X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৬ বৈশাখ ১৪৩১

চিরকালীন সাহিত্যের প্রবণতা

মোহাম্মদ নূরুল হক
০৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:৪৯আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:৪৯

সাহিত্যের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত পাঠকচিত্তে আনন্দ দান, দ্বিতীয় লক্ষ্য আনন্দের ছলে জ্ঞান দান। সে সাহিত্যপাঠে আনন্দ নেই, সেই সাহিত্য যতই সমাজের জন্য উপকারী হোক, পাঠকহৃদয় তাতে বিলোড়িত হয় না। এজন্য সাহিত্যিক মাত্রেরই উদ্দেশ্য থাকে—তাঁর সৃষ্টিকর্মকে পাঠকহৃদয়ে দোলা দেওয়ার উপযুক্ত করে তোলা। এরও বেশি আগ্রহ থাকে—তাঁর নিজেকে প্রকাশের। অর্থাৎ সাহিত্যিকের মনের গোপন বাসনা এই—তাঁর সাহিত্যকর্মের অন্তত দুটি দিক থাকবে। প্রথমত, উপস্থিতকালে পাঠক-হৃদয়কে আন্দোলিত করা, দ্বিতীয় উত্তরকালেও তার সৃষ্টিকর্মের স্থায়িত্ব বিষয়ে দৃষ্টিপাত করা। যারা এই দুটি কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন করেন, সমকাল তাঁদের যেমন ভালোবেসে গ্রহণ করে, উত্তরকালও তেমনি সমীহ করে। কিন্তু যাঁরা এই দুটি কাজের কোনোটিই সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে পারেন না, অথবা করার সাধনাও করেন না, সমকাল তাঁদের স্বীকৃতি দেয় না। মহাকাল মনেও রাখে না।

আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, সমকাল যাঁকে মূল্যায়ন করে না, মহাকালও তাঁকে মাটিখুঁড়ে আবিষ্কার করতে যায় না।  কারণ সাহিত্যকর্ম হলো স্থান-কাল-পাত্রের পরম্পরাগত প্রপঞ্চ। যেখানে পরম্পরার সুতো ভোকাট্টা ঘুড়ির মতো কেটে যাবে, সেখানে সাহিত্যিকের নামও কালের র‌্যাঁদার টানে ঘষে-মেজে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তাই সাহিত্যিক মাত্রকেই তাঁর কাজের ধরন, ধর্ম ও প্রকৃতি সম্পর্কে সচেতন হতে হয়। সাহিত্যিক নিজেই যখন নিজের কর্ম সম্পর্কে বিস্মৃতির গহ্বরে ডুবে যান, তখন তার সৃজনকর্মও গভীর সমুদ্রের তলদেশ থেকে মাথা উঁচু করে জলের উপরিভাগে ভেসে ওঠার দুর্মর বাসনা পোষণ করতে পারে না। তাই সাহিত্যিককে অবশ্যই স্বীয় দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হতে হয়।

সাহিত্যিককে মনে রাখতে হয়, তাঁর উদ্দেশ্য হতে হবে দেশ-জাতি-বিশ্বের কল্যাণে সাহিত্য সৃষ্টি। সেই কল্যাণ কখনো আনন্দ দান, কখনো জ্ঞান দান। এই প্রসঙ্গে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৩৮-১৮৯৪)-এর উক্তি প্রণিধানযোগ্য। ‘বাঙ্গালার নব্য লেখকদিগের প্রতি নিবেদন’ শীর্ষক এক প্রবন্ধে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘যদি মনে এমন বুঝিতে পান যে, লিখিয়া দেশের বা মনুষ্যজাতির কিছু মঙ্গলসাধন করিতে পারেন, অথবা সৌন্দর্য্য সৃষ্টি করিতে পারেন, তবে অবশ্যই লিখিবেন। যাঁহারা অন্য উদ্দেশ্যে লেখেন, তাঁহাদিগকে যাত্রাওয়ালা প্রভৃতি নীচ ব্যবসায়ীদিগের সঙ্গে গণ্য করা যাইতে পারে।’ (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বঙ্কিম রচনাসমগ্র (সম্পাদনা: তপন রুদ্র) সালমা বুক ডিপো, ঢাকা, ২০২০, পৃ. ২৪৬)

