নিজ বিভাগের শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ তুলেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক শিক্ষার্থী। এ ঘটনার বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর গত ২৬ ডিসেম্বর আবেদন জমা দিয়েছেন তিনি। যদিও এ বিষয়ে এখনও কোনও সুরাহা মেলেনি।
বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) অভিযুক্ত শিক্ষক আবু শাহেদ ইমনের বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে বিচার দাবি করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
যৌন হয়রানি ও মানসিক অত্যাচারের স্বীকার দাবি করে ভুক্তোভোগী শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, ‘২০১৯ সালের ৮ নভেম্বর শিক্ষক আবু শাহেদ ইমন নিকতনের ব্লক-এ এর দুই নম্বর রোডের ৮২ নম্বর বাসায় অবস্থিত ব্যক্তিগত অফিস কার্যালয়ে তাকে ডেকে ফ্রেন্ডশিপের প্রস্তাব দিয়ে শারীরিকভাবে নিগৃহীত করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি পরের দিন এক সহপাঠীসহ বিভাগীয় চেয়ারম্যানকে এ ঘটনা জানাই। উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণ ছাড়া বিচার করা সম্ভব না বলে চেয়ারম্যান আমাকে জানান। তিনি বলেন, উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়া উপাচার্য বরাবর অভিযোগ করলে প্রমাণ করতে না পারলে শিক্ষকের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগে ছাত্রত্ব বাতিল হতে পারে।’
অভিযুক্ত শিক্ষক আবু শাহেদ ইমন অভিযোগের বিষয়ে বলেন,‘সে আমার কোর্সের কোনও ক্লাসে অংশ না নিয়ে শেষ ক্লাসে এসে পুরো কোর্স সম্পর্কে জানতে চাইলে তাকে তিরস্কার করি, যা সাধারণভাবে শিক্ষকরা করে থাকেন। এ বিষয়ে সে যে অভিযোগ করেছে, তা ভিত্তিহীন, কাল্পনিক, উদ্দেশ্যপ্রসূত ও আমলযোগ্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সঠিক তদন্ত করে সত্য ঘটনা তুলে আনবে, এটা আমিও চাই।’
বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক জুনায়েদ হালিমে বলেন, ‘ওই ছাত্রী আমার কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছে ছয় মাস পর। তাকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা বলা হলেও সে তা করেনি। সে অসহযোগিতা করছে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাটি তদন্তের জন্য যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সত্যতা পাওয়া গেলে অবশ্যই বিচার হবে।’
বার বার অভিযোগের পরও কেন বিষয়টি সমাধান হয়নি জিজ্ঞেস করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. লাইসা আহমেদ লিসা বলেন, ‘বিষয়টি গোপনীয়। তদন্তের স্বার্থে কারও নাম বলা যাচ্ছে না। আমরা মিটিং করবো। তদন্ত হবে। পরে অবশ্যই ফলাফল জানানো হবে।’