস ওয়াইন নিয়েই সে তার বেডরুমে চলে এলো। সোফায় বসল, আমার মুখোমুখি।
‘তোমার ব্যাপারে কিছু বলো।’ আমি বললাম।
‘আচ্ছা, আমার রিকোয়েস্ট থেকে যা জেনেছ, এর বাইরে কি আরো কিছু জানার কৌতূহল আছে? সত্যি?’ 
‘আচ্ছা, আমি তো জানি তোমার একজন ছিলো। দুইটি সন্তান আছে। আর চেকলিস্টে বিছানায় তোমার পছন্দের ব্যাপারে যা যা জানিয়েছ।’
সে লজ্জায় লাল হয়ে গেল। সেই লাল রঙ ছড়িয়ে গেল কান পর্যন্ত।
‘তুমি তো তাহলে সবই জানো।’
‘তুমি কি করো, সে ব্যাপারে টেক্সট-এ কিছু জানাওনি?’
‘আমি একটা ক্লিনিকে নার্সের কাজ করি।’
‘অনেকের কল্পনার পেশা।’
কিছুটা টিজ করে, তবে সতর্কভাবে তার দিকে তাকিয়ে হাসলাম। পেশা পরিবর্তনের আগে আমার মাও নার্স ছিলেন। দুই পেশাতেই তিনি যত্নশীল, তবে কঠোর ছিলেন। টিনার ব্যাপারে আমি আশ্চর্য হলাম। সে তার গ্লাসটি নামিয়ে রেখে আমার পাশের আসনে এসে বসল।
‘কী কী উপভোগ করতে তোমার ভালো লাগে, বলো তো?’
সে বলছে এবং আমি তার শরীর খুঁটিয়ে দেখছি, তার উত্তেজনা বাড়ানোর জন্য। উত্তেজনা বাড়ানোর এই পদ্ধতিটা মা আমাকে শিখিয়েছেন।
টিনার কাঁধ উঁচু হয়ে এলো। পা থেকে জুতাগুলো ছুড়ে ফেলল। ওগুলোই বেডরুমে আমার কাজ শুরু করার ইঙ্গিত। মা সবসময় বলতেন, উত্তেজিত নারী মানেই উত্তেজিত যোনি। হ্যাঁ, মা আমার সঙ্গে এতটাই খোলামেলা ছিলেন।
টিনার পা দুটো সুন্দর। নরম, মসৃণ। কোমল মুক্তার মতো রঙ। আমি অবাক হলাম, হাঁটতে গিয়ে এমন সুন্দর পা দুটোকে সে কি করে খাটায়! আরো কাছে গেলাম। তার কাঁধ দেখতে লাগলাম। সে আরো উত্তেজিত হয়ে এলো। এবার প্রায় ছুঁইছুঁই অবস্থা। ঘাড়ের কাছে শ্বাস ওঠানামা করছে। সে বড় করে শ্বাস ছাড়ল।
‘থেমো না, বলতে থাকো। আমি শুনছি।’
‘আমি ঠিক থাকতে পারছি না।’
‘সহজভাবে নাও। কথা চালিয়ে যাও। চোখ বন্ধ করো। ম্যাসেজ উপভোগ করো।’
‘ওহু, তার আগে তোমাকে পে করে নেওয়া উচিত।’
‘ওটা নাহয় পরেই হোক।’
যখন আমি প্রথম কাজ শুরু করি, তখন লেনদেনের সময় বিব্রত হতাম। কিন্তু ধীরে ধীরে এতে অভ্যস্ত হয়ে উঠি। সে উঠে দাঁড়িয়ে টেবিলে রাখা একটি ম্যাগাজিনের দিকে এগিয়ে গেল। ওটার পৃষ্ঠা খুলে একটি খাম তুলে নিল।
‘ওখানে কী লুকিয়ে রেখেছ?’