বঙ্কিমবাণীকে গুরুত্বহীন ভাবার কোনো অবকাশ নেই। আমাদের মনে রাখতে হবে, বঙ্কিম বাংলা উপন্যাসের আদি কুশীলব, প্রবন্ধেরও আদি কুশীলবদের একজন। তাঁর হাতেই বাংলা ভাষায় প্রথম সার্থক রোমান্টিক উপন্যাস ‘কপালকুণ্ডলা’ (১৮৬৬), প্রথম সার্থক মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস ‘বিষবৃক্ষ’ (১৮৭৩), প্রথম সার্থক সামাজিক উপন্যাস ‘কৃষ্ণকান্তের উইল’ (১৮৭৮) রচিত হয়েছে। তাঁর উপস্থিতকালের মতোই এসব উপন্যাস সৃষ্টির শতবর্ষ পরেও বাঙালি পাঠক সমান সাদরে গ্রহণ করেছে। তাঁর উপন্যাসগুলো কেবল অ্যাকাডেমিক প্রয়োজনেই পঠিত হয় না। এসব উপন্যাস সাধারণ মনোযোগী পাঠক থেকে শুরু করে সমালোচকরাও সমান আগ্রহ-গুরুত্বের সঙ্গে পাঠ করেন। সুতরাং তাঁর উপদেশ বা পরামর্শকে নিতান্ত সাধারণ রচনা গণ্যে উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই।  

এখন প্রশ্ন উঠতে পারে—কোন ধরনের সমকাল পেরিয়ে উত্তরকালেও সমান পাঠকপ্রিয় হয়? তার আগে প্রশ্ন উঠতে পারে—পাঠকপ্রিয় সাহিত্য আর সমালোচকপ্রিয় সাহিত্য সবসময় এক হয় কি না। পাশাপাশি এই প্রশ্নও উঠতে পারে। জীবনের জটিল দিকস্পর্শী ও শিল্পের সমস্ত শর্তপূর্ণ সাহিত্য চিরকালের সাহিত্য হিসেবে টিকে যায়, নাকি জীবনের করুণ অথবা রোমান্টিক কোনো দিকস্পর্শী কাহিনি বা পদ্য উপস্থিতকাল পেরিয়ে উত্তরকালেও পৌঁছে যায়? আমরা ধীরে ধীরে প্রশ্নগুলোর জবাব খোঁজার চেষ্টা করব। সব প্রশ্নের সরল উত্তর হয়তো পাব না, কোনোটার উত্তর প্রচ্ছন্ন থাকবে, কোনোটার উত্তর হবে রহস্যময়।

চিরকালীন সাহিত্যের বড়গুণ—যুগযুগ ধরে তার মানুষের মুখে মুখে ফেরে। ফিরতে ফিরতে বর্ণনার ভঙ্গি-ভাষাভঙ্গি হয়তো বদলে যায়। কিন্তু মূলবার্তার হেরফের হয় না। ভারতচন্দ্র রায়গুনাকরের ‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে’, চণ্ডীদাসের ‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’, আব্দুল হাকিমের ‘যে জন বঙ্গেতে জন্মি, হিংসে বঙ্গবাণী/সে-সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন’ জানি।’ বঙ্কিমচন্দ্রে চট্টোপাধ্যায়ের ‘কপালকুণ্ডলা’র ‘পথিক তুমি কি পথ হারাইয়াছ’ কিংবা ‘তুমি অধম তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন?’ মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘মেঘনাদবধকাব্য’-এর ‘জন্মভূমি রক্ষা হেতু কে ডরে মরিতে/যে ডরে সে ভীরু মূঢ়, শত ধিক তারে’ কিংবা ‘রাবণ শ্বশুর মম, মেঘনাদ স্বামী/আমি কি ডরাই সখি ভিখারী রাঘবে?’ কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাসের ‘মহাভারতে’র ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দেব সূচাগ্র মেদিনী’, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘জীবিত ও মৃত’ গল্পের ‘কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিল সে মরে নাই’, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘জলসাঘর’ গল্পের, ‘প্রথম ইনাম দেওয়ার অধিকারী গৃহস্বামী’ কিংবা ‘কবি’ উপন্যাসের ‘জীবন এত ছোট ক্যানে?’ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পদ্মানদীর মাঝি’র ‘ঈশ্বর থাকেন ওই গ্রামে, ভদ্রপল্লীতে। এখানে তাঁহাদের খুঁজিয়া পাওয়া যাইবে না’ এমন সুপ্রচুর উদাহরণ দেওয়া যাবে, যা যুগ যুগ ধরে মানুষের মুখে মুখে ফিরছে।  কিন্তু কেন এসব পঙক্তি বা বাক্য যুগ-যুগান্তর ধরে মানুষের মুখে মুখে ফিরছে? এর উত্তর সম্ভবত এমন যে, এসব পঙক্তি-বাক্যে মানুষের জীবনের কথা, মনের কথা প্রকাশিত হয়েছে। সাধারণ মানুষ যা বিশ্বাস করে এবং যা বলতে চায়, কিন্তু কীভাবে বলবে, তার কৌশল জানে না; সেইসব কথা যখন সাহিত্যিকের রচনায় পায়, তখন তা প্রাতঃস্মরণীয় হয়ে ওঠে।

এবার নতুন প্রশ্ন উঠতে পারে, তাহলে কেবল মানুষের মনের কথা বললেই তা স্মরণীয় আর চিরকালের সাহিত্য হবে? সাহিত্যিকের নিজের মনের কথা চিরকালের হতে পারবে না? এই দুটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে সাহিত্যিকের অভিরুচি, তার সামাজিক অবস্থান, ভাষাশৈলী, জীবনবোধ, দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি দৃষ্টিপাত করতে হবে। রুচিশীল সাহিত্যিক যখন কোনো সাহিত্যকর্ম রচনা করবেন, তখন সেই সৃষ্টিতে তাঁর নিজের ব্যক্তি মনের অভিব্যক্তি প্রকাশ পাবে। সঙ্গে থাকবে তাঁর ব্যক্তিত্বের ছাপ। নিজের ব্যক্তিত্বের স্বাক্ষর রাখার স্বার্থেই সামাজিক অবস্থান বিস্মৃত হন না। জীবন-দৃষ্টিভঙ্গির চিহ্ন রাখাসহ ভাষার ওপর নিজের দখল প্রমাণের লক্ষ্যে তিনি নিজস্ব ভাষাশৈলীও গড়ে তোলেন। ফলে এই ধরনের লেখক নিজের উপস্থিতকালের ঘটনাপ্রবাহকে গল্পে-উপন্যাসে-নাটকে-কবিতায়-ছড়ায় রূপ দান করলেও তা হয়ে ওঠে কালোত্তর। এই কথা বলার অর্থ এই যে, রুচিবান-শক্তিমান লেখক সবসময়ই সুরুচির প্রতিই দৃষ্টি রাখেন। নিজের সাহিত্যকর্মকে রস-জ্ঞানপিপাসু পাঠকের মনের খোরাক করে তোলেন। কিন্তু স্থূল মনোরঞ্জনের উপকরণে পর্যবসিত করেন না। তিনি পাঠকের রুচি তৈরি করেন, কোনোভাবে গণরুচির জোগান দেন না। কিন্তু ক্ষণকালীন সাহিত্য সবসময় গণরুচির জোগান দিয়ে যায়।

সাহিত্যিককে মনে রাখতে হয়, কেবল কল্পনা ও অভিজ্ঞতার সুষম বিন্যাসেই সাহিত্যকর্ম সম্পন্ন হয় না। এর সঙ্গে যুক্ত করতে হয় সমাজ-রাষ্ট্র-ধর্ম-দর্শনের অনুষঙ্গও। সামাজিক দায় অনুভবের ছাপ রাখতে হয় সৃষ্টিতে। ব্যক্তিকে হয়ে উঠতে হয় সমষ্টির প্রতিনিধি। যিনি সমষ্টির প্রতিনিধি হয়ে উঠতে পারেন, তাঁর সৃষ্টি জনগণের সম্পদে পরিণত হয়ে যায়। একবার যে সৃষ্টি জনগণের সম্পদে পরিণত হয়, তা সাধারণত কয়েক যুগেও বিস্মৃতির গহ্বরে ডুবে যায় না। 