‘সম্ভবত আমাকেই’
আমি কখনো টাকা গুনে দেখি না। ওদেরকে অবিশ্বাস করছি, এমন ভাবনা ওদের মনে তৈরি হতে দিতে চাই না। আমার পারিশ্রমিক তো ঠিক করাই থাকে। খাম দেখেই বুঝে নিতে পারি, ওটা পরিপুষ্ট আছে কি না।
‘ধন্যবাদ।’ খামটা জ্যাকেটের পকেটে রাখতে রাখতে বললাম।
‘আশা করছি, তোমাকেও ধন্যবাদ দিতে পারব।’
‘ওহ, সেটা পারবে।’
এই পেশায় আমি কিভাবে এসেছি? দক্ষতার মাধ্যমে? এটাই আমি মনে করতে চাই। কিন্তু না, এর সম্পূর্ণটাই মায়ের অবদান। তিনি আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন। তিনি মানুষকে ভালোবাসার মতো করে ভালোবাসতেন। তিনি জানতেন ভালোবাসার একটি ভালো উপায় হলো যৌনতা। আমি কখনো এটাকে প্রতারণা বা নোংরা পেশা হিসেবে ভাবিনি। মা এই পেশাকে আমার কাছে সম্মানজনক বানিয়ে দিয়েছেন। তিনি আমাকে এর পথ-ঘাট এবং কিছু কৌশল শিখিয়েছেন। তার নারী ও পুরুষ গ্রাহক ছিলো। তিনি যেভাবে শিখেছিলেন, সেভাবেই নিজের মধ্যে রেখেছিলেন। নারীর শরীর সম্পর্কে তিনি আমাকে সব শিখিয়েছেন। কারো সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার সময়ও মা আমার দিকে তাকিয়ে থাকতেন। তার জানা বিষয়গুলোর বর্ণনা করতেন। আমি অবাক হতাম।
টিনার বেডরুমটিও তার লাউঞ্জের মতো মনোরম। সবুজাভ পাথুরে রঙের দেয়াল। ধূসর থিম। এই রঙটা হয়তো তার অথবা তার এই বাড়ির মালিকের পছন্দ। আমার ধারণা বাড়িটি টিনার নিজেরই। কিন্তু নিশ্চিত করে কিছুই ধারণা করা যাচ্ছে না।
এরপর সে বিছানায় এসে বসল। আমি আমার কাজ শুরু করলাম। মা আমাকে শিখিয়েছেন কিভাবে মন টেনে নিতে হয়। কারো দিকে তাকালে তাকানোর মতো করেই তাকাতে হয়। যতক্ষণ সে সাড়া না দেবে, ততক্ষণই তাকিয়ে থাকতে হয়। আমিও তাকিয়ে রইলাম। সবসময় আমি ওভাবেই তাকিয়ে থাকি। দেখলাম, সেও তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
আমি শার্ট খুললাম। সে লজ্জা পাচ্ছে। কিন্তু যথেষ্ট আগ্রহও দেখা যাচ্ছে।
‘এবার তোমার পালা?’
ঝটপট সাড়া দিলো সে। মাথার ওপর দিয়ে ওর শার্টটাও তুলে নিল। বেরিয়ে এলো শরীরের নরম অংশটুকু। ওপরে সাদা রঙের সুতির বন্ধনী সেঁটে আছে।
‘পোশাকে জাঁকজমক রাখিনি। ভয় লাগছে, তুমি আবার কি মনে করো।’
‘এটা খুব দরকারি না। এই একটু সময়ের জন্য তোমার দীর্ঘদিনের অভ্যাসের পোশাক পরিবর্তন করাটা ঠিক না। সে যাকগে, দাঁড়াও দেখি।’
সে উঠে দাঁড়াল। আমি শুরু করলাম। তার কাঁধ এবং হাতে চাপ দিতে থাকলাম। বুকের চারপাশে হাত ঘুরালাম। সে উত্তেজিত হতে থাকল।
‘আমি এখানেই থেমে থাকতে চাচ্ছি না।’ বলল সে।
‘তাহলে থেকো না।’
সে ঘুরে ঘুরে আমাকে চুমু খেতে লাগল। তারপর থেমে গেল।
‘ওটার কোনো নিয়ম-কানুন আছে নাকি? আমার জানা নেই।’
‘নিয়ম?’
‘নিয়ম না থাকলে, তুমি এমন আড়ষ্ট হয়ে আছ যে?’