আরেকটি কথা, সমাজ পরিবর্তনে যে সাহিত্য দৃশ্যমান ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়, সেই সাহিত্য কালোত্তীর্ণ হতে বাধ্য। এই কথা সহজেই অনুমান করা যায়, বাল্মিকীর ‘রামায়ণ’ এবং কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাসের ‘মহাভারত’ তাঁদের স্ব-স্ব কালের সমাজ পরিবর্তনে বিপুল ভূমিকা পালন করেছে। বিশেষত, ধর্ম-অধর্ম, ন্যায়-অন্যায়ের বোধ জাগ্রত করতে এবং ধর্মের প্রতিষ্ঠা ও অধর্মের বিনাশে এই দুটি মহাকাব্য দুই রচয়িতা মহাকবির জীবদ্দশায় সমাজ পরিবর্তন ও বিনির্মাণে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছিল বলেই এই দুই কবির প্রয়াণের কয়েক হাজার বছর পরও লোকে তাঁদের ঋষিতুল্য সম্মান করে। একইসঙ্গে কালের বিবর্তনে ‘রামায়ণ’ ও ‘মহাভারত’ সাহিত্যকর্মের পাশাপাশি ধর্মীয় গ্রন্থরূপেও সমাজে সমাদৃত। বাংলা ভাষার দিকে তাকালেও অনুরূপ সাহিত্যকর্মের দৃষ্টান্ত মিলবে। সহমরণ বিলোপ ও বিধবাবিবাহ প্রচলনে রাজারামমোহন রায় ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর যে-সব প্রবন্ধ-নিবন্ধ রচনা করে গেছেন, শতবর্ষ পরেও হিন্দুনারীদের জন্য সেগুলো রক্ষাকবচ হয়ে আছে। চিরকালীন সাহিত্যের শক্তি এখানেই।

এতক্ষণ চিরকালীন সাহিত্যের গুণ ও ভূমিকা নিয়ে কিছু কথা বলার প্রচেষ্টা করেছি। এবার ক্ষণকালীন সাহিত্য সম্পর্কে দুই-একটি কথা বলতে চাই। ক্ষণকালীন সাহিত্য ক্ষণকালেই লীন হয়ে যায় বলেই উত্তরকালে সেই সবের নামও স্মরণ করা যায় না। কেননা, সেই সব স্থূল সাহিত্যকর্ম মানবকল্যাণে যেমন আসে না, তেমনি মন রাঙানোর কাজেও লাগে না। ফলে ক্ষণিক রসনার তৃপ্তি মিটিয়ে স্থূল সাহিত্য ক্ষণিকেই হারিয়ে যায়। আর এই ধরনের স্থূল সাহিত্যের প্রধান অনুষঙ্গ সাধারণত যৌন সুড়সুড়ি, ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক উসকানি এবং সামাজিক অবক্ষয়কে উসকে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই রচিত হয়। ফলে ক্ষণিকের উত্তেজনা স্তিমিত হয়ে এলেই সেই সব সাহিত্যকর্মের আর গুরুত্ব থাকে না। এই কারণে চিরকালীন সাহিত্য সম্পর্কে যেমন উদারহণ দিয়ে বিশ্লেষণসহ ব্যাখ্যা করা সম্ভব, তেমনি ক্ষণকালীন সাহিত্য সম্পর্কে উদাহরণ উপস্থাপন করা সম্ভব নয়।

প্রকৃতপক্ষে সাহিত্যের স্থায়িত্ব নির্ভর করে তার স্রষ্টার দৃষ্টিভঙ্গি, জীবনজিজ্ঞাসা, ভাষাশৈলী, ব্যক্তিত্ব ও অভিরুচির ওপর। সাহিত্যিককে তার সৃষ্টির মূল্য তৈরি করে দিতে হয়। না হলে সমাজে মূল্যহীন বস্তুর ভাগ্যে যেমন অবজ্ঞা বরাদ্দ হয়, তেমনি মূল্যহীন সাহিত্যের ভাগ্যেও উপেক্ষা অবধারিত থাকে। এই প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তি প্রণিধানযোগ্য। ‘সাহিত্যের মূল্য’ শীর্ষক এক প্রবন্ধে তিনি বলেছেন, ‘সাহিত্যে যেখানেই জীবনের প্রভাব সমস্ত বিশেষ কালের প্রচলিত কৃত্রিমতা অতিক্রম করে সজীব হয়ে ওঠে সেইখানেই সাহিত্যের অমরাবতী। কিন্তু জীবন যেমন মূর্তিশিল্পী তেমনি জীবন রসিকও বটে। সে বিশেষ করে রসেরও কারবার করে। সেই রসের পাত্র যদি জীবনের স্বাক্ষর না পায়, যদি সে বিশেষ কালের বিশেষত্বমাত্র প্রকাশ করে বা কেবলমাত্র রচনা-কৌশলের পরিচয় দিতে তা হলে সাহিত্যে সেই রসের সঞ্চয় বিকৃত হয় বা শুষ্ক হয়ে মারা যায়।’ (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রবন্ধসমগ্র, (সংকলন ও ভূমিকা: রবিশঙ্কর মৈত্রী) সময় প্রকাশন, ঢাকা, ২০১৫, পৃ. ১১২২)

অতএব চিরকালীন সাহিত্য সম্পর্কে আমরা যেটুকু ধারণা পেয়েছি, তার সঙ্গে স্ব-স্ব জীবন ও পাঠাভিজ্ঞতা যুক্ত করে নিজেরাও মূল্যায়ন করতে পারি। কিন্তু যে সাহিত্য ক্ষণকালীন, মুহূর্তের উত্তেজনা প্রশমনের কাজ করে মুহূর্তেই মিলিয়ে যায়, তার সম্পর্কে গভীর-গভীরতর চিন্তায় নিমগ্ন হয়ে সময়ের অপচয় করা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। বিশ্বলোক যে সৃজনকর্মের ভেতর দিয়ে আমাদের হৃদয়কে আন্দোলিত করে, চিন্তার সূত্রগুলোকে চারদিকে ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করে, সেই সাহিত্যপাঠই আরাধ্য হোক।

/জেড-এস/
সম্পর্কিত
সৈকতে জনসমুদ্র!
চিড়িয়াখানায় মানুষের ঢল
জঞ্জালের নগরে প্রাণ ভরানো সবুজের খোঁজে...
সর্বশেষ খবর
খিলগাঁও তালতলা মার্কেটে ক্যাশলেস লেনদেন চালু
খিলগাঁও তালতলা মার্কেটে ক্যাশলেস লেনদেন চালু
ছদ্মবেশে অভিযান চালিয়ে সাড়ে ১২ লাখ ইয়াবা উদ্ধার, নদীতে ঝাঁপিয়ে পালালো পাচারকারীরা
ছদ্মবেশে অভিযান চালিয়ে সাড়ে ১২ লাখ ইয়াবা উদ্ধার, নদীতে ঝাঁপিয়ে পালালো পাচারকারীরা
তীব্র গরমে কাজ করার সময় মাথা ঘুরে পড়ে দিনমজুরের মৃত্যু
তীব্র গরমে কাজ করার সময় মাথা ঘুরে পড়ে দিনমজুরের মৃত্যু
বাংলাদেশে সামাজিক বিমা প্রবর্তনের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে: মন্ত্রিপরিষদ সচিব
বাংলাদেশে সামাজিক বিমা প্রবর্তনের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে: মন্ত্রিপরিষদ সচিব
সর্বাধিক পঠিত
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
আজ কি বৃষ্টি হবে?
আজ কি বৃষ্টি হবে?
চার বছরে আট ফ্লপ, আসছে আরও এক হালি!
চার বছরে আট ফ্লপ, আসছে আরও এক হালি!
জালিয়াতির মামলায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের কারাদণ্ড
জালিয়াতির মামলায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের কারাদণ্ড