‘ওহহো ভালো কথা বলেছ, আমি কোনো সুন্দরী নারী নই। তুমি যদি আমাকে চুমু খেতে চাও, তাহলে খাবে। এছাড়া অন্য কোনো নিয়ম তো নেই। যদি আমাকে থামাতে চাও, তাহলে কেবল মুখ ফুটে বলবে—থামো। যদি চালিয়ে যেতে ইচ্ছে করে, আমাকে বলবে চালিয়ে যাও। আমার নিয়ম একটিই, আমাকে কনডম পরতে হয়।’
‘বেশ ভালো।’
তার কাঁধ আরো নেমে এলো এবং একটি দীর্ঘশ্বাস বের হলো।
‘ঠিক আছে তাহলে।’
সে ঝুঁকে এসে আমাকে চুমু খেল। আমার বুক নিজের দিকে টেনে নিল। আমি বন্ধনীর ক্লিপ খুললাম এবং কাপড়ের টুকরোটাও খুলে নিলাম। এরপর ওকে ভালো করে দেখার জন্য আবার দাঁড়ালাম। যেমন কমনীয়, তেমনি শক্তপোক্ত শরীর।
‘তুমি সুন্দর।’
‘সব মেয়েকেই এমনটা বলো তুমি। বাজি ধরতে পারি।’
‘আমি একজনের সঙ্গে থাকলে, অন্যজনকে নিয়ে ভাবি না।’
‘তুলনা আনন্দকে চুরি করে নেয়।’
আমার মা এই কথাটা বলতেন। আমি নিজের ভেতর তলিয়ে গেলাম। সে আমাকে ঘিরেই রইল। পেন্টের জিপার খুলল। আমার অন্তর্বাস এবং জিপারে ওর হাত ঘুরতে থাকল।
‘ভালো কৌশল।’
‘তোমার মনে রাখা দরকার, আমি একজন নার্স। আমি কেবল তোমার পুরুষাঙ্গই প্রথম স্পর্শ করছি না।’
উত্তেজনার সময় হেসে ফেলা আমার কাছে নতুন নয়। এখানে দুজনেই দাঁড়িয়ে আছি, দুজনের পরনেই অন্তর্বাস, আমার একটি আঁটশাট নীল রঙের বক্সারের অন্তর্বাস। তারটা সাদা রঙের সাধারণ সুতির।
এখন কিছু একটা করার সময়। কিন্তু কি করা উচিত, সেটা ভুলে গেলাম কয়েক সেকেন্ডের জন্য। বেশ অনেক বছর ধরেই এমন ভুল আমার হয় না। ওর হাত চলছে। হাতের আলতো ছোঁয়ায় আমার অণ্ডকোষ ব্যথায় টনটন করে উঠল। নিজেকে উজাড় করে দিতে পারছি না। অথচ একটু পরই আমাদের একেবারে নগ্ন হতে হবে। আমি সরে দাঁড়ালাম।
‘তাহলে, এখানে আমরা...’ সে বলল।
‘তুমি প্রস্তুত তো?’
‘আর কখনো প্রস্তুত হতে পারব বলে মনে হয় না।’
আমি তার দিকে এগিয়ে গেলাম। কিন্তু সে আমার বুকে হাত দিয়ে ঠেকিয়ে দিলো।
‘চলো একসঙ্গে করা যাক।’
‘আমিও এটাই চাচ্ছিলাম।’ আমি হাসলাম।
‘না, আমি বলছিলাম কি, চলো ওই দুটোকে একসঙ্গে করি। একইসাথে। তোমার ওই জিনিসটা দেখালে আমারটাও দেখাব।’
‘ঠিক আছে।’
‘তুমি কি প্রস্তুত?’
‘তিন’
‘দুই’
‘এক’
দুজনেই প্যন্ট নামিয়ে নিলাম এবং মাথা নিচু করে দেখলাম। হাসতে হাসতে গা ঘেঁষে পায়চারি করতে থাকলাম। সে আমাকে টেনে নিল। এরপর আমার দুই পায়ের মাঝখানে জায়গা করে নিল। অণ্ডকোষ পিষতে থাকল। আমি চোখ বন্ধ করলাম। একইসঙ্গে আরাম আর যন্ত্রণার অনুভূতি। সবই গোপন করে রইলাম।
‘ও মাই গড’, সে ফিসফিস করে উঠল।
‘এখনো আমাদের শুরুটা হচ্ছে না।’ ওর হাতের স্পর্শে ভীষণ তৃপ্তি পাচ্ছি এমন ভাব নিয়ে বললাম।
‘না... আমি...’ সে পেছনে সরে গেল। ‘আমি একটা পিণ্ডের স্পর্শ পেলাম।’

জেনিফার থর্প : দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনের লেখিকা। তিনি নারীবাদী লেখিকা হিসেবেই পরিচিত। তবে নারীদের জন্য কাজ করতে গিয়ে উকালতির পেশাতেও যুক্ত। এই গল্পটি তার ইংরেজি গল্প ‘দ্যা লাম্প’ থেকে বাংলায় করা হয়েছে।

/জেডএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ফিরেই ফর্টিসকে বিধ্বস্ত করলো মোহামেডান
ফিরেই ফর্টিসকে বিধ্বস্ত করলো মোহামেডান
লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু
লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু
রাশিয়ায় বন্ধ হলো জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থার কার্যক্রম
রাশিয়ায় বন্ধ হলো জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থার কার্যক্রম
ওজন কমিয়ে সাকিব পুরো ফিট, সন্তুষ্ট সহকারী কোচ
ওজন কমিয়ে সাকিব পুরো ফিট, সন্তুষ্ট সহকারী কোচ
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা